1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
নস্টালজিয়াঃ মায়ার বাধন -৬ - খবর ২৪ ঘণ্টা
বুধবার, ০২ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৪৫ পূর্বাহ্ন

নস্টালজিয়াঃ মায়ার বাধন -৬

  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ২ ডিসেম্বর, ২০১৯

মোঃ মোস্তফা হারুন বরেন্দী: যাহোক, আমাদের ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এর ঘটনার প্রেক্ষিতে নানার বাড়ীতে আরও ১ মাস বেশি থাকা হলো। ১ মাস পর বারীভাইয়ের সাথে আমার রাজশাহীতে ফিরে গিয়ে আবার স্কুল, পড়াশুনা নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পড়লাম।একদিন বাবা আকস্মিক একটি জীবন্ত ইলিশ মাছ পদ্মার পাড়ে ঘোরাঘুরি করার সময় জেলেদের জালে ধরা পড়ায় তা আমাদের দেখানোর জন্য কিনে নিয়ে দ্রুত বাসায় নিয়ে আসলেন।কারন আমরা কোনদিনই জীবন্ত ইলিশ দেখি নাই।তখন আমাদের বাসা ছিলো বোস পাড়াতে।পদ্মা নদীর বাধের নিকটবর্তী আমাদের বাসা ছিলো। যার কারণে বাবা দ্রুত জীবন্ত ইলিশ মাছ বাসায় এনে একটা গামলায় পানিতে রেখে আমাদের দেখালেন।

খুব দ্রুততম সময়ের ভিতর ইলিশ মাছটি মারা গেলো। বাবা তখন মাকে বললেন, মাছটি গ্রুত কেটে ফেলো এবং ফ্রাই করো,তাজা ইলিশ মাছ ভাজি অনেক টেস্ট লাগে। বাবার কথামতো তাই হলো, মা মাছ প্রসেস করে দ্রুততম সময়ের ভিতর ভাজি করে আমার পরিবেশন করলেন। আমরা সবাই তাজা ইলিশ মাছের ভাজি উপভোগ করে তৃপ্ত হলাম। এভাবেই বাবা সব সময়ই আমাদের নুতন নুতন চমক দিতেন। ১৯৭৫ সাল আমার সবচেয়ে ছোট ভাই রাজার জন্মের সময় ঘনিয়ে এলো। মাকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে।মাকে হাসপাতালে রেখে এলে আমাদের কে খাওয়াবে? ভাগ্যক্রমে বাবা একটা কাজের বুয়া ঠিক করলেন।নাম জরিনা। পাবনায় বাড়ী।ঘন ঘন পান খেতো। আর রসিয়ে রসিয়ে গল্প গুজব করতো।

খুব আমুদে টাইপের মেয়ে ছিলো। অল্প দিনের ভিতর আমাদের আপন করে নিলো।সে আমাদের পরিবারের সদশ্যের মতোই আপন হয়ে গেলো।আদর যত্নের কোন অভাবই রাখতো না।এতো ভাল মানুষ আমি জীবনে খুজে পাইনি বা দেখিনি।আমরা খালা বলে ডাকতাম।জরিনা খালা ভিষণ বিশ্বস্ত ছিলো। মাকে বাবা রাজশাহী মিশন হাসপাতালে ভর্তি করে দিলেন।সুনির্দিষ্ট সময় ব্যাতিত হাসপাতালে দেখা করা যেতোনা।বিকালে বাবা অফিস থেকে এসেই মায়ের খাবার নিয়ে আমাদের সাথে করে নিয়ে মাকে দেখার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতেন।মাকে হাসপাতালে রেখে আমারা ভাইবোন খুব অসহায়ের মতো হয়ে গিয়েছিলাম।অবশ্য জরিনা খালা আমাদেরকে সে কস্ট বুজতে দিতোনা।

মা সাত দিনের মতো হাসপাতালে ছিলেন।এর মাঝে আমাদের আরেক ছোট ভাইয়ের জন্ম হলো। হাসপাতালে গিয়ে দোলনায় থাকা ভাইকে আমারা পালাক্রমে চুমো দিতাম,কোলে নিতাম।আমারা সবাই খুশি।বাবাকে বলতাম ভাইকে ও মাকে নিয়ে তাড়াতাড়ি বাসায় নিয়ে যেতে। বাসায় আনার পর স্কুল থেকে ফিরেই সবাই ছোট ভাইকে নিয়ে ব্যাস্ত।একজনের কোল থেকে আরেকজনের কোলে দেয়া নেয়া হতো। খাবার সময় হলে কান্নাকাটি করলেই মার কাছে হস্তান্তর করে দিতাম।এভাবেই মজা করে দিন কাটতে লাগলো। আকস্মিক দাদী অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসার জন্য রাজশাহীতে আসেন।

দীর্ঘদিন ধরে দাদীর চিকিৎসা চালাতে হলো বাবাকে।এরপর অসুস্থ হলো বড় আব্বা,তারপর আমার বড় আব্বার মেয়ে কোহিনূর আপা।তাদের চিকিৎসা, অপারেশন, ঔষধ ইত্যাদিতে বাবার অনেক অনেক অর্থ ব্যয় হলো। লোন হয়ে গেলো অনেক টাকার। চিকিৎসা শেষে সবাই ফিরে চলে গেলেন।লোন পরিশোধ করার জন্য বাবা এবং মায়ের যৌথ টাকায় কেনা ঢাকা ফতুল্লা থানা এলাকায় আমারদের ৮ কাঠা জমি বিক্রি করে দিতে হলো। জমি বিক্রি করায় মায়ের মন ভিষণ খারাপ হয়ে গিয়েছিল।

কি আর করার লোন তো পরিশোধ করতে হবে! এরপর থেকে বাবা যতদিন জীবিত ছিলেন আমাদের আর বাড়ী করার জায়গা কেনা হলো না।মা প্রায়ই বাবাকে মাথা গোজার মত একটি জায়গা কিনে বাড়ী করার জন্য পরামর্শ দিতেন।বাবা বলতেন ব্যাংকে চাকুরী করে সৎ জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে জায়গা কিনে বাড়ী করা অসম্ভব। বাড়ীর কথা ভুলে যাও।ছেলেমেয়ে মানুষ হলেই হলো। ওরা নিজেদের জায়গা নিজেরা করে নিবে।আর জায়গা জমি থাকলে আমাদের অনুপস্থিতিতে জায়গা জমি নিয়ে ভাইবোনের ভিতর সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যাবে।এভাবেই বাবা মাকে শান্তনা দিতেন। কিছুদিন পর বাবার বদলী হলো সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি উপজেলার রুপালী ব্যাংক এর ম্যানেজার হিসেবে। (চলবে)

মোঃ মোস্তফা হারুন বরেন্দী, সিনিঃ সহকারী পুলিশ সুপার

“কাহিনীটি মোঃ মোস্তফা হারুনের ফেসবুক ওয়াল থেকে নেয়া”.

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST