পবিত্র আশুরা আজ (২০ আগস্ট)। কারবালার শোকাবহ ও হৃদয়বিদারক ঘটনার ঘটনাবহুল এ দিনটি মুসলমানদের কাছে ধর্মীয়ভাবে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। ত্যাগ ও শোকের প্রতীকের পাশাপাশি বিশেষ পবিত্র দিবস হিসেবে দিনটি পালন করা হয় মুসলিমবিশ্বে।
করোনার কারণে গত বছরের মতো এবারও বাংলাদেশে যথাযোগ্য মর্যাদায় ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে সংক্ষিপ্ত কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিনটি পালিত হবে। এদিন সরকারি ছুটি। তবে শুক্রবার হওয়ার এ ছুটি আমেজ তেমন থাকবে না।
বাংলাদেশে শিয়া সম্প্রদায় মর্সিয়া ও মাতমের মাধ্যমে দিনটি উদযাপন করে। তবে মূল আনুষ্ঠানিকতা হলো পুরান ঢাকায় হোসেনী দালান এলাকা থেকে শিয়া সম্প্রদায়ের তাজিয়া মিছিল। কিন্তু করোনার কারণে এবারও মিছিল বের হবে না। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা মধ্যে শিয়া সম্প্রদায় দিবসটি উৎযাপন করবে। এই শোক ও স্মৃতিকে স্মরণ করে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বিশেষ মোনাজাত, দোয়া মাহফিল ও কোরআনখানি। বরকতময় এ দিনে এবং একই সঙ্গে আগের বা পরের দিনে রোজা রাখা অনেক সওয়াবের কাজ।
পবিত্র আশুরা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধী দলের নেতা বেগম রওশন এরশাদ ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পৃথক বাণী দিয়েছেন।
হিজরি ৬১ সনের ১০ মহররম এই দিনে মহানবী হযরত মুহম্মদের (সা.) দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসাইন (রা.) এবং তার পরিবার ও অনুসারীরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে যুদ্ধ করতে গিয়ে ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে শহীদ হন। এ ঘটনা স্মরণ করে বিশ্বমুসলিম যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনটি পালন করে থাকে। শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম ইসলামের মহান আদর্শকে সমুন্নত রাখতে তাদের এই আত্মত্যাগ মানবতার ইতিহাসে সমুজ্জ্বল হয়ে রয়েছে।
কারবালার এই শোকাবহ ঘটনা ও পবিত্র আশুরার বাণী সকলকে অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে এবং সত্য ও সুন্দরের পথে চলতে প্রেরণা যোগায়।
বিদ্যমান করোনা পরিস্থিতিতে এ উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ দেশব্যাপী সংক্ষিপ্ত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে রাজধানীতে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে পুলিশ বিভাগ।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে এবার পবিত্র মহররম উপলক্ষে সব ধরনের তাজিয়া মিছিল, শোভাযাত্রা, মিছিল বন্ধ থাকবে বলে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৬ আগস্ট ধর্ম মন্ত্রণালয়ের জারি করা বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে সব ধর্মের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে এর আগে আরোপিত বিধিনিষেধ বহাল থাকবে।
সেইসঙ্গে পবিত্র মহররম উপলক্ষে সকল প্রকার তাজিয়া মিছিল, শোভাযাত্রা, মিছিল ইত্যাদি বন্ধ থাকবে। তবে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব অনুসরণপূর্বক আবশ্যক সকল ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান প্রতিপালিত হবে।
দিবসটি উপলক্ষে শুক্রবার সরকারি ছুটি। আশুরা উপলক্ষে জাতীয় দৈনিক পত্রিকাগুলো বিশেষ প্রবন্ধ, নিবন্ধ প্রকাশ করবে। এছাড়া বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন বেসরকারি রেডিও-টিভি চ্যানেলও এই দিনের তাৎপর্য নিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করবে।
জেএন