নাটোর প্রতিনিধিঃ বাবা নুর মোহাম্মদ। বিশ বছর পূর্বে মারা গেছে। বৃদ্ধা মা রোকেয়া বেওয়া (৭৫) কোন মতে বেঁচে আছে। মায়ের দেখাশুনার জন্য প্রায় ১৩ বছর বিয়ে করেন কাজী আতিকুর রহমান। সংসারে পরীর মত ফুটুফুটে তিনটি কন্যা সন্তান আছে। বড় মেয়ে আফিয়া জাহান (৯) মশিন্দা নতুন কুড়ি কিন্ডার গার্ডেনের ২য় শ্রেনীর ছাত্রী। দ্বিতীয় মেয়ে হুমায়ারা (৩) এবং ছোট মেয়ে তাহেরার বয়স দেড় বছর। সবাইকে নিয়ে পরিবারটি খুবি সুখে শান্তিতে বসবাস করে আসছিল। হঠাৎ এক ঝড়ে তাদের সংসারে মেঘের অন্ধকার ছায়া নেমে আসে। গত ৩০শে এপ্রিল ব্রেণ স্ট্রোক হয় আতিকের। সাথে সাথে ভর্তি করা হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৮তারিখে তার মৃত্যু হলে পরিবারে নেমে আসে অন্ধকারে শোকের ছায়া। এখন পরিবারে চোখে মুখে হতাশার ছাপ। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যাক্তিকে হারিয়ে এখন নিঃস্ব। অসহায় পরিবারটি এখন কোথায় যাবে ?
বাবার মৃত্যুর পর আতিকুর রহমান ২০০২ সালে সংসারে হাল ধরার জন্য আইন মন্ত্রনালয়ে থেকে লাইসেন্স নিয়ে মশিন্দা ইউনিয়নে বিবাহ-তালাক নিবন্ধক (কাজী) হিসাবে কাজ শুরু করে।
আতিকের বৃদ্ধা মা রোকেয়া বেগম কান্নাজরিত কন্ঠে বলেন, আমার ছেলে মারা গেল। আমরা এখন কোথায় যাবো? সরকার যদি আমার পুত্রবধূকে বিবাহ-তালাক নিবন্ধক হিসাবে নিয়োগ দিতো তাহলে ছোট ছোট নাতনীদের নিয়ে খেয়ে পরে বেঁচে থাকতাম।
গুরুদাসপুর উপজেলা কাজী সমিতির সভাপতি শফিকুল ইসলাম জানান, অসহায় পরিবারটির দিকে তাকালে দু’চোখে অশ্রু চলে আসে । এই ছোট ছোট তিনটি মাসুম বাচ্ছাকে নিয়ে কোথায় যাব, কি খাওয়াবো ,কিভাবে সংসার চলাবো। ভাবতেই বুকটা ফেটে যায়। যেহেতু কাজী আতিকুর রহমানের স্ত্রী হাজেরা খাতুন কামিল পাস। তাকে যদি বিবাহ-তালাক নিবন্ধক হিসাবে সরকার নিয়োগ দিতো তাহলে পরিবারটি পথে বোসার হাত থেকে রক্ষাপেত।
কাজী সমিতির সাধারন সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বলেন, বিশেষ পোষ্য কোটা হিসাবে তার স্ত্রীকে কাজী হিসাবে নিয়োগ দেওয়া যায়। হাজেরা খাতুনকে কাজী হিসাবে নিয়োগ দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাছে তিনি জোরদাবি জানান ।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ