নাটোর প্রতিনিধি: মুক্তিযোদ্ধা হামেদ আলী, বাড়ি নাটোরের সিংড়া উপজেলার কালিনগর গ্রামে । ৭১ এ যুদ্ধ করেছেন ৭ নং সেক্টরে। সাথীদের নিয়ে তিনি ভারতে ট্রেনিং শেষে পলাশ ডাঙ্গায় লতিফ মির্জার অধিনে যুদ্ধে অংশ নেন। কিন্তুু এখনো পায়নি কোন সরকারী স্বীকৃতি। সরকারী স্বীকৃতি না পাওয়া এবং অর্থাভাবে চিকিৎসার অভাবে ২০০৮ সালে মূত্যুবরন করেন মুক্তিযোদ্ধা হামেদ আলী। সম্প্রতি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাচাইয়ে ৪৪ জন মুক্তিযোদ্ধার নাম তালিকাভুক্তি হয়। সেই তালিকায় মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নাম রয়েছে হামেদ আলীর। কিন্তু তার পরিবারের বিধবা স্ত্রী ও তিন মেয়ের লেখাপড়ার ভবিষৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটছে দিন।স্বামীর মূত্যুর পর সংসারের সমস্ত দ¦ায়ীত্ব তুলেনেন নিজের কাধে । দিনমজুরের কাজ করে জীবন সংগ্রামে অসহায় রেনুকা বেগম।
স্বামীর মূত্যুর পর তিন মেয়ে নিয়ে চরম বিপদে পড়েছেন তিনি। বড়মেয়ে রুখসানার পড়ালেখা বন্ধ হয়ে গেলে সে ঢাকায় গার্মেন্টস এ চলে যায়। পরে সেখানে কর্মরত অবস্থায় এসএসসি পাশ করে। এখন সে শক্তি ফাউন্ডেশনের মাঠ কর্মী হিসেবে চাকুরির পাশে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে নিজ খরচে। অভাব অনটনে তাঁর মেজ মেয়ে সুরমা কে নাটোর দিঘাপতিয়া শিশু সদনে পাঠান। সেখান থেকে সে এসএসসি পাশ করে। এখন সে দিঘাপতিয়া এমকে কলেজে এইচএসসির ১ম বর্ষে পড়ালেখা করছে। বাড়ি থেকে প্রতিদিন কলেজে যেতে খরচ ৭০ টাকা। এ টাকা দেয়ার মত সামর্থ্য নাই রেনুকার। তাই কলেজে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে ইতিমধ্যে । ছোট মেয়ে মালা বিলদহর উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭ম শ্রেনীর ছাত্রী।
দু মেয়ের পড়ালেখার সব খরচ বহন করতে হয় মৃত মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী রেনুকা বেগমের। সে অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালান। নুন আনতে পান্তা ফুরায় এমন অবস্থায় দিনাতিপাত করছে তারা। পায় না কোন সরকারী ভাতা। স্বামী মারা যাবার পর বিধবা ভাতা ও জুটেনি রেনুকা বেগমের কপালে।
সহকর্মী মুক্তিযোদ্ধা মজিবর রহমান জানান, আমরা ভারতে ৮ জন প্রশিক্ষণে নিয়েছিলাম, এর মধ্য হামেদ আলী আমাদের সাথে ছিলো। হামিদ আলী আমার সংগে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়। তিনি একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা।
কলম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মঈনুল হক চুনু বলেন, আমি তাকে চিনি, সে বিধবা ভাতার কার্ড পাবার যোগ্য, তার কেন ভাতার কার্ড হয়নি তা আমি জানিনা, এবার বিধবা ভাতার কার্ড যেন হয় সে ব্যবস্থা করবো।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল ওদুদ দুদু জানান, গত ১৮ ফ্রেবুয়ারী ২০১৭ সালে সিংড়ায় মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাচাই হয়। সে মোতাবেক ৪৪ জনের চুরান্ত নাম তালিকাভুক্ত হয়েছে। সেখানে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে হামেদ আলীর নাম রয়েছে। তাদের নাম মন্ত্রনালয়ে প্রেরন করা হয়েছে। আশা করি দ্রুত তাদের নাম গেজেটভুক্ত হবে এবং এই অসহায় পরিবার ভাতাভোগীর তালিকার আওতায় আসবে।
খবর ২৪ঘণ্টা/ নই
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।