নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরের সিংড়া উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা আবু বক্কর সিদ্দিক খান হত্যা মামলার আসামীদের বিরুদ্ধে ছেলে সংবাদ সম্মেলন করায় বাবা মামলার বাদির ওপর হামলা চালিয়েছে আসামীরা। শুক্রবার দুপুর পৌনে দুইটার সময় উপজেলার রামানন্দ খাজুরা ইউনিয়নের দূর্গম সোয়াইর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মামলার বাদি ওসমান আলী খান জুম্মার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার সময় এ হামলার শিকার হন। এরআগে নাটোর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন তার ছেলে মোজাম্মেল খান। সংবাদ সম্মেলনে তিনি
অভিযোগ করে বলেন, ২০১৪ সালের ২৯ মার্চ প্রকাশ্য দিবালোকে মুক্তিযোদ্ধা আবু বক্কর সিদ্দিক খানকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় পরদিন তার ভাই ওসমান আলী খান ২৭ জনকে আসামী করে সিংড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি স্পর্শকাতর হওয়ায় পরে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে দ্রুত বিচার ট্রাইবুনাল রাজশাহীতে প্রেরণ করা হয়। তবে চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার বাদী ওসমান আলী খান মামলা করে বিপাকে পড়েছেন। তাদের দাবী, মামলার আসামীরা উল্টো মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে।
এছাড়া প্রতিনিয়ত হত্যা মামলাটি তুলে নিতে ও সাক্ষীদের সাক্ষ্য প্রদানে বাধা ও হুমকি দিয়ে আসছে আসামীরা। তাদের কথামত মামলা তুলে না নেয়ায় হামলার শিকারও হয়েছেন বাদীর ছেলে মোজাম্মেল খান। আসামীরা মোজাম্মেল খানের নিকট থেকে ৪০ লাখ টাকা পায় মর্মে তা পরিশোধ না করার অভিযোগ এনে চলতি বছরের ১০ জানুয়ারী নাটোর আদালতে একটি মামলাও দায়ের করেছেন। মোজাম্মেল খান আরো বলেন, গত ২৮ নভেম্বর মামলার ৫ আসামী সিংড়া বাসস্ট্যান্ডে তাকে আটকে রেখে তার নামে একটি চেকে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করে নেয়। একই সঙ্গে ওই হত্যা মামলা তুলে না নিলে হয়রানির জন্য মামলা দায়ের করবে বলেও হুমকি দেয় তারা।
পরে তার বিরুদ্ধে ৪০ লাখ টাকা পাওনা পরিশোধ না করার মিথ্যা মামলা করেন তারা।’ পরে প্রতিকার চেয়ে সিংড়া থানায় জিডি করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ তার জিডি গ্রহন করেনি। পরে নাটোর সদর থানায় এসে অভিযোগ দায়ের করেন বলে জানান মোজাম্মেল খান। মামলার বাদী ওসমান আলী খান অভিযোগ করে বলেন, গত ২৯ সকালে মামলার আসামীরা ১০/১২ জন বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে তাদের বাড়িতে চড়াও হয় এবং মামলাটি আপোষ মীমাংসার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। এতে রাজী না হলে পরিবারের সদস্যদের
যেখানে পাবে সেখানে মারপিট, জখম, খুন করা হবে বলে হুমকি দেয়। তারা রাতের অন্ধকারে বাড়ির আশেপাশের রাস্তায় অস্ত্রসহ ঘোরাফেরা করে। এ ঘটনায় নিরাপত্তা চেয়ে সিংড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে। তবে বিবাদীদের ভয়ে তিনি বাড়িতে
ঢুকতে পারছেন না । মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আব্দুল হান্নান বলেন, ওসমান আলী খানের বিরুদ্ধে বিবাদী রবিউল ইসলামের দায়েরকৃত এজাহারের আলোকেই মামলা নথিযুক্ত হয়। বিবাদী রবিউলের থেকে ওসমান আলী খান হত্যা মামলা
মিমাংসার জন্য ৮ লাখ টাকা নেন। এ ঘটনার সাক্ষী ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান।
সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম জানান, মুক্তিযোদ্ধা হত্যা মামলাটি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করা হচ্ছে। মীমাংসা দুই পক্ষের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আর সংবাদ সম্মেলন করার কারণে পুনরায় হত্যা মামলার বাদীর উপর হামলা করা হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। ঘটনার সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ