দুর্গাপুর প্রতিনিধি : দুর্গাপুর নওপাড়া মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। সাম্প্রতিক তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন শফিকুল আলম। এছাড়াও ওই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ পড়েছে বিভিন্ন দপ্তরে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, নওপাড়া মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৫ সালে। এলাকার মানুষের জমি দান ও আর্থিক সহযোগিতায় গড়ে উঠে ওই প্রতিষ্ঠানটি। তৎকালিন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় বাগমারা উপজেলার ভবানীগঞ্জ ডিগ্রী কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক বেলাল হোসেন শাহ’কে। এর পরে তার অধিনে জমিদাতাদের পরিবারের সদস্যদের পিয়ন,অফিস সহকারি ও বিভিন্ন পদে জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়। দেওয়া হয় তাদের যোগদান পত্র। সেই মোতাবেক তাঁরা দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এরপর ২০০১ সালে অধ্যক্ষ হোসেন আলী শাহ নিয়োম বহির্ভুতভাবে এইচএসসি ও বি-এ তৃতীয় ও মাষ্টার্স দ্বিতীয় শ্রেণীর সনদ নিয়ে বাংলায় প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন।
যোগদানের ৬ মাসের মাথায় তিনি সরাসরি হয়ে যান অধ্যক্ষ। এরপর তিনি কোন প্রকার বিজ্ঞপ্তি ও নির্বাচন ছাড়াই গড়ে তুলেন তার ঘরের লোকজন দিয়ে কলেজ পরিচালনার পকেট কমিটি। নেমে পড়েন নিয়োগ প্রাপ্তদের ছাঁটাই অভিযানে। এক সাথে কলেজ থেকে ছাঁটাই করা হয় বিভিন্ন পদের ১২ জন কর্মচারিকে। রক্ষা পায়নি প্রতিষ্ঠানে জমি দানকারি শফিকুল আলমের ভাইসহ অনেকে। তাঁরপর শুরু করেন নিয়োগ বানিজ্য। সেই সময় তিনি সভাপতির জোকসসাজে নিয়োগ বানিজ্য করে প্রায় ১৫-২০ লাখ টাকা লুটে নেন। এদিকে তাঁর অধ্যক্ষ নিয়োগের উপরে ২০০১ সালে সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন চাকরীচ্যুত পরিবারের সদস্য ও কর্মচারিরা। সেই মামলায় আদালত অধ্যক্ষের নিয়োগ ও যোগদানকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় প্রদান করেন। এরপর জজ কোর্টে আপিল করেন অধ্যক্ষ হোসেন আলী শাহ। সেই কোর্টেও একই রায় বহাল রাখেন আদালত। তার পরে হাই কোর্টে রিভিসান করেন। মহামান্য হাইকোর্ট পূর্বের রায় বহাল রেখে মামলা খারিজ করে দেন। বর্তমানে সেই মামলা চলমান রয়েছে। এরপরেও তিনি অধ্যক্ষের পদ বহাল তবিয়তে ধরে রেখেছেন।
এমনকি তাঁর পদ ধরে রাখতে ২০০১ সাল থেকে এই পর্যন্ত একেরপর এক তাঁর লোকজন দিয়ে গোপনে পছন্দমত সভাপতি বানিয়ে গভর্নিং বডি গঠন করে আসছেন। বিগত কমিটি গুলোতে তাঁর আপন ভাই ও বোন জামাতাকে সভাপতি করে কমিটি গঠন করেছেন ওই অধ্যক্ষ। ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি ওই প্রতিষ্ঠানে গভর্নিং বডি গঠনকে কেন্দ্র করে অধ্যক্ষের অফিস কক্ষে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভের ঘটনাও ঘটেছিলো। এছাড়াও অধ্যক্ষ হোসেন আলী শাহ’র বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই। তিনি শুরু থেকে এই পর্যন্ত নিয়োগ বানিজ্য,প্রতিষ্ঠানের আমবাগান টেন্ডার, পুকুর লিজ ও অবকাঠামো উন্নয়নসহ বিভিন্ন খাত হতে লক্ষ-লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে আসছেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। ওই প্রতিষ্ঠানের চাকরীচ্যুত মনোয়ার হোসেন, ওসমান আলী,সাইফুল ইসলাম,আবুল কালাম আদাজ ও আকবর আলী জানান, অধক্ষ্য হোসেন আলী শাহ তথকালিন সময় ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাঁদের চাকরীচ্যুত করেছেন। এমনকি তাঁর পাতানো কমিটি গঠনের মাধ্যমে নতুন করে লোকবল নিয়োগ করেছেন।
সেখান থেকে তিনি হাতিয়ে নিয়েছেন প্রায় ২৫ লাখ টাকা। এছাড়াও তিনি প্রতিষ্ঠানের লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে আসছেন। এমনকি তিনি যোগ্যতাসম্পন্ন না হওয়া সত্তে¡ও বহাল তবিয়তে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালনও করে আসছেন।
এবিষয়ে নওপাড়া মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ হোসেন আলী শাহ, বলেন আমি যোগ্যতার ভিত্তিতেই অধ্যক্ষ হয়েছি। এই পর্যন্ত আমার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ পড়েছে। বর্তমানে আমার বিরুদ্ধে করা মামলা বিরাচাধীন রয়েছে। আমি কোন প্রকার অনিয়ম করিনি। যথা নিয়মেই কলেজ পরিচালনা করে আসছি।
জে এন
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।