1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
বাগমারায় আ’লীগ নেতার বাড়িতে পুলিশ ক্যাম্প: দাপটে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী - খবর ২৪ ঘণ্টা
মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৪৪ পূর্বাহ্ন

বাগমারায় আ’লীগ নেতার বাড়িতে পুলিশ ক্যাম্প: দাপটে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ১৮ সেপটেম্বর, ২০১৯

বাগমারা প্রতিনিধি:
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার ঝিকড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইউপি সদস্য আবদুল মানিক প্রামাণিকের ঝিকরা বাজারস্থ বাড়িতে পুলিশ ক্যাম্প থাকায় তার প্রভাবে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। তিনি ওই পুলিশ ক্যাম্পের প্রভাব খাটিয়ে একের পর এক চাঁদাবাজি, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও মামলায় জড়ানোর হুমকি দিয়ে এলাকার নিরীহ ব্যক্তিদের হয়রানী ও অর্থ আদায় করে চলেছেন। এসব ঘটনায় এলাকার নিরীহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বাগমারা থানা সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ভূক্তভোগিরা নিজেদের নিরাপত্তা ও আওয়ামী লীগের নেতার বিচার দাবি করেছেন। তবে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

বিভিন্ন দপ্তরের অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল মানিক প্রামাণিক ইউপি সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। নিষিদ্ধঘোষিত চরমপন্থী দলের সদস্য ও ক্ষমতাসীন দলের নেতা হওয়ার কারণে লোকজনকে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদাবাজি করে আসছেন। চাঁদা দেওয়া না হলে বিভিন্ন মামলায় ফাঁসানোর হুমকী দেওয়া হয়। ইতিমধ্যে কয়েকজনকে মামলায় আসামি করে কিংবা ওইসব মামলায় সাক্ষি হয়ে ফাঁসিয়েছেন নিরীহ লোকজনকে। 

ঝিকড়া ইউপি পরিষদের সাধারণ সদস্য সাইদুর রহমান, আহম্মদ আলী  ও ঝিকড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহদপ্তর সম্পাদক মকছেদ আলী অভিযোগ করেন, মানিক তাঁদের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা চেয়ে না পেয়ে একটি বিস্ফোরক মামলার আসামি করতে পুলিশকে সহযোগিতা করেছেন। তিনি (মানিক) ওই মামলার অন্যতম সাক্ষি।   

ঝিকরার জোয়ানভাগপাড়ার রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করেন, একটি ধর্ষণ মামলার আসামি করার ভয় দেখিয়ে তাঁর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করেছেন। ওই এলাকার বাসিন্দা মিঠুন আনোয়ার ও  আবুল কালাম আজাদ অভিযোগ করেন, মামলার ভয় দেখিয়ে তাঁদের কাছ থেকে দুই দফায় ১৫ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও এলাকার নীরিহ, বিত্তবান লোকজনদের টার্গেট করে তাঁদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে থাকেন মানিক মেম্বার। স্থানীয় পুলিশের সঙ্গে ভালো সর্ম্পক থাকা এবং তাঁর বাড়িতে ঝিকড়া পুলিশ ক্যাম্প থাকার কারণে প্রভাব খাটিয়ে একের পর এক  চাঁদাবাজি করেন তিনি। এছাড়াও ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী নেতা হওয়ার কারণে লোকজন তাঁকে ভয় করে। 

সর্বশেষ গত ২৯ আগষ্ট ঝিকরার পৌজদার পাড়া গ্রামের জনৈক এক ব্যক্তির স্ত্রীকে দিয়ে একই গ্রামের ফরিদুল ইসলাম ফরিদ নামের যুবকের বিরুদ্ধে মিথ্যা নারী নির্যাতন ও ধর্ষণ মামলা দিয়েছে এই মানিক মেম্বার। ওই মামলায় তিনি তিন নম্বর সাক্ষীও। এছাড়া এলাকার নিরীহ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এমন অসংখ্য মামলা রয়েছে যার সাক্ষী হিসাবে রয়েছেন মানিক মেম্বার। তিনি টাকার বিনিময়ে একজন পেশাদার সাক্ষী হিসেবেও কাজ করেন বলে ভুক্তভোগিরা জানান। ওই মামলার আসামী ফরিদুল ্ইসলাম জানান, এই মামলার আগে মানিক তার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবী করেছিল । ওই টাকা না দেওয়ার তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন মামলা দেয়া হয়। সম্প্রতি রাজশাহীর আদালত থেকে এই মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন চেয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিবুর রহমানকে। তিনি তদন্ত প্রতিবেদনও প্রস্তুত করে পাঠান। আসামী ফরিদুল সহ তার প্রতিবেশীরা জানান, ওই তদন্তে কৃষি অফিসার রাজিবুর রহমান তার অফিসের উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা শামসুর রহমানের কাছে উৎকোচ গ্রহনের মাধ্যমে প্রভাবিত হয়ে মিথ্যা প্রতিবেদন দিয়েছেন। কারণ শামসুর রহমান ওই মামলার বাদীর নিকট আত্মীয়। এ বিষয়ে কৃষি অফিসার রাজিবুর রহমান বলেন, আদালত যে ভাবে সাক্ষী ও বাদীর জবানবন্ধি চেয়ে প্রতিবেদন চেয়েছে আমি সে মোতাবেক প্রতিবেদন দিয়েছি। প্রভাবিত হওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন।
এমনি ভাবে মানিক মেম্বারের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী অভিযোগ ভুরিভুরি। ঝিকরা বাজারের নাইটগার্ড শামসুল অভিযোগ করে বলেন, মনিক তার বকেয়া বেতনের ২০ হাজার টাকা আটকিয়ে রেখেছে। এ্ই টাকা চাইতে গেলে তাকে মিথ্যা মামলার ফাঁসানোর হুমকি দেওয়া হয়। একই ভাবে জিয়ানন্দপাড়ার শামসুল হকের অভিযোগ তাকে পুলিশে চাকুরী দেওয়ার নাম করে মানিক পাঁচ লক্ষ টাকা নিয়েছে। টাকা ফেরত চাইতে গেলে তাকেই মামলার ফাঁসানোর হুমকি দেওয়া হয়।

ঝিকরা গ্রামের বাসিন্দা ভবানীগঞ্জ মহিলা ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক আবদুর রাজ্জাক অভিযোগ করেন, ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব খাটিয়ে তাঁর একটি জলাশয় দখল করে নিয়েছেন মানিক মেম্বার। জলাশয় উদ্ধারে তিনি বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও কোনো সুরাহা হয়নি।
এদিকে মানিকের ক্ষমতার উৎস ঝিকরা পুলিশ ফাঁড়ি স্থানান্তরের দাবী জানিয়ে আসছে এলাকার লোকজন। তাদের দাবীর প্রেক্ষিতে জেলা পুলিশ কর্তৃপক্ষ ফাঁড়িটি স্থানান্তরের নির্দেশ দেয় বাগমারা থানাকে। সে সময় ফাঁড়ি স্থানান্তরে ঝিকরার পরিত্যাক্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়টি সংস্কারের জন্য উপজলা পরিষদ থেকে ২ লক্ষ টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়। ওই টাকার কিছু সংস্কার হয়ে কাজটি আবার বন্ধ হয়ে গেলে থেমে যায় ফাঁড়ি স্থানান্তর প্রক্রিয়া। এলাকাবাসীর আভিযোগ মানিক তার অদৃশ্য খুঁটির প্রভাব খাটিয়ে ফাঁড়ি স্থানান্তর কাজ বন্ধ রেখেছে যাতে তার চাঁদাবাজি আরো দীর্ঘায়িত করা যায় ।

এসব বিষয়ে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল মানিক প্রামাণিক তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কোনো চাঁদাবাজি করা হয়নি । কোন কোন ঘটনায়  অভিযোগকারীরা সামাজিকভাবে অপরাধ করেছিলেন, এজন্য তাঁদের কাছ থেকে জরিমানা হিসাবে টাকা আদায় করা হয়েছে। কাউকে হুমকি বা ভয়ভীতি দেখানো বা পুলিশের প্রভাব খাটানোর অভিযোগও ভিত্তিহীন। এলাকাবাসীর আমার প্রতি আস্থা রয়েছে। তাই আমি বিপুল ভোটে মেম্বর হতে পেরেছি। কিছু স্বার্থম্বেষী মহল তারা সুবিধা করতে না পেয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ ছড়াচ্ছে। 

বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, ইউপি সদস্য আবদুল মানিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ বিষয়ে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে । তিনি চরমপন্থী কিনা তা ফাইল না দেখলে বলা সম্ভব হচ্ছে না। মানিকের বাড়িতে পুলিশ ফাঁড়ি ও পুলিশের সঙ্গে তার ভালো সর্ম্পক থাকায় তিনি নিরীহ লোকজনকে হয়রানী করেন এমন অভিযোগের সত্যতা পেলে অবশ্যই মানিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া  হবে বলে জানান ওসি। এছাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়টি সংস্কারের জন্য আরো পাঁচ লক্ষ টাকা বরাদ্দ এসেছে।  আগামী ২/৩ মাসের মধ্যেই মানিকের বােিড় থেকে পুলিশ ক্যাম্প সরানো হবে। এ বিষয়ে বাগামারার  ইউএনও জাকিউল ইসলাম বলেন, এ ভাবে পুলিশ ফাঁড়ি ও পুলিশের প্রভাব কাটিয়ে অন্যায় করে কারো পার পাওয়ার সুযোগ নেই। বিষয়গুলো দ্রত তদন্ত করে দেখা হবে। এছাড়া পুলিশ ফাঁড়ি স্থানান্তরে তিনি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা চাইবেন বলে জানান। 

আর/এস 

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST