দুর্গাপুরে পৌরসভার নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে সংবর্ধনার নামে জনসভা করার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও পুঠিয়া দুর্গাপুরের সংসদ সদস্য প্রফেসর ডাঃ মনসুর কে মঞ্চে উঠতে বাধা দেয়ায় সমর্থকদের সাথে সভাস্থল ত্যাগের ঘটনা ঘটেছে ।
দুর্গাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে
সংবর্ধনার জনসভায় সভাপত্বি করেন উপজেলা চেযারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ নজরুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার বিকেলে দুর্গাপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল।
রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেরাজ মোল্লা ও সাধারন সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ দারা ও জেলা কমিটিকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের নামে জনসভার আয়োজন করা হয়।
নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে একটি জনসভা মঞ্চ তৈরি করে, মাইক এবং সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার করে নৌকার পক্ষে ভোট প্রার্থনা করেন আওয়ামীলীগের নেতারা । কর্মীদেরকে ভোটারদের কাছে যাওয়ার জন্য দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন মঞ্চের নেতারা। আচরনবিধি লঙ্ঘন করে উপজেলা আওয়ামীলীগের এমন আয়োজন পৌরসভার নির্বাচন সুষ্ঠু ও প্রভাবমুক্ত হওয়া নিয়ে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে সংশয় দেখা দিয়েছে।
পাশাপাশি ফলাফল নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন অন্যান্য প্রার্থীরা।
করোনাকালীন সময়ে গণজমায়েতের উপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। মানা হয়নি স্বাস্থ্য বিধিও মুখে ছিলোনা মাস্ক। ছিলোনা সামাজিক দুরত্ব। অপরদিকে, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্য প্রফেসর ডাঃ মোঃ মনসুর রহমান অনুষ্ঠানে যোগ দিতে চাইলে মঞ্চে বাধা দেয়া হয়েছে অভিযোগ করেছেন এমপি সমর্থকরা। পরে মঞ্চের নিচে থেকেই প্রধান অতিথিকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে সভাস্থল ত্যাগ করেন।
তবে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের নামে নির্বাচনী এলাকায় সমাবেশে মঞ্চে প্রার্থীকে দাঁড় করিয়ে নৌকার পক্ষে ভোট চাওয়া আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন করেছেন তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। নির্বাচনের আর মাত্র ৩ দিন বাকী বিধি লঙ্ঘন করে উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাচনী জনসভায় বলে দেয় নির্বাচন কতটুকু প্রভাবমুক্ত হবে বলেছেন বিশিষ্ট জনরা।
জানতে চাইলে মুঠোফোনে রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের সংসদ সদস্য প্রফেসর ডাঃ মোঃ মনসুর রহমান বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা এ ধরনের সংবর্ধণা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন তাকে আগে থেকেই জানানো হয়নি। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও প্রধান অতিথি তাকে থেকে ডেকে নিয়ে আসেন। চারঘাটে নির্বাচনী প্রচারনা শেষে সন্ধ্যায় অনুষ্টানে পৌঁছানোর পরে আমিও অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাই। এসময় মঞ্চে উঠার আগেই সাবেক সাংসদের ছেলে বদরুল ইসলাম তাপস সরাসরি আমার সামনে এসে আমাকে ঘিরে রেখে মঞ্চে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন । কেন্দ্রীয় নেতার সামনে এ ধরনের ঘটনা ঘটানো আমি বিব্রত হই। পরে আমার সমর্থক নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে উঠেছ বিশৃংখলা এড়াতে পরিস্থিতি সামাল দিতে আমি সভাস্থল ত্যাগ করি।
এব্যাপারে, দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, এ ধরনের আয়োজনে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে স্বীকার করেন।
সভায বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, বাগমারা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি জাকিরুল ইসলাম সান্টু, জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি এ্যাডভোকেট ইব্রাহিম আলী, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মানজাল ও দপ্তর সম্পাদক প্রদ্যুৎ কুমার সরকার সহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।
সেইসাথে নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন করে নৌকার প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন সভার সমাপ্তি পর্যন্ত উপস্থিত ছিলেন।
এস/আর