নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জেনারেটর থাকলেও বাস্তবে মিলছে না তার ব্যবহার। হাসপাতলে জেনারেটরের ব্যবহার না করায় ভোগান্তির শিকারও হচ্ছে রোগীরা। এতে ভেঙ্গে পড়েছে চিকিৎসা সেবার মান। তাছাড়া সরকারের কয়েক লক্ষাধিক টাকা মূল্যের জেনারেটর ব্যবহার না হওয়ায় পড়ে থেকে হচ্ছে নষ্ট হতে বসেছে। চিকিৎসা সেবার কোন কাজেই আসছেনা জেনারেটরটি। এমনই অভিযোগ তুলেছেন চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা।
তবে হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, দুুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছোট ও বড় দুইটি জেনারেটর রয়েছে। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার মান বৃদ্ধির জন্য জেনারেটর বরাদ্ধ রয়েছে। বিদ্যুৎ চলে গেলে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার কাজে নিয়মিত জেনারেটর চালানো হয়। কিন্তু সরজমিনে হাসপাতাল ঘুরে তার উল্টো চিত্র দেখা যায়। গত ২৭জুন দুপুরে দুর্গাপুর হাসপাতাল সহ সদর এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না। কিন্তু হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে প্রায় শতাধিক রোগী বিদ্যুৎ এর জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকেন। তারপরেও বিদ্যুৎ এর জন্য চিকিৎসা সেবা পায়না ভুক্তভোগীরা। চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীদের গুনতে হয় বিদ্যুৎ এর জন্য অপেক্ষার প্রহর। চিকিৎসা নিতে আসা এসব রোগির বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা লিখে দিয়েছেন চিকিৎসকরা। কিছু রোগীর দ্রুত পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রয়োজন হলেও বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে সেটি সম্ভব হয়ে ওঠে না। এছাড়া দেখা যায়, বিদ্যুৎ এর কারনে চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে চিকিৎসকেরা বসে আছেন। এমনকি বন্ধ করে চলে গেছেন হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত সংশ্লিষ্টরা।
দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পরে রোগীরা বার বার প্যাথলজি বিভাগে পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য ভীড় জমাচ্ছে। বিদ্যুৎ এর কারনে হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগ সহ সকল চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে বসে আছেন। তবুও হাসপাতালের কয়েক লক্ষ টাকা মূল্যের জেনারেটর পড়ে থেকে নষ্ট হতে বসেছে। কোন কাজেই আসছে না এটি। কিন্তু সরকারের বরাদ্ধকৃত জেনারেটরের ব্যয় বন্ধ নেই প্রতিনিয়ত হাসপাতালের ব্যয় রেজিস্টারে তেলের মেমো জমা হচ্ছে। তবে জেনারেটরের সেবা রোগীরা না পেলেও হাসপাতালের কর্তাদের পকেটের সেবা দিয়ে যাচ্ছে জেনারেটর।
হাসপাতালে ভর্তি রোগী রাকিবুল ইসলাম জানান, গত শুক্রবার শারীরিক সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। তারপরে ডাক্তার চিকিৎসা দিতে আসলে আমাকে পরীক্ষা দেন। ওই পরীক্ষার দ্রুত করে ডাক্তারকে দেখাতে বলেন। কিন্তু হাসপাতালের প্যাথলজিতে গেলে বিদ্যুৎ না থাকায় অপেক্ষা করতে হয়। যার ফলে সঠিক সময় ডাক্তার চিকিৎসা দিতে পারলেন না। আমাকে আবার ডাক্তারের জন্য অপেক্ষা করতে হলো। কিন্তু আমি অনেক বার হাসপাতালের জেনারেটর চালু করতে বললেও কোন লাভ হয়নি।
চিকিৎসা নিতে আসা উপজেলার সাবাজপুরের কামরুল ইসলাম জানান, হাসপাতালে চিকিৎসার চেয়ে দূর্নীতি বেশি। আমি শুনেছি সরকারি হাসপাতালে জেনারেটর আছে। কিন্তু কোন সেবা নেই। আমার পরীক্ষার জন্য গেলে বিদ্যুৎ নেই বলে ফিরিয়ে দেন। আমি সেই পরীক্ষা হাসপাতালের বাহিরের একটি ক্লিনিক থেকে করে নিলাম। সে কারনে খরচ হলো অনেক বেশী। মহিলা ওয়ার্ডে রোগী সাথী আক্তার জানান, দুই দিন থেকে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছি। দিনে রাতে মিলে বেশ ভালই বিদ্যুৎ লোডশেডিং হয়। কোন সময় জেনারেটর চালাতে দেখিনি। তবে রাতের বেলা হাসপাতালে ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকেনা। ওই সময় যেমন মশার কামড় তেমনি গরমে অস্থির হয়ে পড়তে হয়। অনেক সময় খাবার না খেয়ে ঘুমিয়ে যেতে হয়। দূর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আসাদুজ্জামান বলেন, দিনের বেলাতে হাসপাতালে জেনারেটরের তেমন একটা প্রয়োজন হয় না । তবে আমি রাতে হাসপাতালে থাকিনা যার ফলে আমি রাতের বিষয়টি বলতে পারবো না। রাতে বিদ্যুতের লোডশের্ডি হয় কিনা জানিনা। তবে যদি রাতে লোডশেডিং হলেও জেনারেটরের টেকনিশিয়ান না থাকার কারনে জেনারেটর চালু হয় না। তবে বিষয়টি আমি গুরুত্বের সাথে দেখবো জেনারেটর চালু কিভাবে করা যায়।খবর২৪ঘন্টা /এবি