খবর২৪ঘণ্টা খেলা ডেস্ক: শ্বাসরুদ্ধকর এক ম্যাচে নাইজেরিয়াকে ২-১ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠে গেল আর্জেন্টিনা। আর্জেন্টনার হয়ে জয়সূচক গোলটি করেন মার্কস রোহো।
অনুগতজনে কি এভাবে প্রবঞ্চনা করতে হয় লিও মেসি? কবে শোনাবে তোমার রুপকথার গল্প? চলতি বিশ্বকাপে আসমুদ্র হিমাচল এ প্রশ্নই তুলেছিল। অজানা আতঙ্কে বারবার কেঁপেছে ভক্তদের বুক। আর ডুকরে কেঁদে উঠেছে হৃদয়। কিন্তু বিশ্বাস ছিল। ঈশ্বর নিরাশ করবেন না। আর প্রতিবারের মতো এবারও বিশ্বাসে আঘাত লাগেনি। সবুরে মেওয়া ফলল মঙ্গল-রাতে। সমালোচনায় বিদ্ধ, হতাশায় নিমজ্জিত আর সাদা-নীল জার্সিতে হারিয়ে যাওয়া সেই ঈশ্বরের দর্শন মিলল রোস্তভ স্টেডিয়ামে। যিনি আর্জেন্টিনার নতুন ভোরের রচনা করলেন নিজে হাতে। যিনি বুঝিয়ে দিলেন তাঁর পায়ে ফুটবল আরও কুলীন হয়ে ওঠে। শুধু গোল করে নয়, অধিনায়ক ও কোচ হিসেবেও এদিন দলকে অমূল্য জয়টি উপহার দিলেন লিও মেসি।
খেলার ১৪ মিনিট বয়সে যখন দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বল জালে জড়ালেন, তখন তাঁর চেয়েও বেশি উচ্ছ্বসিত গ্যালারিতে বসে থাকা মানুষটি। ক্রীড়া দুনিয়া যাঁকে ফুটবলের রাজপুত্র বলেই চেনে। প্রথম ম্যাচ থেকেই মেসির উপর সম্পূর্ণ ভরসা রেখেছিলেন মারাদোনা। আইসল্যান্ডের বিরুদ্ধে পেনাল্টি মিস কিংবা ক্রোয়েশিয়ার কাছে হার, কোনও পরিস্থিতিতেই মেসির মাহাত্ম্যকে খাটো করেননি মারাদোনা। উলটে দুষেছেন কোচ সাম্পাওলিকে। আর তাঁর এ দোষারোপ যে নেহাত অহেতুক নয়, তা তো এদিনই প্রমাণিত। মাসচেরানোকে সঙ্গে নিয়েই প্রথম একাদশ বেছেছিলেন। অ্যাগুয়েরোকে বসিয়ে হিগুয়েনকে আনেন। উইংয়ে জুড়ে দেন ডি মারিয়াকে। আর নিজের হাতে দল সাজাতেই বডি ল্যাঙ্গুয়েজ পালটে যায় মেসির। যা গত দুই ম্যাচে কোথাও যেন হারিয়ে গিয়েছিল। সাইডলাইনে দাঁড়িয়ে থাকা সাম্পাওলি তখন
নেহাতই মোমের পুতুল। নিজের অপদার্থতা ঢাকতে কোথায় মুখ লুকোবেন, তিনিই জানেন।
ফ্রিকিক থেকে এদিন বল বারে লেগে বেরিয়ে না গেলে এলএম টেনের পাশে জোড়া গোল লেখা থাকত। তবে মেসির গোলেও ছিটকে যাওয়ার আশঙ্কা কাটেনি। কারণ পেনাল্টি থেকে নাইজেরিয়াকে সমতায় ফিরিয়ে দিয়েছিলেন মজেস। আর্জেন্টিনার আকাশ থেকে কালো মেঘ সড়ল অন্তিম লগ্নে রোজোর গোলে। কিন্তু মেসিদের বিরুদ্ধে যেভাবে সমানে লড়াই চালিয়ে গেল সুপার ইগলস, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। দ্বিতীয়ার্ধের শেষে গোলের দারুণ সুযোগ হাতছাড়া না করলে ম্যাচের ফল অন্যরকম হতেই পারত।
দেশের জার্সি গায়ে অনেক কিছু প্রমাণ করা যে বাকি তাঁর। প্রত্যাবর্তনের পর যে নিজের উপস্থিতির জানান দিতে হবে তাঁকে। সেই সফরের শুভ সূচনা করে ফেললেন সুপারস্টার। মেসিময় হয়ে রইল এদিনের রাশিয়ান পরিবেশ। ওস্তাদের মার তো শেষরাতেই হয়। তাই তো উত্তেজনা চরমে পৌঁছে দেওয়ার পর শেষমেশ চারটি পয়েন্ট নিয়ে শেষ ষোলোয় পৌঁছে গেলেন মেসি এবং কোং। তবে ৯ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ ডি-এর শীর্ষে থেকে নক-আউটে গেল ক্রোয়েশিয়া। আর এবারের মতো বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিল আইসল্যান্ড ও নাইজেরিয়া।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ