আজহারুল ইসলাম বুলবুল: রাজশাহীর দূর্গাপুরে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে পুকুর খননকারী চক্রের অন্যতম হোতা শফিকুল ইসলাম ফসলি জমিতে অবৈধ পুকুর খননে মেতে উঠেছেন। দিনে- রাতে সমানতালে কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে অলৌকিক ক্ষমতাবলে। এ চক্রের হোতা শফিকুল ও আলাউদ্দিন নামের ব্যাক্তিকে সঙ্গে নিয়ে উপজেলার আলীপুর গ্রামের মধ্যবিলে প্রায় ৬০ বিঘা জমিতে অবৈধভাবে পুকুর খনন চালিয়েছে নির্বিঘ্নে।
এছাড়াও তার নেতৃত্বে ভেকু মেশিন দিয়ে আঙার বিল, শ্রীপুর বিলে, নওপাড়া বিলে পুকুর খনন চালিয়েছেন ক্ষমতার দাপটে। তার খুঁটির জোর নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে জনমনে। প্রকাশ্যে দিবালোকে শফিকুল এমন অপকর্ম করলেও রহস্যজনক কারণে প্রশাসন নিরব ভুমিকা পালন করছে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ উপজেলায় নামমাত্র কিছু অভিযান চালালেও শফিকুলের মত প্রভাবশালীরা থেকে যাচ্ছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।
এসব হোতারা অবাধে পুকুর খননে কৃষির জমির ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছেন প্রশাসন যেন কিছুই দেখছে না। আরো অভিযোগ উঠেছে তিনি নাকি স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনের সাথে যোগসাজশ করে দেদারসে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পরিবেশ রক্ষাকারী গাছপালা ধ্বংস করে অবৈধ পুকুর খননসহ বিভিন্ন ব্যাক্তির কাছে মাটি বিক্রি করেছেন ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে। স্থানীয়দের অভিযোগ, গত কিছুদিন আগে অবৈধ পুকুর খনন করছে এমন সংবাদের ভিক্তিতে দূর্গাপুর থানা পুলিশ শফিকুলের ওই পুগকুরের খনন কাজে ব্যবহৃত ভেকু মেশিন অকেজো করেন।
কিন্তু কয়েকদিন বন্ধ থাকা শফিকুলের ওই পুকুর অলৌকিক ক্ষমতা বলে দুইটি ভেকু মেশিন দিয়ে খনন কাজ চালিয়েছে। প্রশাসনের এমন নিরব ভুমিকা দেখে মনে হয়েছে পুকুর খননকারী চক্রের হোতা শফিকুলের কাছে প্রশাসন জিম্মি হয়ে পড়েছেন। স্থানীয়রা আরো জানান , দূর্গাপুর উপজেলায় পুকুর খননকারী চক্রের অন্যতম হোতা শফিকুল সরকার দলীয় অনেক নেতা ও এমনকি স্থানীয় সংসদ সদস্য (এমপির) নামও ভাঙ্গাচ্ছিয়েছে বিভিন্ন স্থানে ।
তার চালচলন দেখলে মনে হয় কেন্দ্রীয় পর্যায়ের অনেক বড়বড় নেতারা তার হাতে। ভেকু মেশিন দিয়ে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে অনেক কৃষককে ভয়ভীতি দেখিয়ে সে উপজেলা জুড়ে চালিয়েছেন অবৈধ পুকুর খননের মহোৎসব । সরেজমিনে দেখা গেছে, জাতীয় ভূমি ব্যবহার নীতিমালা ২০০১ উপেক্ষা করে আলীপুর মধ্যবিলে প্রভাবশালী জাহাঙ্গীরসহ আরো অনেকেই ফসলি ধ্বংস করে অবৈধভাবে পুকুর খনন কাজ ইতিমধ্যেই শেষ করেছেন । অপরিকল্পিত অবৈধ পুকুর খননের কারনে গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে বিলের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় পানবরজ সহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হতে হয়েছে।
এবার আলীপুর মধ্যবিলে শফিকুলের অবৈধ পুকুর খনন প্রশাসন বন্ধসহ ব্যবস্থা না নিলে উপরিভাগের পানবরজসহ ফসলের জমিগুলো পানিতে প্লাবিত হবে এমনটাই আশঙ্কা করছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা। পাশাপাশি দূর্গাপুরে অবৈধ পুকুর খননের অন্যতম হোতা শফিকুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান এলাকার বিপদগামী কৃষকরা। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শফিকুল ইসলাম বলেন, আমার খুঁটির কোন জোর নাই। আমি কারো নাম ভাঙ্গিয়ে চলিনা।
আপনি লাইনে থাকেন আমি ইউএনও কে এখনি ফোন দিচ্ছি। এব্যাপারে দূর্গাপুর থানার ওসি খুরসিদা বানু কনা জানান, অবৈধ পুকুর খননের বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ফসলি জমিতে অবৈধ পুকুর খনন প্রসঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলতে চাইলে দূর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মহসীন মৃধাকে পাওয়া যায়নি।
জেএন