খবর২৪ঘণ্টা ডেস্ক: বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৬তম সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল আজিজ আহমেদ। ১৮ জুন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দিক স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ কথা জানানো হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সেনা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তার সেনাজীবন সফল। সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় এবার তিনি সেনাবাহিনীর যাবতীয় উন্নয়নে স্বাক্ষর রাখবেন।
সেনাবাহিনীতে লেফটেন্যান্ট জেনারেল আজিজ আহমেদ একজন দক্ষ ও কর্মকৌশলী ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। বিভিন্ন সময় তিনি তার বিভিন্ন সফলতা অর্জনে প্রশংসিত হয়েছেন। লেফটেন্যান্ট জেনারেল আজিজ আহমেদ সকল গুণ ও দক্ষতার নিরিখে উত্তীর্ণ একজন চৌকষ সামরিক অফিসার।
তার সময়ে বিজিবি কল্যাণ ট্রাস্টের অধীনে সীমান্ত ব্যাংকের যাত্রা শুরু হয়েছিলো।
২০১৬ সালের নভেম্বরে বিজিবির মহাপরিচালক থেকে পদোন্নতি পেয়ে লেফটেন্যান্ট জেনারেল আজিজ আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ডের জিওসি হন। চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি তাকে কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল (কিউএমজি) হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।
অষ্টম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি কোর্স শেষে ১৯৮৩ সালের ১০ জুন সেনাবাহিনীর আর্টিলারি কোরে কমিশনপ্রাপ্ত হন। তার বেসিক কোর্সের অফিসারগণের মধ্যে তিনিই ছিলেন সবচেয়ে মেধাবী ও পরিশ্রমী। ফলে সামরিক জীবনের শুরুতেই তিনি তার বেসিক কোর্সে প্রথম স্থান অধিকার করে নিজেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রথম সারির একজন অফিসার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন।
এছাড়া বেসিক কোর্সে ভালো ফলাফল অর্জনের কারণে তাকে তৎকালীন পার্বত্য চট্টগ্রামে কাউন্টার ইন্সার্জেন্সি অপারেশনে নিয়োজিত আর্টিলারি ব্রিগেডের জিএসও-৩ (অপারেশন) দায়িত্বে নিয়োগ প্রদান করা হয়। শুধুমাত্র বেসিক কোর্সেই নয়, পরবর্তীতে তার কর্তৃক সম্পন্ন করা সকল কোর্সেই তিনি উচ্চমানের ফলাফল অর্জন করেন। এই কোর্স সমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর স্কুল অব মিলিটারি ইন্টেলিজেন্স (এস এম আই) তে অনুষ্ঠিত বেসিক ইন্টেলিজেন্স কোর্স এবং মিলিটারি সাইন্স কোর্স। বেসিক ইন্টেলিজেন্স কোর্সে এবং মিলিটারি সাইন্স কোর্সে তিনি দ্বিতীয় স্থান অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল আজিজ ১৯৮৯-১৯৯০ সালে আর্টিলারি সেন্টার ও স্কুল, হালিশহর, চট্টগ্রাম হতে অফিসার্স গানারী স্টাফ কোর্স করার পর তাকে ১৯৯২-১৯৯৩ সালে ভারতের স্কুল অফ আর্টিলারি, দেওলালীতে প্রেরণ করা হয় ‘লং গানারী স্টাফ কোর্স (ফিল্ড)’ করার জন্যে। উক্ত কোর্সে তিনি অসাধারণ ফলাফল অর্জন করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি বিদেশে উজ্জ্বল করেন। অতঃপর তিনি মিরপুর ডিফেন্স সার্ভিস কমান্ড এন্ড স্টাফ কলেজ থেকে ১৯৯৪-১৯৯৫ সালে সাফল্যের সঙ্গে আর্মি ষ্টাফ কোর্স-১৯ সম্পন্ন করেন।
তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে জিএসও-৩ (অপারেশন), পদাতিক ব্রিগেডের ব্রিগেড মেজর, সেনাসদর প্রশিক্ষণ পরিদফতরের গ্রেড-২ এবং সেনাসদর, বেতন ও ভাতা পরিদফতরের গ্রেড-১ স্টাফ অফিসারের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেছেন।
একটি আর্টিলারি ইউনিট, একটি বিজিবি ব্যাটালিয়ন, বিজিবির একটি সেক্টর, স্বতন্ত্র এয়ার ডিফেন্স আর্টিলারি ব্রিগেডসহ মোট দুটি আর্টিলারি ব্রিগেড এবং একটি পদাতিক ডিভিশন দক্ষতার সঙ্গে কমান্ড করেন তিনি।
তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের অধীনে ১৯৯৫-১৯৯৬ সালে ইরাক-কুয়েত এ সামরিক পর্যবেক্ষক এবং ২০০৫-২০০৬ সালে সুদানে জাতিসংঘ মিশনে ফোর্স কমান্ডার এর সামরিক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এছাড়াও তিনি আর্টিলারি সেন্টার এন্ড স্কুলে এবং স্কুল অফ মিলিটারি ইন্টেলিজেন্সতে (এসএমআই) প্রশিক্ষক হিসেবে স্বগৌরবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ