নিজস্ব প্রতিবেদক: সেপ্টেম্বর মাসে পরীক্ষা গ্রহণ ও ফলাফল প্রকাশের জোর দাবি জানিয়েছেন রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (রামেবি) নার্সিং অনুষদের শিক্ষার্থীরা। বুধবার (২৮ আগস্ট) রাতে রাষ্ট্রপতি এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও স্বাস্থ্য উপদেষ্টার কাছে এ দাবিতে দুটি প্রস্তাবনা দিয়েছেন তারা। তিন শতাধিক শিক্ষার্থীর স্বাক্ষর সম্বলিত ডাকযোগে পাঠানো এক স্মারকলিপিতে তারা এ প্রস্তাবনা দেন।
এর আগে, বুধবার বিকেলে রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর, লালমনিরহাট নার্সিং কলেজসহ ২৩টি নার্সিং কলেজের তিন হাজার শিক্ষার্থীর জরুরি সভায় এমন প্রস্তাবনা উঠে। শনিবারের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হলে কঠোর আন্দোলনে নামার প্রতিজ্ঞাও করেছেন তারা। শিক্ষার্থীরা বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব ঘোষিত আগামী ৭ সেপ্টেম্বর থেকে বিএসসি চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে না। ইতোমধ্যে ৮ মাস আমরা পিছিয়ে। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ায় সংকট উত্তোরণে আমরা স্মারকলিপির মাধ্যমে প্রস্তাবনা দিয়েছি।
স্মারকলিপিতে উল্লেখিত প্রথম প্রস্তাবনায় রয়েছে, সরকারী-বেসরকারী কলেজে অনুষ্ঠিত টার্ম পরীক্ষার মাধ্যমে সকল বর্ষকে মূল্যায়ন করে পরবর্তী বর্ষে প্রমোশন দিতে হবে। কলেজ কর্তৃক প্রাপ্ত মূল্যায়নের ওপর ভিত্তি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রমোশনের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করবে।
দ্বিতীয় প্রস্তাবনায় শিক্ষার্থীরা দাবি জানান, পরীক্ষা পরিচালনার জন্য পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের নির্বাহী ক্ষমতা একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নার্সিং পরীক্ষা কমিটিকে দিতে হবে। পরীক্ষা কমিটি স্বাধীনভাবে পূর্বে মডারেশনকৃত প্রশ্নের মাধ্যমে রুটিন অনুযায়ী যথাসময়ে পরীক্ষাগুলো সম্পন্ন করবে। যেসকল বর্ষের পরীক্ষার রুটিন এখনো প্রকাশ করা হয়নি, তাদের পরীক্ষার রুটিন তিন কার্যদিবসের ভেতর পরীক্ষা কমিটিকে প্রকাশ করতে হবে। লিখিত পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন, মৌখিক পরীক্ষাসহ সকল প্রকার পরীক্ষা ও ফলাফল তৈরির কাজ স্ব স্ব কলেজকেই সম্পন্ন করতে হবে। আর প্রতিটি কলেজ থেকে প্রাপ্ত মূল্যায়ন পরীক্ষার ফলাফল অনুসারে বিশ্ববিদ্যালয় চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করবে। এক্ষেত্রে মূল্যায়ন ফি বাবদ একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ স্ব-স্ব কলেজে প্রদান করবে শিক্ষার্থীরা।
দ্বিতীয় প্রস্তাবনা মানলে পরীক্ষার সময়সূচি হিসেবে শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেছেন, পূর্বে রামেবি থেকে প্রকাশিত রুটিন অনুযায়ী নিতে হবে চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা। আর ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে তৃতীয় বর্ষের লিখিত এবং ২১ সেপ্টেম্বর থেকে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের লিখিত পরীক্ষা গ্রহণ শুরু করতে হবে।
এ বিষয়ে রাজশাহী নার্সিং কলেজের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশনের সভাপতি রিফাত আল মাহমুদ হাদি বলেন, সেশনজটে পিষ্ট হয়ে একটি বছর হারিয়ে গেছে। সামনে বছরের মার্চে লাইসেন্স পরীক্ষা আমাদের মিস হয়ে যাবে। বাসায় আর চেহারা দেখাতে পারব না। সেপ্টেম্বরে হয় পরীক্ষা নিতে হবে, না হয় আমাদের ‘মরদেহ’ বাসায় যাবে। শনিবারের মধ্যে দাবি না মানলে রোববার থেকে কঠোর আন্দোলন শুরু হবে।
এ ব্যাপারে রামেবির উপাচার্য প্রফেসর ডা. এ জেড এম মোস্তাক হোসেন বলেন, সেশনজট নিরসনে রোডম্যাপ গ্রহণ করেছিলাম। আমি স্বপদে থেকে নির্বিঘ্নে দায়িত্ব পালনের পরিবেশ পেলে অবশ্যই সেপ্টেম্বর মাসে পরীক্ষা গ্রহণ ও ফলাফল প্রকাশ করা হবে।
বিএ..