বিশেষ প্রতিনিধি: রাজশাহীর নওহাটা পৌরসভার উপ-সহকারী প্রকৌশলী তৌফিক হাসান ও জমি কেনাবেচার সুবাদে তার পরিচয় হওয়া বায়ার পালপাড়া এলাকার এক নারীকে আটকের পর থানা বা ডিবি কার্যালয়ে না নিয়ে এসে ঘুষের বিনিময়ে ছেড়ে দেয়া সেই নগর ডিবির পরিদর্শক খাইরুল ইসলাম ও জেলা পুলিশের সদর সার্কেলের এসআই তৌহিদুল ইসলাম এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছে। শুধু দুই পুলিশ কর্মকতায় নয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি সরকারী চাকুরীজীবী হয়েও ল্যান্ডের ব্যবসা করা উপ-সহকারী প্রকৌশলী তৌফিক হাসানেরও। তারা সবাই এখানো নিজ নিজ অবস্থানে বহাল তবিয়তে রয়েছে। ওই নারীও আগের মতো অবস্থানে রয়েছে।
তবে নগর পুলিশের পক্ষ থেকে ডিবির পরিদর্শক খাইরুল ইসলামের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে বলে পুলিশের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। এছাড়াও ডিবির পরিদর্শক খাইরুল ইসলাম
খবর ২৪ ঘণ্টার কাছে এ বিষয়টি স্বীকারও করেন। ঘটনার কথা স্বীকার করে খবর ২৪ ঘন্টাকে বলেছিলেন, তিনি জেনে হোক না জেনে হোক ভুল করেছেন। তিনি আরো বলেন, আমার কাছে কৈফিয়ত তলব করা হয়েছিল। আমি লিখিত জবাব দিয়েছি।
এ সংক্রান্ত অডিও ক্লিপ খবর ২৪ ঘণ্টার কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।
এদিকে, খবর ২৪ ঘণ্টায় সংবাদ প্রকাশ করার পর থেকে প্রকাশিত সংবাদটি সাইট থেকে প্রত্যাহার করা ও ভবিষ্যতে এ ঘটনা নিয়ে সংবাদ না করার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে তদবির করা হয়েছে। শুধু তাই পুলিশ পরিদর্শক খাইরুল ইসলাম ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক নেতাকে দিয়েও সংবাদ না করার জন্য তদবির করিয়েছেন। শুধু তিনি নন, ওই নারী খবর ২৪ ঘণ্টার অফিসে গিয়ে আর সংবাদ না করার জন্য অনুরোধ করেন। অনুরোধে কাজ না হলে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা দেয়ারও হুমকি দেন। তাদের খবর ২৪ ঘণ্টা কার্যালয়ে গিয়ে অনুরোধ করা ও সংবাদ না করার জন্য তদবির করারও তথ্য ও প্রমাণ খবর ২৪ ঘণ্টার কাছে রয়েছে।
এ বিষয়ে আরএমপির মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি জানেন না বলে জানান। তবে এর আগে উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি) আবু আহাম্মদ আল মামুন এ বিষয় নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। তদন্তকারী কর্মকর্তা ও উপ-কমিশনার সিটিএসবি এএফএম আঞ্জুমান কালাম বিপিএম (বার) এ বিষয়ে মন্তব্য
করতে চাননি। রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর ইফতে খায়ের আলম বলেছিলেন, বিষয়টি আমাদের জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার আবু আহম্মদ আল মামুনকে খবর ২৪ ঘণ্টার পক্ষ থেকে ফোন দেয়া হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এর আগে তিনি এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে রাজি হননি। খবর ২৪ ঘণ্টার পক্ষ থেকে ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-কমিশনার (সিটিএসবি) এ, এফ, এম আঞ্জুমান কালাম বিপিএম বার এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারবোনা। কিছু জানার থাকলে মুখপাত্রের কাছ থেকে জানতে হবে। তিনি কথা বলবেন আরএমপির পক্ষ থেকে।
উল্লেখ্য, জমি কেনার সুবাদে এক নারীর সাথে পরিচয় হয় তৌফিক হাসানোর। সেই সূত্র ধরে তাদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠে। কিছুদিনের মধ্যেই তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়। সেই সম্পর্কের জের ধরে চলতি মাসের গত ১৩ তারিখ সন্ধ্যায় নওহাটা পৌরসভার উপ-সহকারী প্রকৌশলী তৌফিক হাসান এয়ারপোর্ট থানাধীন বায়া পালপাড়া এলাকার ওই নারীর বাড়িতে যায়। তৌফিক হাসানের কাছে পুলিশ ৫ লাখ টাকা দাবি করে। এরমধ্যে নগদ ২ লাখ ৯৫ হাজার টাকা ও চেকের মাধ্যমে ২ লাখ টাকা পরিশোধের কথা হয়। পুলিশ তৌফিকের কাছ থেকে নগদ ২ লাখ ৯৫ হাজার টাকা পাওয়ার পরে তৌফিক ও ওই নারীকে ছেড়ে দেয়।
এস/কে