1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
নাটোর সুগার মিল ‘চিনি বেঁচে বেতন নেন, ৫% কমিশন দেন’ - খবর ২৪ ঘণ্টা
শনিবার, ১১ জানয়ারী ২০২৫, ০৩:৫২ পূর্বাহ্ন

নাটোর সুগার মিল ‘চিনি বেঁচে বেতন নেন, ৫% কমিশন দেন’

  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ২৪ জুন, ২০১৮

নাটোর প্রতিনিধি: দেশের শীর্ষস্থানীয় চিনি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান নাটোর সুগার মিল। মানসম্পন্ন চিনি উৎপাদনে সুনাম অর্জন করলেও আর্থিক সংকটে মুখ থুবড়ে পড়ছে চিনিকলটি। মার্চের পর প্রতিষ্ঠানটির প্রায় সাড়ে ৬শ’ কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকের বেতন, বিভিন্ন ভাতা, ওভারটাইম ও মজুরী দিতে পারেনি চিনিকলটি। টাকার পরিবর্তে দেওয়া চিনি নিয়েও কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। মিলের তালিকাভুক্ত এক সহকারী ব্যবস্থাপক (সম্প্রসারই)-এসইডিও চিনির

দামের উপর শতকরা পাঁচভাগ কমিশন বাগিয়ে নিচ্ছেন। সেই সাথে জুড়ে দিয়েছেন আরো শর্ত। এ নিয়ে রোববার সকালে সুগার মিলে গেট মিটিং ডেকে কমিশন বাণিজ্যের প্রতিবাদ জানিয়ে নায্য পাওনাদি পরিশোধের দাবী জানিয়েছে মিলের শ্রমিক-কর্মচারীরা। তাদের অভিযোগ, সময়মত বেতন ভাতা না পেয়ে ঈদুল ফিতরের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তারা। এছাড়া অর্থাভাবে তাদের সন্তানদের লেখাপড়া ব্যহত হচ্ছে। পরীক্ষার ফি জমা দিতে না পেরে অনেকেই পরীক্ষা দিতে পারেনি বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শ্রমিক কর্মচারীদের কেউ কেউ। রোববার গেইট মিটিংয়ে এমন অভিযোগ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্ষুদ্ধ কর্মচারীরা।

সরেজমিন নাটোর সুগার মিল ঘুরে দেখা যায়, চিনিকলের গুদামে প্রায় সাত হাজার মেট্রিক টন চিনি মজুদ রয়েছে। কারণ, কয়েক মৌসুমে মিলে উৎপাদিত চিনি বিক্রিই হয়নি। এর উপর শ্রমিক কর্মচারীদের বেতন-মজুরীসহ আনুষাঙ্গিক পাওনাদি পরিশোধে নিজস্ব তহবিল বা ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা না থাকার ফলে কয়েক বছর ধরে মজুরী পরিশোধে সৃষ্টি হয়েছে জটিলতা। এক পর্যায়ে মজুরী দিতে না পারায় এর পরিবর্তে মিল কর্তৃপক্ষ সমপরিমাণ অর্থের চিনি শ্রমিক-কর্মচারীদের দেয়ার প্রস্তাব দেয়। শুরুতে রাজি না হলেও শ্রমিক-

কর্মচারীদের কেউ কেউ নিরুপায় হয়ে চিনি নিতে সম্মত হয়। বাজারমূল্যের চেয়ে কম দামে চিনি বিক্রি করেও পাওনাদি আদায়ে কমিশন বাণিজ্যের শিকার হচ্ছে শ্রমিক-কর্মচারীরা। তাদের অভিযোগ, চিনি বিক্রি করে যে টাকা পাওয়া যাবে তার উপর শতকরা পাঁচভাগ কমিশন দাবী করছে কামাল হোসেন নামের স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সুগার মিলের এসইডিও। এককভাবে কামাল হোসেনকে চিনি দিলেই তিনি সুগার মিলের মজুদ চিনি কিনবেন, এমন শর্তে মিল কর্তৃপক্ষ তার নিকট চিনি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই সুযোগে তিনি শ্রমিক-কর্মচারীদের থেকে শতকরা পাঁচভাগ কমিশন বাগিয়ে নিচ্ছেন। শ্রমিকদের দাবী, এই কমিশন বাণিজ্যের নেপথ্যে রয়েছেন ব্যবস্থাপকসহ মিল প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা।

এদিকে মিল কর্তৃপক্ষ পাওনাদি পরিশোধ না করায় মানবেতর জীবনযাপন করছে শ্রমিক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদের ভয়, গণমাধ্যমের সাথে এ নিয়ে কথা বললে ছোট ছোট অভিযোগ এনে নোট দিয়ে চাকুরিচ্যুত করা হয়। এমনকি সময়মত মজুরী না পাওয়ায় এক শ্রমিকের সন্তান এইচএসসি পরীক্ষা দিতে পারেনি।

বয়লার হাউজের শ্রমিক আবু তালেব বলেন, ‘ঈদের আগে মজুরী কমিশনের অগ্রীম টাকা পাইনি, তার উপর ২ মাসের বেতনও বকেয়া। ধারদেনা করে ঈদ পার করেছি, এখন আর চলার সামর্থ্য নেই।’

মিলের ওয়ারিং ও বিদ্যুৎ হাউজের কর্মচারী বাবর আলী বলেন, ‘তিন মাস ধরে বেতন পাই না। চাইতে গেলে মিল কর্তৃপক্ষ বলে, মিলের টাকা নেই। ৫% কমিশনে চিনি বেচে বেতন নেন।’

হিসাব বিভাগের জ্যেষ্ঠ করণিক সাহেব আলী বলেন, ‘ওভারটাইম, বকেয়া বেতন, বাড়িভাড়াসহ ২ মাসের বেতন দিচ্ছে না মিল কর্তৃপক্ষ। চিনি দিতে চাইছে বাজারের চেয়েও কম দামে। আবার সেই চিনি বিক্রি করতেও ৫% কমিশন দিতে হবে ক্রেতাকে, এটা মেনে নেয়া যায় না। কমিশনের বিনিময়ে বেতন-ভাতা গ্রহণ করবো না আমরা।’

শ্রমিক জালাল উদ্দীন বলেন, ‘ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের গৃহীত ৫% কমিশনের সিদ্ধান্ত মানি না। কাজ করেছি বেতন পাওয়ার জন্য। অথচ এখন টাকা দিয়ে বেতন নেয়ার কথা বলছে ব্যবস্থাপনা পরিচালক। ’

চিনিকল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘নায্য বেতন-মজুরী সাড়ে ৬শ’ কর্মকর্তা কর্মচারীর নায্য অধিকার। সকলে একমত হয়েছে কমিশন দিয়ে বেতন না নিতে। এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে শিল্পমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’

ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শরীফুল ইসলামও শীর্ষ স্থানীয় এ চিনিকলের ছয় শতাধিক কর্মকর্তা-শ্রমিক-কর্মচারীর পাওনা পরিশোধ করতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। তিনি বলেন, ‘৫% কমিশন দিয়ে শ্রমিক-কর্মচারীরা বকেয়া বেতন নিলে অবশিষ্ট কিছুই থাকে না। এখানকার কর্মকর্তা-শ্রমিক-কর্মচারীরা তাদের নায্য পাওনাদি না পেলে ভবিষ্যতে চিনি উৎপাদনে উৎসাহ হারাবে। তখন চিনিশিল্প মুখ থুবড়ে পড়বে।’

তবে এই অভিযোগকে বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বলে দাবী করেছেন সহকারী ব্যবস্থাপক (সম্প্রসারণ) কামাল হোসেন। তিনি বলেন, ইতোপূর্বে চিনিকল থেকে যে পরিমান চিনি তিনি ক্রয় করেছেন সেই চিনিই এখনও তিনি বিক্রি করতে পারেননি। আর চিনি কেনার কোন প্রশ্নই ওঠেনা। এছাড়া কমিশন শর্তে তিনি কোন চিনি ক্রয় করেননি বা করতে আগ্রহী নন। তবে শ্রমিক কর্মচারীরাই বকেয়া বেতনের জন্য মিল কর্তৃপক্ষের কাছে ৫ পারসেন্ট কমিশনে আমার কাছে চিনি বিক্রির জন্য অনুরোধ করেছেন। কিন্তু তিনি শ্রমিক কর্মচারীদের সেই আবেদনও প্রত্যাখ্যান করেছেন। ব্যবসায়ীক সুনাম ক্ষুন্ন করতেই এমন মিথ্যাচার করা হয়েছে। তার দাবী তিনি শ্রমিকদের কষ্ট দেখেই চিনি কিনেছেন, কমিশন বাণিজ্য করতে নয়।

মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহীদ উল্লাহ মিলের আর্থিক সংকটের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘চিনি বিক্রির টাকা থেকে গত ফেব্রুয়ারী ও মার্চ মাসের বেতন দেয়া হয়েছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। সরকারের বেঁধে দেয়া ৫০ টাকা কেজিতে ব্যবসায়ীরা চিনি কিনতে চান না। তাই চিনি অবিক্রিত থাকছে এবং বকেয়া বেতন-ভাতা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। অনান্য মিলগুলোতে নির্দিষ্ট কমিশনের বিনিময়ে চিনি বিক্রি করেই বকেয়া পরিশোধ করা হচ্ছে জানিয়ে সংকট নিরসনে কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।

খবর ২৪ঘণ্টানই

 

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST