দুর্গাপুর (রাজশাহী) প্রতিবেদক : দূর্গাপূজাকে ঘিরে মণ্ডপগুলোতে এখন শেষ মুহূর্তের কর্মব্যস্ততা। শিল্পীদের তুলির আঁচড়ে দেবী দুর্গা ও অন্যান্য প্রতিমায় প্রাণ সঞ্চারের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। রঙ, অলংকার আর সাজসজ্জায় মণ্ডপজুড়ে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে। দিনক্ষণ ঠিক রেখে আগামী রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) থেকে শুরু হবে এ দূর্গোৎসব। রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলায় এবার একটি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নে মোট ১৮টি মন্ডপে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যেই বিভিন্ন মন্দিরের প্রতিমা তৈরির প্রায় কাজ শেষ। আয়োজকরা জানিয়েছেন, দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে মণ্ডপগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। পাশাপাশি বিদ্যুৎ, আলো ও সাউন্ড সিস্টেমসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে। এই উপজেলায় পূজা উপলক্ষে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।
উপজেলার ঋষিপাড়া মন্দিরে প্রতিমা তৈরির কারিগর শ্রী দেবু সরকার বলেন, “প্রতিমার মূল কাঠামো ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। এখন শুধু সাজসজ্জা ও চোখ আঁকার কাজ চলছে। আর কয়েক ঘন্টার কাজ বাকি আছে, সেগুলো শেষ হলেই প্রতিমা পুরোপুরি প্রস্তুত হবে। তিনি আরো জানান এ কাজে তারা ৩জন নিয়োজিত রয়েছেন। তারা প্রতিমা তৈরীর প্রকার ভেদে মূল্য নিয়ে থাকেন।
পুরোহিত শীতা ঠাকুর বলেন, এ বছর পঞ্জিকা অনুযায়ী আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর সকাল ৯ টায় মহাষষ্ঠী পূজার মধ্যে দিয়ে শুরু হবে মহাদুর্গোৎসব। বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে এবার দেবী দূর্গা আগমন করবেন ২ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে পালকীতে করে গমন করবেন। সনাতন ধর্মাবলম্বী পূজারী ও ভক্তরা তাদের হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা দিয়ে দেবী দূর্গাকে বরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
দুর্গাপুর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি প্রশান্ত কুমার সরকার ও সাধারণ সম্পাদক শীবেন্দ্রনাথ সরকার বলেন, বিগত বছরগুলোর মতো এবারও আনন্দঘন এবং উৎসবমুখর পরিবেশে দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে। উপজেলা প্রশাসন ও জেলা প্রশাসন থেকে আমাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। পূজা উপলক্ষে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এবারের দুর্গোৎসব সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য ইতোমধ্যে প্রত্যেকটি পূজা মন্দিরে স্থানীয়ভাবে পর্যবেক্ষণ কমিটি গঠন করা হয়েছে। আশা করছি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এ বছর দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আতিকুল ইসলাম জানান, হিন্দু ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব হিসেবে পরিচিত শারদীয় দুর্গোৎসব। তাদের এই শারদীয় উৎসব নির্বিঘ্নে পালনের লক্ষ্যে থানা পুলিশের পক্ষ থেকে সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে পূজামন্ডপ গুলো পরিদর্শন করেছি এছাড়াও কমিটির সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের সাথে কথা বলেছি। শারদীয় দুর্গোৎসব চলাকালীন সময়ে সকল মন্ডপে নজরদারি সহ সার্বক্ষণিক পুলিশের টহল অব্যাহত থাকবে বলেও জানান ওসি।
দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাবরিনা শারমিন বলেন, এবারের শারদীয় দুর্গোৎসব সুষ্ঠ ও সুন্দর ভাবে উদযাপন করতে সার্বক্ষণিক পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থা ও সাইবার টিমসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সকল ইউনিট কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। এ বছর শারদীয় দুর্গোৎসব নির্বিঘ্ন করতে সার্বিক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
ন/জ
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।