তিন বউকে নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় নিয়েই মাঠে নেমেছেন স্বামী দেলোয়ার হোসেন দেলোয়ার হোসেন। স্ত্রী শাহিনা আক্তার (৩২), আকলিমা বেগম (২৪) ও রত্না বেগম (২১)। (৪০) সুখের সংসার। এদের মধ্যে বড় বউ শাহিনা আক্তার এলাকায় জনপ্রিয় হওয়ায় ইউপি নির্বাচনে সংরক্ষিত নারী সদস্য হিসেবে নির্বাচন করতে যাচ্ছেন।
জানা গেছে, চলমান ইউপি নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার রাধানগর ইউনিয়ন পরিষদে তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় এ ইউপি নির্বাচনে ৪ নম্বর রাধানগর ইউনিয়ন পরিষদে ৪ ,৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডে সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান শাহিনা আক্তার। এখন পর্যন্ত নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিল না করলেও তফসিল ঘোষণার পর থেকেই তিন স্ত্রীকে নিয়ে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন দেলোয়ার। প্রতিদিন সকালে বের হয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত তিন ওয়ার্ডের বিভিন্ন মহল্লায় ভোটারদের বাড়ি ছুটছেন এবং দোয়া চাইছেন। সচরাচর সতিনের সংসারে দ্বন্দ্ব চললেও মাছচাষি দেলোয়ারের সংসারে এমন মিল এবং ভিন্নধর্মী প্রচারণায় এলাকায় ব্যাপক সাড়া পড়েছে।
স্থানীয়দের ধারণা, সতিনের সংসার মানেই ঝগড়া আর ঝামেলার সংসার। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন দেলোয়ার হোসেন ও তার তিন স্ত্রী। নির্বাচনী প্রচারণায় দেখা গেল পারস্পরিক সম্পর্কের প্রতিফলন।
ছোট বউ রত্না বেগম বলেন, ‘আমরা স্বামীসহ তিন সতিন মিলে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের একত্রিতভাবে এই প্রচারণা করতে দেখে অনেকেই অবাক হচ্ছেন। আমাদের নিয়ে স্থানীয় ভোটাররা ইতিবাচক আলোচনা করছেন। আমাদের বড় আপা (শাহিনা আক্তার) এলাকায় বেশ জনপ্রিয়। আশা করি মানুষের ভালোবাসায় ভোটে জিতবেন।’
মেজো বউ আকলিমা বেগম বলেন, `আমার স্বামী তিন বিয়ে করেছেন। সবাই আমরা একসঙ্গে বসবাস করি এবং সুখেই আছি। এবারের ইউপি নির্বাচনে আমরা আলোচনা করে বড় আপাকে ভোটে দাঁড় করিয়েছি। তাই তাঁকে জয়যুক্ত করতে আমরা একত্রিত হয়ে কাজ করছি।’
সংরক্ষিত নারী সদস্য পদের প্রার্থী শাহিনা বেগম বলেন, ‘আসন্ন ইউপি নির্বাচনে আমার দুই বোন (আকলিমা ও রত্না) ও স্বামীর পরামর্শে সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য হিসেবে ভোট করছি। সুখে-দুঃখে আমরা তিন সতিন একে অপরের পাশে দাঁড়াই। এ জন্য তাঁরাও সব সময় আমার পাশে থাকে। এলাকার মানুষ আমাকে ভালোবাসে। আমি এলাকায় বেশ পরিচিত। মানুষের সুখে-দুঃখে নিজেকে আরও নিবেদিত করতে চাই। তাই ভোটের জন্য সবার কাছে গিয়ে দোয়া চাইছি। প্রচারণায় এলাকার মানুষের অনেক সহযোগিতা পাচ্ছি। আশা করি আমি জয়লাভ করব।
স্বামী দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমি খেটে খাওয়া মানুষ। এখন মাছ চাষ করে সংসার চালাই। ১৬ বছর আগে প্রথম বিয়ে করি। এরপর ১৩ বছর আগে দ্বিতীয় এবং প্রায় ছয় বছর আগে তৃতীয় বিয়ে করি। বর্তমানে তিন বউ ও চার সন্তান নিয়ে সুখে-শান্তিতে আছি। আমি বিভিন্ন সময়ে এলাকার মানুষের নানা সমস্যায় এগিয়ে গেছি। জনসেবামূলক কাজে আমার স্ত্রীরাও আমাকে সমর্থন দেয়। আমার বড় স্ত্রী এলাকায় বেশ পরিচিত এবং জনপ্রিয়। তাই তাকে জনগণের সমর্থন নিয়ে সংরক্ষিত নারী সদস্য হিসেবে ভোটে দাঁড় করাতে চাওয়া। যাতে গরিব, দুঃখী ও খেটে খাওয়া মানুষের সেবা করা যায়। স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ও ভোটারদের বেশ সাড়া পাচ্ছি। আশা করি আমরা জয়ী হব।’
জেএন