1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির রেকর্ড, মমতার জন্য অশনি সংকেত? - খবর ২৪ ঘণ্টা
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:১৯ অপরাহ্ন

পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির রেকর্ড, মমতার জন্য অশনি সংকেত?

  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ২৪ মে, ২০১৯

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:  দিল্লির দৌড় শুরু হয়েছিল ৪২-এ ৪২ আসন দখলের ডাক দিয়ে। শেষ পর্যন্ত তৃণমূলের আসন দাঁড়াল ২২ আর বিজেপির ১৮। কোন সন্দেহ নেই যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এই ফল এক বড় সতর্কবার্তা। কারণ শুধু আসন সংখ্যার নিরিখেই নয়, ভোটের ধরনেও মেরুকরণের ছবি স্পষ্ট।

এই মেরুকরণকে নিছক সাম্প্রদায়িক বললে হবে না। এ কথা ঠিক যে, মমতা সব সময়ই সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তার দিক থেকে বিজেপির হিন্দুত্বের রাজনীতির মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে রাজ্যে ৩০ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোট নিজের দিকে টেনে রাখার প্রয়োজনীয়তা যে আছে, সেটাও হয়তো একেবারে অস্বীকার করা যায় না।

কিন্তু এর বাইরেও আরও একটি মেরুকরণ এবার স্পষ্ট। যা অনেক বেশি রাজনৈতিক। সিপিএম এবং কংগ্রেস কার্যত মুছে যাওয়ার মতো অবস্থায় পৌঁছেছে এবার। সিপিএম একটি আসনও পায়নি। ভোট মাত্র ৮ শতাংশ। কংগ্রেস দু’টি আসন পেলেও ভোট ৬ শতাংশও নয়। অর্থাৎ শাসক এবং বিরোধী ভোট সরাসরি দু’টি শিবিরে ভাগ হয়ে গেল। যার অর্থ ২০২১-এ বিধানসভার লড়াই হবে মুখোমুখি বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের।

এবারের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের ভিত্তিতে ভোট শতাংশে এখন উভয়ের ব্যবধান দাঁড়াল মাত্র ৩। তৃণমূলের ৪৩, বিজেপির ৪০। ২০১৬ সালের বিধানসভার চেয়ে এবারের লোকসভায় তৃণমূলের ভোট প্রায় ২ শতাংশ কমেছে। আর বিজেপির ভোট বেড়েছে ৩০ শতাংশ।

বিধানসভার ৮ কেন্দ্রের উপনির্বাচনে তো বিজেপির ভোট তৃণমূলকে ছাপিয়ে গেছে। চারটি আসনে জিতে বিজেপি পেয়েছে ৪০ দশমিক ৫০ শতাংশ ভোট, তিনটি আসনে জয়ী তৃণমূল পেয়েছে ৩৭ দশমিক ৪ ভোট। একটিতে জিতেছে কংগ্রেস।

মমতার পক্ষে এসব হিসাব স্বস্তিজনক বলা চলে না। বরং ২০২১ সালের জন্য এ এক ‘অশনি সঙ্কেত’। তবে প্রশ্ন, তিনি এটা কীভাবে দেখবেন? আদৌ বিপদ বলে মানবেন কি?

প্রাথমিক বিশ্লেষণে তৃণমূল নেত্রীর মনে হয়েছে, দেশজুড়ে বিরোধীদের যে অবস্থা, তার তুলনায় এ রাজ্যে তৃণমূলের ফল খারাপ নয়। পাশাপাশি, তার অভিযোগ বিজেপির টাকার খেলা, কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা, ইভিএম কারচুপির মতো বিষয়গুলোও এড়িয়ে যাওয়ার নয়। তাই কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী নিজের দলের পরাজয়কে ‘আমার দায়’ বলে স্বীকার করে নিলেও মমতার ‘আমিত্ব’ তাকে এখনও তেমন কোনও উপলব্ধিতে পৌঁছাতে দেয়নি।

বাম এবং কংগ্রেসকে কোণঠাসা করে বিজেপি যে রাজ্যে প্রধান বিরোধী শক্তি হয়ে উঠেছে, তা অবশ্য গত কয়েকটি উপনির্বাচনের ফল থেকেই বোঝা যাচ্ছিল। এমনকি, এবার লোকসভাতেও যে তারাই দ্বিতীয় স্থানে থাকবে, সন্দেহ ছিল না তাতেও। কিন্তু সেই উত্থান এত তীব্র হয়ে প্রায় সমানে সমানে টক্করের চেহারা নেবে সেটা অনেকেই বোঝেননি। তাই বুথফেরত সমীক্ষার পূর্বাভাস নিয়েও দোলাচল ছিল। স্বয়ং মমতাও বার বার হিসাব কষে ‘আশ্বস্ত’ ছিলেন, যতটা বলা হচ্ছে, বিজেপি ততটা বাড়তে পারবে না।

বিজেপি শুধু বেড়েছে তাই নয়, রাজ্যের ২৭টি গ্রামীণ লোকসভা কেন্দ্রের ১৫টিতে এগিয়ে আছে। রাজ্য রাজনীতিতে এটিও এক লক্ষণীয় বিষয়। সিপিএমের বিরুদ্ধে জনমত ঘুরতে শুরু করেছিল শহর থেকে। গ্রাম বাংলায় তাদের দুর্গ দীর্ঘদিন প্রায় অটুট ছিল। তাই কংগ্রেস বা পরবর্তীকালে তৃণমূল শহরে নিজেদের অস্তিত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারলেও মূল ভিতে আঘাত করতে পারেনি।

কিন্তু ২০১১ সালে মমতা পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতা দখল করার আগেই ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে গ্রাম বাংলায় সিপিএমের পতনের লক্ষণ দেখা যায়। সেবার তৃণমূল পেয়েছিল ১৯ টি আসন। বামফ্রন্ট ১৫টি। এবার তৃণমূল পেল ২২ টি আসন আর বিজেপি ১৮টি।

শাসক তৃণমূলের উপরে মূল ধাক্কা এল গ্রাম বাংলা থেকেই। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত পাওয়া লোকসভার ফলাফল অনুযায়ী, রাজ্যের ২৯৪টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ১২৯টিতে ‘জয়ী’ বিজেপি। তৃণমূল ১৫৮টিতে।

কেন সে প্রশ্নের ব্যাখ্যা হয়তো একাধিক। তবে, একটি বিষয়ে অধিকাংশই একমত। সেটি হলো, পঞ্চায়েত নির্বাচনে সাধারণ মানুষের ভোট দিতে না পারার ক্ষোভ। যা গ্রামের ভোটারদের উপর যথেষ্ট বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। যারা ভোট দিতে পারেননি, তাদের কাছে এবারের লোকসভা নির্বাচনে ভোট দেওয়ার ‘সুযোগ’ হয়তো ছিল এক ধরনের জবাব। তাই গ্রামীণ লোকসভায় তৃণমূলের অগ্রগতি রীতিমতো ধাক্কা খেয়েছে।

যেসব জায়গায় তৃণমূল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পঞ্চায়েত জিতেছিল পরাজয়ের তালিকায় রয়েছে সেসব এলাকারই অনেক লোকসভা কেন্দ্র। যেমন, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, বালুরঘাট, বনগাঁ, বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর, রানাঘাট, বর্ধমান-দুর্গাপুর, হুগলি, মেদিনীপুর ইত্যাদি।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারেও প্রায় ৯০ শতাংশ পঞ্চায়েত আসন বিনা ভোটে দখল করেছিল তৃণমূল। সেখানে অবশ্য এবার অভিষেকের জয়ের ব্যবধান তিন লাখেরও বেশি। তবে, সেখানে আবার ফলতা, বজবজ, বিষ্ণুপুর, মহেশতলার মতো বিভিন্ন জায়গায় ‘সন্ত্রাসে’র ভোট হয়েছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। নির্বাচন কমিশন অবশ্য তা মানেনি।

তৃণমূলের নির্বাচনী ধাক্কার পেছনে আরও একটি বিষয় কাজ করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। তা হল দলের একাংশের ‘দাদাগিরি’। তৃণমূলের যারা সত্যি ‘তৃণস্তরে’ কাজ করে এসেছেন, তাদের একটি বড় অংশ মনে করছেন, ‘নব্য’ নেতৃত্বের দাপটে তারা আর কোনও জায়গা পাচ্ছেন না। দলে তাদের কোনও মর্যাদা নেই। নতুনদের দাপটের বিরুদ্ধে ‘আদি’ তৃণমূলের সেই ক্ষোভের প্রতিফলনও বহু ক্ষেত্রে ভোটের মেশিনে ‘বিপ্লব’ ঘটিয়েছে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের ধারণা।

সেই ক্ষোভ বিজেপি যদি আরও উস্কে দিতে চেষ্টা করে, তা হলে ২০২১ সালের আগে তৃণমূলের ব্যথা বাড়বে, কমবে না। প্রসঙ্গত, তৃণমূল ছেড়ে আসা ‘গদ্দার’ বলে অভিহিত মুকুল রায় বৃহস্পতিবারই এই ইঙ্গিত দিয়েছেন। বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বও বলেছেন, তাদের সঙ্গে নাকি তৃণমূলের প্রায় ৫০ জন বিধায়ক যোগাযোগ করে ফেলেছেন।

এ কথার সত্যতা প্রমাণ করা এখনই সম্ভব নয়। তবে এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের ওপর চাপ কিছুটা বেড়ে যাবে। সেটাও বিজেপির হিসেবি কৌশল। বিজেপি অবশ্যই চেষ্টা করবে যাতে বিধায়কদের মধ্যে ‘ভাঙন’ ধরানো সম্ভব হয়। এক বিজেপি নেতা বলেন, তৃণমূল যেভাবে অন্য দল থেকে বিধায়ক ভাঙিয়ে এনেছিল, এই কৌশল হবে তার বদলা।

সাধারণ নিয়মে বিধানসভার ভোট হবে আরও দু’বছর পর। সদা পরিবর্তনশীল রাজনীতি ততদিনে আরও কী মোড় নেবে এখনই নিশ্চিত করে তা কেউ বলতে পারে না। সবাই জানেন, ধাক্কা খেয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর অভিজ্ঞতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আছে এবং তাতে তিনি বার বার সফল হয়েছেন। এটাই পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাস।

তাই এবারেও লোকসভা ভোটের ফলাফল বিচার করে তিনি কী পদক্ষেপ নেবেন, দলের অন্দরে ক্ষমতার ‘পুনর্বিন্যাস’ করে পুঞ্জিভূত ক্ষোভের নিরসন করবেন কি না, বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের সুফল যাতে মাঝপথে হারিয়ে না যায়, তা নিশ্চিত করবেন কি না, নতুন নেতৃত্বের দাপটে কড়া হাতে লাগাম টানবেন কি না, এসব অনেক কিছুর উপর নির্ভর করবে তৃণমূলের ভবিষ্যৎ।

সর্বোপরি বাকি থাকে ধর্মীয় মেরুকরণের ভোট। যা এরাজ্যেও এবার বেশ চোখ পড়েছে। বিভিন্ন জেলাতে তো আছেই, খাস কলকাতাতেও এলাকাভিত্তিক ফলে সেই ছবি ধরা পড়েছে। রাসবিহারী, ভবানীপুর, জোড়াসাঁকো, শ্যামপুকুর, মানিকতলার মতো এলাকায় তৃণমূল ধাক্কা খেলেও পার্ক সার্কাস, বালিগঞ্জ, কসবা, এন্টালি, চৌরঙ্গির মতো পাড়ায় বিজেপিকে তারা পেছনে ফেলতে পেরেছে।

খবর২৪ঘণ্টা, জেএন

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST