নিজস্ব প্রতিবেদক : গত কয়েক দিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে চলছে তীব্র তাপদাহ আর ভ্যাপসা গরম। তীব্র তাপদাহের কারনে ডায়রিয়া, কলেরা, পেটের পিড়া জনিত সমস্যায় হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা । তাপদাহ ও নাভিশ্বাস গরমে রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হঠাৎ করে ডায়রিয়াসহ পানি বাহিত রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। তীব্র তাপদাহ ও গরম বাড়ার কারণে এই রোগীদের সংখ্যা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। আর এতেই রোগীদের সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন সবচেয়ে বেশি শিশু ও বৃদ্ধ রোগী।
শনিবার (১০ মে) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরেজমিনে দেখা গেছে, হাসপাতালের সবগুলো বেডেই ভর্তি রয়েছে রোগীরা। রোগী বাড়ার কারণে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বারান্দায় অনেক রোগীদের বেড দেয়া হয়েছে। অনেক অবিভাবকরা তাদের শিশুদের নিয়ে ভর্তি হয়েছেন হাসপাতালে। এছাড়া নানা বয়সী মানুষ আবহাওয়াজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ জানায়, তাপদাহের কারনে গত কয়েকদিন থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪০ জন শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক ১৫ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এছাড়াও ডায়রিয়ার উপসর্গ নিয়ে প্রতিদিন আউটডোরে সেবা নিচ্ছেন অনেক মানুষ।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের শিশু তানিশার মা খাদিজা পারভিন বলেন, তার শিশু কন্যার বয়স ৭ মাস। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ঘনঘন পাতলা পায়খানা শুরু হয়। এরপর দ্রুত শিশুকে নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি বিভাগে আসি । দেখে ডাক্তার বলেন শিশুর ডায়রিয়া হয়েছে। পরে শিশু ওয়ার্ডে বাচ্চাকে ভর্তি করানো হয়। হাসপাতালে বাচ্চার চিকিৎসা চলছে এখন কিছুটা সুস্থ আছে ।
শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা শিশু রিজভীর বাবা বলেন, আমার বাচ্চা হঠাৎ করে পাতলা পায়খানা আর বমি শুরু হয়। বাচ্চা নিয়ে এসে জানতে পারি ডায়রিয়া হয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছি।
পেটে ব্যাথা নিয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে এসেছেন গোলাম মোস্তফা। তিনি বলেন, গত কয়েক দিন আগে প্রথমে জ্বর তারপর প্রচুর পেটে ব্যাথা হয়। এরপর থেকে বমি শুরু হয়। পরে হাসপাতালের এসে ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নিয়ে একটু ভালো আছি । পুরোপুরি সুস্থ হতে আবারও হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি ।
দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মেহেদী হাসান বলেন, তীব্র তাপদাহ ও আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। বিশেষ করে এ সময়ে শিশুদের প্রতি যত্নশীল থাকতে হবে। পাতলা পায়খানা শুরু হলে শিশুকে মুখে খাবার স্যালাইন বার বার খাওয়াতে হবে। তিনি বলেন, এই গরমে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি বেশি বেশি পানি পান করতে হবে। এ সময়ে শিশুদের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। শিশুদের নিয়মিত গোসল করাতে হবে এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। তবে পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমরা রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি।
বিএ…
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।