নাটোর প্রতিনিধি: আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের তালবাহানা না করে তাদের দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি করেছেন নাটোরের নলডাঙ্গার নিহত গৃহবধু ছবির পরিবার। বৃহস্পতিবার দুপুরে নাটোর প্রেস ক্লাবের হলরুমে ছবির পরিবারের আয়োজনে এবং শাপলা ও জেএনএনপিএফ এর সহযোগীতায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। নিহত শরিফা আক্তার ছবি নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার কৈডিমা গ্রামের সিরাজুল ইসলামের মেয়ে ও নলডাঙ্গা উপজেলার পিপরুল গ্রামের সৌদি প্রবাসী মিল্টন হোসেনের স্ত্রী। নিহতের বাবার পরিবারের দাবী শরিফা আক্তার ছবিকে শ্বশুড়,শ্বাশুড়ীও ননদ মিলে হত্যার পর বাথ রুমে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে রেখে হত্যা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ছবির ভাই তৌহিদুল ইসলাম ও শাহ্ আলম জানান, ১১বছর পূর্বে বড়াইগ্রাম উপজেলার কৈডিমা গ্রামের সিরাজুল ইসলামের মেয়ে শরিফা আক্তার ছবির সাথে নলডাঙ্গার পিপরুল শেখপাড়া গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে মিল্টন হোসেনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর ছবির স্বামী মিল্টন তার চাকুরীর জন্য রিয়াদে পাড়ি জমায়। এর পর তাদের সংসার বেশ ভালোই চলছিল।
পরবর্তিতে প্রতি বছরই প্রায় মিল্টন দেশে বেড়াতে আসতো। কিন্তু গত কয়েক বছর মিল্টন দেশে না আসলে তাদের মধ্যে মোবাইল ফোনে প্রায় ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকতো। এনিয়ে পরিবারের সকলের সাথে শরিফা আক্তার ছবির মাঝে মাঝেই ঝগড়ার এক পর্যায়ে শ্বশুরবাড়ীর লোকজন তাকে মারধর করতো। ঘটনাটি ছবি বেশ কয়েকবার তার বাবার বাড়ীর লোক জনকে জানিয়েছে।
তারাও ছবির শ্বশুর,শ্বাশুড়ী ও ননদ সহ অন্যান্যদের সাথে কথা বলে মিমাংশা করেছেন। এভাবেই চলছিল তাদের সংসার। হত্যার রাতে খাওয়া শেষে মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে ছবি তার শোবার ঘরে চলে যায়। এরপর হত্যার দিন ২৬ শে মে শনিবার সকালে বাড়ীর বাথরুমে গলায় দড়ি প্যাঁচানো অবস্থায় শরিফা আক্তার ছবির লাশ ঝুলতে দেখে পরিবারের লোকজন। পরে বিষয়টি পুলিশকে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে।
নিহত শরিফা আক্তার ছবির ভাই শাহ আলম জানান, তিনি ২৬ শে মে সকালে এলাকাবাসীর মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানতে পেরে বোনের বাড়ীতে আসেন। সেখানে পৌছে তিনি তার বোনের গলায় দড়ি প্যাঁচানো লাশ দেখতে পান। তিনি বলেন এটা পরিকল্পিত একটা হত্যা। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তারা সুষ্ঠু ন্যায় বিচার পাননি।
এ ব্যাপারে ছবিকে হত্যা ঘটনার পরে নলডাঙ্গা থানায় মামলা করতে গেলে অনৈতিকভাবে থানা মামলা নেয়নি। উপায় না দেখে ২৯ শে মে তারা নলডাঙ্গা উপজেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৩০২/২০১/৩৪ দন্ড বিধিতে মমিলা দায়ের করেন। সে অভিযোগের শুনানি পূর্বক ঋওজ এর জন্য নলডাঙ্গা থানা ইনচার্জ কে নির্দেশ দিলেও থানা তালবাহানা করে। এর প্রতিবাদে ছবির পরিবার ১৫ জুন আহমেদপুর মহাসড়কে মানব বন্ধন করা হয়।
কিন্তু আসামীরা সরকারী চাকুরীজীবী ও প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না। বিধায় ৯ জুলাই নাটোর জেলা পুলিশ সুপারের শরোণাপন্ন হয়ে তাকে না পেলে সার্কেল এসপি মহোদয়ের সাথে দেখা করে নলডাঙ্গা ওসির ছবি হত্যা ম,ামলা নিয়ে নিস্ক্রিয়তার কথা জানালে তিনি সঙ্গে সঙ্গে ওসি কে মোবাইল করে অসামীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবার কথা বললেও আজও তার কোন প্রতিকার আমরা পাচ্ছিনা।
ছবির হত্যাকারী খুনি লম্পটেরা যেন কোনভাবেই এই হত্যা মামলাটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে না পারে তাই আসামীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানানো হয়।
খবর ২৪ঘণ্টা/ নই
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।