চুয়াডাঙ্গার জীবননগর পৌরসভা নির্বাচনে নির্বাচনী মাঠ সম্পূর্ণ আওয়ামী লীগ প্রার্থীর দখলে রয়েছে। নৌকার প্রার্থীর পক্ষে ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ মাঠে নামলেও বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে দলটির উল্লেখযোগ্য অনেক নেতাকেই প্রচারে নামতে দেখা যায়নি।
চতুর্থ ধাপে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি ব্যালট পেপারের মাধ্যমে জীবননগর পৌরসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন সামনে রেখে এরইমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
নির্বাচনে মেয়র পদে ৩ জন, ৯টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩৮ জন ও ৩টি সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ পৌরসভায় মোট ভোটার রয়েছেন ২০ হাজার ৮২৭ জন।
এই পৌরসভায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত রফিকুল ইসলাম রফিকের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের শাহাজাহান কবীর ও ইসলামী আন্দোলনের হাতপাখা প্রতীকের খোকন মিয়া।
মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থী রফিকুল ইসলাম রফিক তিন বারের নির্বাচিত কাউন্সিলর, জীবননগর পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জীবননগর উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য। নৌকা প্রতীকের পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে দলীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা দিনরাত মাঠ সরগরম করে রাখলেও একেবারেই নীরব ভূমিকায় রয়েছে বিএনপি।
বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী শাহাজাহান কবীর ধানের শীষ প্রতীকের নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছেন অনেকটা একা একাই। ভোটের মাঠে বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে তেমন কোনো নেতা-কর্মীকে প্রচার-প্রচারণায় দেখা যায়নি।
এছাড়া ইসলামী আন্দোলন মনোনীত প্রার্থী হাতপাখা প্রতীকের খোকন মিয়া এখন পর্যন্ত কোনো প্রচার প্রচারণা শুরুই করেননি।
আওয়ামী লীগ প্রার্থী রফিকুল ইসলাম রফিক বলেন, দলের সবাই আমাকে সমর্থন দিয়ে মেয়র প্রার্থী করেছেন। আমি তিন বার কাউন্সিলের দায়িত্ব পালন করেছি। পৌরবাসী আমার সাথে আছেন। আমি বিশ্বাস করি, জীবননগর পৌরবাসী ভোটের মাধ্যমে আমাকে নির্বাচিত করবেন। আমি নির্বাচিত হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতায় জীবননগর পৌরসভাকে একটি মডেল পৌরসভায় রূপান্তরিত করার সর্বাত্মক চেষ্টা করব।
এদিকে আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ হয়ে নৌকা প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নামলেও অভ্যন্তরীণ কোন্দল মেটেনি বিএনপির। বিএনপির নেতা-কর্মীরা মাঠেই নামেননি। এজন্য ক্ষুব্ধ দলটির তৃণমূলের অনেক নেতা-কর্মীরাও। গুটিকয়েক কর্মী নিয়ে অনেকটা একা একাই প্রচার চালাচ্ছেন বিএনপির প্রার্থী শাহাজাহান কবীর। প্রচার চালাতে গিয়ে তিনি আওয়ামী লীগের অনেক হয়রানির শিকার হয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন।
শাহাজাহান কবীর বলেন, নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আমাদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে। পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেছে। সব বাধা মাড়িয়েই নীরবে প্রচার চালাচ্ছি।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের মামলা, হামলাসহ বেআইনি হয়রানির শিকার বিএনপি গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধারের জন্যই এ নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। যদি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে ভোট হয়, তাহলে জীবননগর পৌরসভায় বিএনপির বিজয় হবে।
অপরদিকে ইসলামী আন্দোলন মনোনীত প্রার্থী হাতপাখা প্রতীকের খোকন মিয়াকে এখন পর্যন্ত কোনো প্রচার প্রচারণা করতে দেখা যায়নি।
প্রচারসহ ভোটের লড়াইয়ে পিছিয়ে নেই কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীরাও। তারাও তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের পরাজিত করে বিজয়ের মালা গলায় পরাতে তুমুল প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডেই কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে সেয়ানে সেয়ানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ভোটাররা জানান। প্রতিদ্বন্দ্বিতার লড়াইয়ে এগিয়ে রয়েছেন সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীরাও।
এ বিষয়ে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জীবননগর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা এসএম মুনিম লিংকন জানান, ১০টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হবে। এজন্য সব প্রস্তুতিই প্রায় শেষ। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণের জন্য নির্বাচনের দিন প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নিয়োজিত থাকবেন।
জেএন