খবর ২৪ ঘণ্টা ডেস্ক:ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির মৃত্যু নিয়ে সোচ্চার সারা দেশ। সবাই চান দোষীরা শান্তি পান। আর কোনো নারীকে যেন এভাবে অকালে ঝরে যেতে না হয়- সেই পদক্ষেপও চান তারা। একই কথা প্রতিধ্বনিত হলো নন্দিত নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে।
শুক্রবার সকালে ফেসবুকে তিনি বলেন, “নুসরাতকে যেভাবে মাসের পর মাস ধরে সিস্টেমেটিকভাবে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে এটা আমাদের রাষ্ট্রের অস্তিত্ব নিয়েই প্রশ্ন তোলে।”
তার পুরো লেখাটি এমন- “কখনো কখনো নীরব থাকা কঠিন, তা যতই করি না নীরবতার ব্রত!
নুসরাতকে যেভাবে মাসের পর মাস ধরে সিস্টেমেটিকভাবে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে এটা আমাদের রাষ্ট্রের অস্তিত্ব নিয়েই প্রশ্ন তোলে। সরকারের উচিত সিরাজ-উদ-দৌলা এবং তার ক্ষমতা-চক্রের সবার বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্ত রাখা, রাষ্ট্র-সমাজ-আইন-কানুনের ওপর আস্থা ফিরিয়ে আনা।
একই সঙ্গে সকল মাদ্রাসা, স্কুলসহ যে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি মনিটরিং এবং বিচারের জন্য সেল খোলা হউক।
ইসলামি নেতাদেরও ঝেড়ে কাশার সময় এসেছে। চার্চে যৌন হয়রানি নিয়ে কথা-বার্তা শুরু হয়েছে। পোপ ফ্রান্সিস ব্যাপারটা স্বীকার করে এই বিষয়ে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন দুই হাজার তেরো সালে। যদিও সমালোচকেরা বলছেন বাস্তবে তেমন কিছু করা হয় নাই।
আমার প্রশ্ন হলো আমাদের ধর্মীয় নেতারা এই বিষয়ে প্রকাশ্যে কী অবস্থান নিয়েছেন? ধর্মের ইমেজ নিয়ে যারা এতটা চিন্তিত তারা কি বুঝতে পারছেন ইমেজ নষ্ট করার সবচেয়ে ভয়ংকর কারণ হচ্ছে এগুলো? মেয়েদের জিনস আর টি শার্টের দিকে নজর না দিয়ে ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বালক-বালিকাদের যৌন হয়রানির দিকে নজর দিলে আপনাদের ভাবমূর্তির উন্নতি ঘটবে।
ধন্যবাদ।”
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন নুসরাত বুধবার রাতে মারা যান। ৬ এপ্রিল গুরুতর অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় তিনি বার্ন ইউনিটে ভর্তি হন। ৮ এপ্রিল তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।
ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাতকে ৬ এপ্রিল সকালে পরীক্ষাকেন্দ্রের ভেতরেই তিন তলা ভবনের ছাদে নিয়ে শরীরে আগুন দিয়ে হত্যার চেষ্টা করে দুর্বৃত্তরা। চারজন বোরকা পরে এ হত্যাচেষ্টায় অংশ নেয়। চিকিৎসকেরা জানান, তার শরীরের ৮০ শতাংশ দগ্ধ হয়। এর মধ্যে ৭০ শতাংশই গভীরভাবে দগ্ধ।
এর আগে ২৭ মার্চ ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে নুসরাতের শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনায় থানায় মামলা হলে গ্রেপ্তার হয় অধ্যক্ষ।
পরিবারের অভিযোগ, অধ্যক্ষের পক্ষের লোকই পরিকল্পিতভাবে নুসরাতকে হত্যা করতে চেয়েছিল। পরে এই সংক্রান্ত মামলায় আরও কয়েকজনকে আটক করেছে পুলিশ।
খবর২৪ঘণ্টা, জেএন