1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
নির্বাচন নিয়ে জাতিসঙ্ঘ-যুক্তরাজ্যের কড়া সতর্কবার্তা - খবর ২৪ ঘণ্টা
শুকরবার, ১৭ জানয়ারী ২০২৫, ০:০৩ পূর্বাহ্ন

নির্বাচন নিয়ে জাতিসঙ্ঘ-যুক্তরাজ্যের কড়া সতর্কবার্তা

  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১৮
ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির চিঠি - ছবি: সংগৃহীত

খবর২৪ঘণ্টা ডেস্ক: বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে সতর্কবার্তা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্য ও জাতিসঙ্ঘ। গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষজ্ঞরা জেনেভা থেকে এ সতর্ক বার্তা জারি করেন।

একই দিন বাংলাদেশের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে যুক্তরাজ্যের ফরেন অ্যান্ড কমনওয়েলথ দফতর কী ব্যবস্থা নিয়েছে তা জানতে চেয়ে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্টকে চিঠি দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের হাউজ অব কমন্সের ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান টম টুগেনদাথ।

যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে বাংলাদেশের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে রেজুলেশন পাস হওয়ার পর যুক্তরাজ্য ও জাতিসঙ্ঘ থেকে অভিন্ন বার্তাকে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।
জেনেভায় অবস্থিত ইউনাইটেড ন্যাশনস হিউম্যান রাইটস স্পেশাল প্রসিডিউরের কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এ মর্মে সতর্কবার্তা জারি করা হয় যে, আসন্ন ৩০ ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক সহিংসতা বৃদ্ধি, মত প্রকাশের স্বাধীনতায় নিয়ন্ত্রণ এবং ধর্মীয় উগ্রবাদের বিকাশ ঘটতে পারে।

এ দিকে জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যালোচনা করছে জাতিসঙ্ঘ। বৃহস্পতিবার নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে মহাসচিবের মুখপাত্র স্টেফানি দুজারিক এই মন্তব্য করেছেন।

প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে দুজারিক জানান, আমরা পরিস্থিতিতে নিবিড় নজর রাখছি এবং নীতি হিসেবে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেখানেই নির্বাচন হোক না কেন তা সুষ্ঠু ও নিরপে হওয়া উচিত। জনগণকে তাদের মত প্রকাশের সুযোগ দেয়া উচিত।

জাতিসঙ্ঘের সতর্কবার্তা জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা দফায় দফায় বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছে, বিরোধী নেতাদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে এবং ভিন্ন মতকে দমন করছে। বিরোধী দলের সদস্যরা গ্রেফতার, হত্যা ও গুমের স্বীকার হচ্ছেন। জাতিসঙ্ঘের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, কিছু কিছু ঘটনার সাথে সরকার দলীয় সমর্থকেরাও জড়িত রয়েছেন। প্রতিবেদনটিতে নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে নির্বাচন কমিশনারদের মধ্যকার দ্বন্দ্বের বিষয়টি সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়।

এতে আরো বলা হয়, ‘এমনকি একজন নির্বাচন কমিশনার ইতোমধ্যেই মতামত ব্যক্ত করে বলেছেন, তিনি এটা বিশ্বাস করেন না যে নির্বাচনে কোথাও সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড কিংবা সমান্তরাল মাঠ নিশ্চিত রয়েছে।’ এমনি বাস্তবতায় জাতিসঙ্ঘের বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশ সরকারকে বাংলাদেশের সব নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং জন বিতর্কের পরিবেশ সৃষ্টি করতে কার্যকর উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের গাড়িবহরে আক্রমণের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৪ ডিসেম্বর বিরোধীদলীয় নেতা ড. কামাল হোসেনের গাড়িবহরে আক্রমণ করা হয়, যাতে ২৫ জন মানুষ আহত হয়েছেন। গত ৯ থেকে ১২ ডিসেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত ৪৭টি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, যাতে আটজন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ৫৬০ জন। জাতিসঙ্ঘের বিশেষজ্ঞরা নির্বাচনের আগে ও পরে মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সুযোগ করে দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

প্রতিবেদনে জাতিসঙ্ঘের কালচারাল রাইটস বিষয়ক স্পেশাল রেপোর্টাইয়ার কারিমা বেনাউনি জানান, মত প্রকাশের স্বাধীনতায় নিয়ন্ত্রণ আরোপ ও উগ্রপন্থা বিকাশ উভয়টিই বাংলাদেশে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। আর এ বিষয়টি সরকারকে দ্রুত মীমাংসা করতে হবে। বেনাউনি আরো জানান, আমরা বাংলাদেশ সরকারকে সহিংসতার স্রোতধারাকে দ্রুত থামিয়ে দিতে আহ্বান জানাচ্ছি। পাশাপাশি মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সরকারকে কার্যকর ভূমিকায় দেখতে চাই।

বিরোধী দলের সদস্যদের বিরুদ্ধে নজরদারি করা, ভীতি প্রদর্শন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিচারের জন্য গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় ওই প্রতিবেদনে। নির্বাচনকে সামনে রেখে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ব্যবহার সাংবাদিক ও সাধারণ জনগণ, যারা সামাজিক মাধ্যমে মতামত প্রকাশ করেন তাদের অপরাধী বানানোর ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা। প্রতিবেদনে আশঙ্কা করা হয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিরোধী দলের নেতা এবং সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বৃদ্ধি পেতে পারে। বর্তমান পরিস্থিতি এমন এক অবস্থায় দাঁড়িয়েছে যে নির্বাচনটি অবাধ ও সুষ্ঠু ভাবে অনুষ্ঠিত হবে কি না তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে জানানো হয় ওই প্রতিবেদনে।

প্রতিবেদনটি জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার বিভিন্ন দিক নিয়ে কাজ করেন এমন বিশেষজ্ঞরা যৌথভাবে এটি প্রকাশ করেছেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রতিবেদকরা হচ্ছেন, জাতিসঙ্ঘের মত প্রকাশের স্বাধীনতাবিষয়ক বিশেষ রেপোর্টিয়ার আহমেদ শহীদ, ধর্মীয় স্বাধীনতাবিষয়ক বিশেষ রেপোর্টিয়ার মাইকেল ফর্স্ট, মানবাধিকার রক্ষাবিষয়ক বিশেষ রেপোর্টিয়ার ফার্নেন্ড ডি ভারেনাস, সংখ্যালঘুবিষয়ক বিশেষ রেপোর্টিয়ার সিসিলিয়া জিমেনেজ ডামারি, অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত মানুষের মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ রেপোর্টিয়ার কেমেন্ট বাউলি, জাতিসঙ্ঘের শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশের অধিকারবিষয়ক বিশেষ রেপোর্টিয়ার এজনেস কলমার্ড।

এ দিকে গত ১৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশের নির্বাচন পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে হাউজ অব কমন্সের ফরেন রিলেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান ডম টুগেনদাথ দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্টকে চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে ডম উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে ৩০ ডিসেম্বর যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে সে নির্বাচন অবাধ ও স্ষ্ঠুুভাবে হওয়ার ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের ফরেন অ্যান্ড কমনওয়েলথ দফতর কী ধরনের তথ্য সংগ্রহ করেছে? আন্তর্জাতিক গণতন্ত্রের মানদণ্ডে নির্বাচনটি আয়োজনের ক্ষেত্রে পররাষ্ট্র দফতার কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে?

তিনি বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদন সংযুক্ত করে পুরো পরিস্থিতি নিয়ে তার উদ্বেগের কথা জানান। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করতে গিয়ে বাংলাদেশ পরিস্থিতির চারটি নেতিবাচক পরিস্থিতি ওই চিঠিতে তুলে ধরেন। চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, বিরোধী দলের নেতা এবং বিক্ষোভকারীদের আটক করা হচ্ছে এবং জেলে পাঠানো হচ্ছে। সরকারি দলের ছাত্র ও যুব সংগঠন সহিসংতা ও ভীতি প্রদর্শন করে যাচ্ছে। বিচার বিভাগ ও নির্বাচন কমিশন স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে ভূমিকা পালন করতে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে; উদাহরণ হিসেবে বিরোধী দলের প্রার্থীদের প্রার্থিতা বাতিলের বিষয়টি উল্লেখ করার মতো। এ ছাড়াও বিরোধী দলের হাজারো সদস্য ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে চার্জ আনা হয়েছে।

ডম আরো জানান, আমি বিশ্বাস করি আমার উদ্বেগের বিষয়টি পররাষ্ট্রমন্ত্রী অনুধাবন করবেন এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচ যে অভিযোগগুলো উত্থাপন করেছেন ফরেন এন্ড কমনওয়েলথ দফতর এটির স্বীকৃতি দেবে। ফরেন রিলেশন কমিটির পক্ষ থেকে ওই্ চিঠিতে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে তা জানতে চাওয়া হয়।

খবর২৪ঘণ্টা, জেএন

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST