রাজশাহী দুর্গাপুর কাঁঠালবাড়ীয়া শহীদ আবুল কাশেম স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাৎ,অনিয়ম,দুর্নীতি ও শিক্ষক-কর্মচারীদের সাথে স্বেচ্ছাচারিতা ও অমানবিক আচরণসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ৫২ জন শিক্ষক-কর্মচারী। একই সাথে গভর্নি বডির সদস্যরাও ওই অধ্যক্ষর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন। গতকাল মঙ্গলবার গভর্নিং বডির সভায় স্কুল ও কলেজটি নামে বিভিন্ন অনিয়ম করে টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ পাওয়া গেলে এনিয়ে শিক্ষক ও গভর্নিং বডির সদস্যদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তপুর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে কলেজ চত্বরে প্রতিবাদ করেন তাঁরা।
জানা গেছে, গত ২২ জুন ২০১৯ সালে কাঁঠালবাড়ীয়া শহীদ আবুল কাশেম স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন আমিনুল ইসলাম। যোগদানের পর থেকেই তিনি নিয়ম বহির্ভূতভাবে একের পর এক করে যেতে থাকেন অনিয়ম আর দুর্নীতি। সেই সাথে প্রতিষ্ঠানের কর্মরত সকল শিক্ষক কর্মচারীদের সাথে করতে থাকেন স্বেচ্ছাচারিতা ও অমানবিক আচরণ। এমন অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতামুলক আচরণের অভিযোগ তুলে ওই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের ৪৪জন শিক্ষক-কর্মচারীরাদের স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগপত্র উপজেলা মাধ্যমিক অফিস,ইউএনও অফিস, জেলা শিক্ষা অফিস, উপপরিচালক মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রাজশাহী আঞ্চল, চেয়ারম্যান/সচিব মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড বরাবর প্রদান করেন। অভিযোগে উঠেছে অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম নিজের ব্যাক্তিগত কাজেও করেছেন একাধিক টাকার বিল ভাউচার। তিনি গত এক বছরে খরচ করেছেন ২লাখ ২৩৮ টাকা। তিনি প্রকৌশল
অধিদপ্তরে গিয়েছেন ২০ দিন যার বিল করেছেন ৪৩ হাজার ৬১০ টাকা, এমপির বাড়িতে গিয়েছেন ৪৮ দিন, আবিল করেছেন ২৪ হাজার ৬৪০ টাকা, ডিসি অফিসে গিয়েছেন ২১ দিন, বিল করেছেন ১৩ হাজার ৫৬০ টাকা, বোর্ড অফিসে গিয়েছেন ৩৭ দিন, বিল করেছেন ১৭হাজার ৪২০টাকা, ডিও অফিসে গিয়েছেন ৯ দিন, বিল করেছেন ৬হাজার ৫৯০ টাকা, ইউএনও অফিসে গিয়েছেন ১৪ দিন, যার বিল করেছেন ৩হাজার ৯২০ টাকা, তার ব্যাক্তিগত মোবাইল বিলের বলি করেছেন ১৬ হাজার ৫৪৪ টাকা, সমিতি ও অন্যান্য বাবদ বিল করেছেন ১৯ হাজার ৬৫৯ টাকা,গাছ ও টয়লেটবাবদ বিল করেছেন ২হাজার ৪৩৫ টাকা, মাধ্যমিক অফিস বাবদ ১৭ হাজার ৪৮০ টাকা, সভাপতি বাবদ ৩হাজার ৭০০ টাকা, সম্মাননা বাবদ ২০ হাজার ৯০ টাকা, চাঁদা বাবদ ১হাজার ৩৪০ টাকা, ইউনিয়নে খরচ বাবদ ৫৬০ টাকা ও বিটল ভাই ৮ হাজার ৭৫০ টাকা। কাঁঠালবাড়িয়া বাড়িয়া শহীদ আবুল কাশেম স্কুল ও কলেজের শিক্ষক ফরহাদ হোসেন,আব্দুর রকিব, আবুবক্কর সিদ্দিক জানান, অধ্যক্ষ স্যার প্রায় প্রতিটি কাজেই অনিয়ম করে থাকেন। এবিষয়ে তাকে কিছু বলতে গেলেই হুমকির
শিকার হতে হয় প্রতিবাদিদের। একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান তিনি তাঁর আচার আচরণ হবে একজন অভিভাবকেরমত। অথচ তাঁর আচরণে পুরো স্টাফ বিমর্ষ। প্রতিটি শিক্ষক কর্মচারীদের সাথে তিনি খুব খারাপ আচরণ করেন। তাঁরা যে সকল দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তাদের নিকটে তদন্তপুর্বক অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানান। এবিষয়ে অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলামের সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এদিকে এবিষয়ে অত্র প্রতিষ্ঠানে গভর্নি বডির সভাপতি ও ঝালুকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাহার আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম অনিয়ম করেছেন, তিনি সবার কাছে ভুল স্বীকারও করেছেন। আমি সকল সদস্যদের নিয়ে মঙ্গলবার প্রায় ৪ ঘন্টাব্যাপি মিটিং করেছি। সেই মিটিংয়ে অধ্যক্ষ সবার কাছে ভুল স্বীকার করেছেন। আমিও তাদের কাছে ক্ষমা চেয়েছি। আশা করি এ বিষটি অতি দ্রত সমাধান হয়ে যাবে।
এস/আর