রাশেদুল ইসলাম,নাটোর প্রতিনিধি: মরনব্যাধী করোনার সংক্রমণ এড়াতে বিভিন্ন প্রদক্ষেপ হাতে নিয়েছে সরকার। সরকারের এ সব নির্দেশনা বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ে কাজ করে স্থানীয় প্রশাসন। তবে এসব নির্দেশনা পালনে একটু বেশি তৎপর ও আন্তরিকতা দেখা গেছে নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাকিব- আল- রাব্বি। একজন কর্মকর্তা হয়েছেও সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ছুটে চলছেন উপজেলার এ প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। মাধনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আমজাদ হোসেন দেওয়ান বলেন, আমাদের ইউএনও সাহেব জনগণকে সচেতন করা, হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি নিন্ম আয়ের মানুষের খোঁজ-খবর রাখছেন তিনি ও খাবারসহ নিত্য দ্রব্য সামগ্রী পর্যন্ত পৌঁছে দিচ্ছেন । এরই মধ্যে তাঁর এসব কর্মকান্ডের কারণে ‘মানবিক’ ইউএনও হিসেবে আখ্যা পেয়েছেন। উপজেলার গন্ডি পেরিয়ে সব মহলে তিনি এখন ‘মানবিক’ এক জন কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রশংসায় ভাসছেন তিনি। প্রভাষক নাজমুল হাসান সাদ বলেন , প্রশাসনিক অন্যান্য কর্মকর্তার চেয়ে কর্মকর্তা হিসেবে তাঁর কর্মকান্ড প্রশংসনীয় এবং দৃশ্যমান।ব্রহ্মপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ হাফিজুর রহমান ও পিপরুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ কলিমুদ্দিন কলি বলেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন এবং হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমাদের সাথে নিয়ে ইউএনও স্যার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্নস্থানে ছুটে চলছেন ।কোথাও কোন রকম আইনের ব্যত্যয় ঘটলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আইন অমাণ্যকারীদের বিরুদ্ধে জরিমানাও করছেন তিনি। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন আইন ভঙ্গকারী বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছেন। করোনা ভাইরাসকে পুঁজি করে অসাধু ক্রেতারা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে দিয়েছেন। এ জন্য উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাজার নজরদারি করে জরিমানাও করেছে অসাধু দোকানীদের বিরুদ্ধে।নলডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি ডাক্তার মোহাম্মদ মজিবর রহমান শেখ ও মানবাধিকার কর্মী গ্রীন হাউস এর সভাপতি মোঃ রেজাউল করিম বলেন ,ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে হাট বাজার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, গণপরিবহন বন্ধ রাখর ঘোষণা দেয় সরকার। এতে বিপাকে পড়ে নিন্ম আয়ের মানুষ। তাদের কথা চিন্তা করে তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন মানবিক এ কর্মকর্তা। নিজের ব্যক্তিগত উদ্যোগে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। নিজ হাতে অসহায়দের মাঝে তুলে দিয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী। নলডাঙ্গা উপজেলার ইউএনও মোঃ সাকিব- আল- রাব্বি বলেন, হাট-বাজার বন্ধ হওয়ায় সবচেয়ে বেশি খেটে খাওয়া ও অসহায় মানুষগুলো ক্ষতির সম্মুখীন হবে। তাদের একজনের রোজগারে পুরো পরিবার চলতো। এখন তাদের উপার্জন বন্ধ। এ জন্য সাধ্য অনুযায়ী আমি তাদের সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছি।এছাড়া, সচেতনতার পাশাপাশি লোকজনের মাঝে মাক্সও বিতরণ করেছেন তিনি।অন্যদিকে, মরনব্যাধী এ অদৃশ্য ঘাতকের বিরুদ্ধে জনগণকে সচেতন থাকতে তাঁর অফিশিয়াল ফেইসবুক পেজেও বিভিন্ন পরামর্শ দেন তিনি।প্রশাসন কর্তৃক্ষ নির্দেশনা মেনে চলেন আপনাদের কল্যাণার্থেই কাজ করে যাচ্ছি। সকাল অবধি রাত পর্যন্ত বাহিরেই কাটাচ্ছি আপনাদেরই জন্য। চাইলেই ঘরে থাকতে পারছিনা। নলডাঙ্গা বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ফোন আসছে আমার কাছে। আমার একজনের পক্ষে পুরোটা কাভার করা কষ্টসাধ্য হয়ে যাচ্ছে। আপনারা যে যার অবস্থান থেকে কাজ না করলে এ উপজেলাকে সুরক্ষিত রাখা অসম্ভব হবে। কোনো ঝামেলা থাকলে অবশ্যই আপনার ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, মেম্বারকে আগে জানাবেন। ইউনিয়ন পর্যায়ে চেয়ারম্যান করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি। আজকে থেকে নাটোর জেলা প্রশাসনের বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ ইউনিয়নভিত্তিক অভিযানে বের হয়েছেন। আমাদের প্রদত্ত নির্দেশনাসমূহ মেনে চলুন, এটাই হবে আপনাদের পক্ষ থেকে আমাদের জন্য সহযোগিতা। খুব জরুরি প্রয়োজন না হলে ঘর থেকে বের হবেননা। নির্দেশনার ব্যত্যয় হলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। জনসেবায় প্রশাসন।
খবর২৪ঘন্টা/নই