খবর২৪ঘণ্টা.কম, ডেস্ক: রাজনৈতিক দলের নেত্রী হিসেবে নৌকায় ভোট চাওয়া আমাদের রাজনৈতিক অধিকার বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমি একটি দলের সভাপতি। আমি নৌকায় ভোট চাইবো, এটা আমার রাজনৈতিক অধিকার। রাজনৈতিক দলের নেত্রী হিসেবে যেখানে যাবো, সেখানেই নৌকায় ভোট চাইব।
শনিবার সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকের উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক শুরু হয়। প্রথমেই আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করায় ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে ৩ বছরে দেশকে স্বল্পোন্নত দেশে পরিণত করেছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের পর দেশ পিছিয়ে যায়। ওই সময় যারা ক্ষমতায় এসেছিল, তারা খুনিদের পুরস্কৃত করেছিল, ক্ষমতায় বসিয়েছিল, স্বাধীনতাবিরোধীদের হাতের পতাকা তুলে দিয়েছিল। এর ধারাবাহিকতা এরশাদ, খালেদা জিয়া রক্ষা করেছিল।
দলীয় নেতাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী নির্বাচনের জন্য অবশ্যই আমাদের সবাইকে জনগণের কাছে যেতে হবে। নৌকায় ভোট চাইতে হবে। মানুষকে বোঝাতে হবে, একমাত্র নৌকায় ভোট দিলেই তাদের উন্নতি হবে। আমরা সবাইকে বলবো, আমরা নৌকা মার্কায় ভোট চাই। দেশের উন্নয়ন করার সুযোগ চাই। মানুষের সেবা করা আমাদের কর্তব্য, সেই সেবা করার সুযোগ চাই।
২০১৪ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার কারণে দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হতে যে উপাত্তগুলোর প্রয়োজন ছিল, তার প্রত্যকটিই আমাদের অর্জিত হয়েছে। তাদের যে চাহিদা ছিল, তার থেকে বেশি অর্জিত হয়েছে। এই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে। অর্জনের সম্মান ধরে রাখতে হবে। আমরা চাই দেশ দারিদ্র্যমুক্ত হোক। প্রত্যেকে খেয়েপরে বেঁচে থাকবে। আমরা যুদ্ধ করে দেশস্বাধীন করেছি। বিজয়ী জাতি হিসেবে আমরা মাথা উচু করে দাঁড়াবো। আওয়ামী লীগ জনগণের সেবক হিসেবে সরকার পরিচালনা করছে। এটা যেন অব্যাহত থাকে।
অন্যের মুখাপেক্ষী না হলে দেশ নিজেদের সম্পদে উন্নতি হবে সরকার সেটা চায় বলেও সরকার প্রধানমন্ত্রী করেন। তিনি বলেন, মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে নিজেদের চিন্তা করতে হলে নিজেদের সম্পদ দিয়েই উন্নতি করতে হবে। হ্যাঁ, আমরা উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে কিছু সহযোগিতা নেবো। বিদেশি বিনিয়োগ আনবো। এই বিনিয়োগ আমাদের প্রয়োজন। সেই সঙ্গে সম্পদ থাকতে হবে যেন কারও মুখাপেক্ষা না হতে হয়। কারও কাছে যেন ছোট হয়ে চলতে না হয়।
সরকারের উন্নয়ন অনেকের কাছে ভালো লাগে না মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা জানি, আমাদের বিরুদ্ধে কথা বলার লোকের অভাব নেই। প্রতিনিয়ত তো বলেই যাচ্ছে, কেউ কেউ উন্নয়ন চোখেই দেখেন না। যাদের চক্ষু নষ্ট বা দেখার ইচ্ছা নেই অথবা চায় না বাংলাদেশ উন্নত হোক, তারা তো দেখবেই না। কাজেই ওইদিকে আমাদের নজর দেওয়ার দরকারই নেই। যারা বলার তারা বলে যাক। আমরা দেশকে ভালোবাসি, দেশের মানুষকে ভালোবাসি। তাদের উন্নয়নে কাজ করি। কাজেই দেশের মানুষের জন্য কী করতে হবে, তা আমরা ভালোই জানি। আর সেইভাবে পদক্ষেপ নিয়েছি বলেই আজকে এই উন্নতিটা করা সম্ভব হয়েছে।এর ধারাবাহিকতাটা বজায় রাখতে হবে।’ উন্নয়নের কথাগুলো জনগণের কাছে পৌঁছে দিয়ে তাদের মাঝে আস্থা ও বিশ্বাস স্থাপন করতে শেখ হাসিনা দেলের নেতা-কর্মীদের প্রতি এ সময় নির্দেশ দেন।
রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা মানবতার কারণে তাদের আশ্রয় দিয়েছি।আমাদের ভূমিকায় আন্তর্জাতিক বিশ্ব ভূয়সী প্রশংসা করেছে। সারাবিশ্ব এখন বাংলাদেশের সঙ্গে রয়েছে। এটা আমাদের একটি বড় অর্জন।’
শুক্রবার দেশের বিভিন্ন স্থানে শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ততের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/রখ