নাটোর প্রতিনিধি: রাতভর টহল দেয়ার জন্য পুলিশ ফাঁড়ির নেই কোন যানবাহন। তাই বলে থেমে নেই টহল। ভ্যানগাড়ি দিয়ে চলে পুলিশ ফাঁড়ির টহল। তবে টহল ভ্যানের পারিশ্রমিক তোলেন অনান্য চালকদের পকেট থেকে। ওই ভ্যানচালকের নাম জুয়েল রানা। টাকা না দিলে জুয়েল নিজেই অবর্তীর্ণ হন পুলিশের চরিত্রে। তার বাড়ি নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার জামনগরের সাজিপাড়া গ্রামে। সম্প্রতি জুয়েল রানার বিরুদ্ধে বাগাতিপাড়ার পকেটখালিতে চাঁদা না দেয়ায় অটোভ্যান চালককে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বাগাতিপাড়া মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
সূত্রে জানা যায়, উপজেলার খন্দকার মালিঞ্চি গ্রামের আকছেদ আলী গতকাল পকেটখালি মোড় অটোভ্যানে ভাড়া নিয়ে যায়। এ সময় ভ্যানচালক জুয়েল রানা পকেটখালী মোড়ে ভ্যান চালকের গতিরোধ করে পাঁচ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদার টাকা দিতে অপারগতা জানালে মারপিট করে তাকে আহত ও অটোভ্যানের মিটার ভেঙ্গে দেয়া এবং কাছে থাকা মোবাইল ছিনিয়ে নেয়া হয় বলে অভিযোগ করেন ভ্যানে চালক আকছেদ আলী। পরে আহত ভ্যান চালক বাগাতিপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেন মেডিকেল অফিসার ডা. আয়শা সিদ্দিকা।
তবে অভিযুক্ত জুয়েল রানার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন , ‘ ফাঁড়ির পুলিশরা টহল দেয়ার জন্য আমার ভ্যান ব্যবহার করে। কিন্ত তারা এর বিনিময়ে আমায় কোন টাকা দেয়না। গত দুই মাস যাবৎ আমি রাতে পুলিশদের নিয়ে টহল দিই। দুই মাসে আমি কোন টাকা পাইনি এর বিনিময়ে। অথচ ভাড়া দেয়ার কথা ছিল আমায়। ভাড়া দিতে না পারায় পুলিশরাই আমাকে টহলের বিনিময়ে ভ্যান প্রতি পাঁচ টাকা আদায় করার নির্দেশ দেয়।গত রবিবার আমি টাকা চাইলে ভ্যানচালক মকছেদ তা দিতে চাইনি। বাটাম দিয়ে মারধর করা বা মোবাইল নেয়ার কথা মিথ্যা। ফাঁড়ির ইনচার্জ মোতালেব সারের নির্দেশেই আমি টাকা আদায় করি।’
তবে মারপিটের সত্যতা নিশ্চিত করে খবর২৪ঘন্টাকে জামনগর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য গোলজার জানান, ‘পকেখালী আমার ওয়ার্ড এলাকা। পুলিশ ফাড়ির পক্ষ থেকে এটা নেয়া হয়। একজন নাইড গার্ড আছে, তার খরচের জন্য এটা নেয়া হয়।’ তবে চাঁদা না দেয়ায় ওই ভ্যান চালককে মারপিট করা ঠিক হয়নি বলে মনে করেন তিনি।
চাঁদা আদায়ের ব্যাপারে পকেটখালী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মোতালেব হোসেন খবর২৪ঘন্টাকে জানান, ‘ফাঁড়িতে কোন টহল গাড়ী না থাকায় একজন করে ভ্যান চালক প্রতি রাতে ডিউটি করার কথা কিন্তু তাদের সকলের সিদ্ধান্তে একজনকে ঠিক করেছে। আর তাকেই ওই টাকা দেয়া হয়। পুলিশ, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়দের সকলের সিদ্ধান্তেই এ টাকা নেয়া হয়। মারপিট করে কারো কাছে টাকা নিতে বলা হয়নি। বিষয়টি সমাধানের জন্য মঙ্গলবার সকালে জামনগর ইউনিয়ন পরিষদে দুই ভ্যানচালককে নিয়ে বসা হবে।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ