নিজস্ব প্রতিবেদক :
নগরভবনে কোনো দলবাজি চলবে না বলে মন্তব্য করেছেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র (রাসিক) ও মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। রাসিকের সাবেক ও বতর্মান কাউন্সিলর এবং কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের উপশহরস্থ বাসভবনের পাশে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, দুটি জিনিস আপনাদের কাছ থেকে আমি চেয়ে নিবো। একটি হলো বাংলাদেশ সৃষ্টিই হয়েছে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে। তিনি শুধু আওয়ামী লীগের নেতা ছিলেন না, তিনি অবিসংবাদী নেতা, হাজার বছরের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি। সেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যাপারে আশা করছি কারো মধ্যে কোনো দ্বিধা থাকবে না, থাকা উচিতও না। আর একটি হলো উন্নয়নের প্রশ্নে নগরভবনে কোনো দলবাজি করতে দেয়া হবে না। এটি আমি এরআগেও বলেছি, এখনো বলছি। আর বিএনপি সমর্থক কাউন্সিলর বলে তাকে প্রজেক্ট দেয়া হবে না, সেটি হবে না। বিএনপির কাউন্সিলরও প্রজেক্ট পাবেন। যার যে ওয়ার্ডে যে উন্নয়ন দেওয়া প্রয়োজন, তাই দেয়া হবে। উন্নয়নের স্বার্থে এখানে দলমত বিচার করা হবে না।
জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান হেনার সন্তান মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আপনারা সবাই রাজনীতি বিষয়টি গেটের বাইরে রেখে নগরভবনে প্রবেশ করবেন। আবার নগরভবন থেকে বের হয়ে রাজনীতির কথা বলবেন-এতে আমার কোনো উপত্তি থাকবে না। কিন্তু নগরভবনে কোনো রাজনীতির কথা, দলবাজি হবে না। নগরভবনের দাপ্তরিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে আমাদের কাজ করতে হবে। কাউন্সিলরবৃন্দকে আমরা টিম করে দিবো, তারা মানসম্মতভাবে উন্নয়নমূলক কাজগুলো করবেন।
মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, গত পাঁচ বছর রাজশাহীতে কোনো জায়গায় কাজ হয়নি। রাস্তা-ঘাটের কাজ হয়নি। আমার রেখে আসা প্রকল্পগুলো আলোর মুখ দেখেনি। থেমে থাকা এসব প্রকল্প সচলসহ ব্যাপক উন্নয়ন করা হবে।
মেয়র লিটন আরো বলেন, মেয়রের কাজ নয়, এমনও অনেক কাজ আমি করবো। যেমন রাজশাহী থেকে ঢাকা বিরতীহীন ট্রেন চালু করা। এ ব্যাপারে এর মধ্যেই রেলমন্ত্রীর সঙ্গে কথা চূড়ান্ত হয়েছে। তিনি আমাকে ডিও লেটার দিতে বলেছেন। তিনি বলেছেন, নতুন কোচ, নতুন ইঞ্জিন আসলে রাজশাহী-ঢাকা রুটে বিরতীহীন ট্রেন চাল করে দিবেন। এছাড়া আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরে রাজশাহী থেকে কলকাতা সরাসরি ট্রেন চলাচল বাস্তবায়ন করা হবে। এইভাবেই অনেক কাজ করবো, যেগুলো আমাদের না। কিন্তু রাজশাহীর সন্তান হিসেবে কাজগুলো আমাদের করতে হবে।
রাজশাহীর উন্নয়নের রুপকার মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বাংলাদেশের মধ্যে রাজশাহী ইতোমধ্যে একটা ভালো স্থান পেয়েছে। সুন্দর শহর, আলোয় ঝলমলে শহর,পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ঝকঝকে-তকতকে সবুজ শহর, স্বাস্থ্যসেবার শহর, সবই করে রেখে এসেছিলাম। কিন্তু গত ৫ বছরে সবই প্রায় নষ্টের পথে। বিবর্ণ শহর, ভাঙাচোরা রাস্তাঘাট-এই অবস্থায় তো আমি রেখে এসেছিলাম না। এখন আগামী ৫ বছরে ১৫ বছরের কাজ করতে হবে। এটি করতে আমি রাজি আছি। এজন্য সবার সহযোগিতা চাই।সিটি কর্পোরেশনের রাজস্ব বাড়ানো হবে জানিয়ে মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, এখন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের বার্ষিক আয় প্রায় ৫০ কোটি। এতো পুরাতন একটি সিটি কর্পোরেশনের বার্ষিক আয় এতো কম, তা হতে পারে না। আমাদের দক্ষ কাউন্সিলর ও কর্মকর্তারা আছেন, তারা খুঁেজ বের করবেন কীভাবে সিটি কর্পোরেশনের আয় বাড়ানো হবে। আগামী ৫ বছর পর যখন আমি দায়িত্ব ছাড়াবো, তখন সিটি কর্পোরেশনের বার্ষিক আয়ের টার্গেট হবে ২০০ কোটি টাকা।কাউন্সিলর শরিফুল ইসলাম বাবুর সঞ্চালনায় সভায় আরো বক্তব্য দেন রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের পত্নী ও মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহীন আকতার রেনী, রাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মোমিন, কাউন্সিলর আব্দুল হামিদ সরকার টেকন, মাহাতাব চৌধুরী প্রমুখ। সভা শেষে মধ্যহ্নভোজে অংশ নেন সিটি কর্পোরেশনের সাবেক ও বর্তমান কাউন্সিলরবৃন্দ ও কর্মকর্তারা।
খবর২৪ ঘণ্টা/এমকে