দুর্গাপুরে পৌরসভা নির্বাচনে মিছিল বের করাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী তোফাজ্জল হোসেন ও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হাসানুজ্জামান সান্টুর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে লাঠিচার্জ করেছে। এ সময় পুলিশের এক কনস্টেবল সহ উভয় পক্ষের অন্তত ৭ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। সোমবার বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে উপজেলা সদর মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পুণরায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নির্বাচনী আইন শৃংখলায় নিয়োজিত একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আহতরা হলেন, পুলিশ কনস্টেবল সোহেল রানা, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তোফাজ্জল হোসেনের প্রচারনায় অংশ নেয়া কর্মী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বদরুল ইসলাম তাপস, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শরিফুজ্জামান শরিফ, পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবু সুফিয়ান হৃদয়, পৌর ছাত্রলীগের সহ সভাপতি মাইনুল ইসলাম, পৌর ছাত্রলীগের সদস্য মুন্না ও যুবলীগ নেতা মাইনুল ইসলাম রতন। আহতদের মধ্যে পুলিশ কনস্টেবল সোহেল রানাকে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, সোমবার বিকেল ৫টার দিকে দুর্গাপুর পৌরসভা নির্বাচনে প্রচারনার অংশ হিসেবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হাসানুজ্জামান সান্টু তার কর্মী সমর্থকদের নিয়ে নার্গিস সিনেমা হলমাঠ থেকে একটি মিছিল বের করে সিংগা বাজারের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড ঘুরে ফাযিল মাদরাসা মোড় হয়ে পুণরায় নার্গিস সিনেমা হলমাঠে ফিরছিলো। একই সময় আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী তোফাজ্জল হোসেনের কর্মী সমর্থকরা আরো একটি মিছিল নিয়ে উপজেলা মোড়ের কাছে পৌছালে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হাসানুজ্জামান সান্টুর মিছিলের সামনাসামনি পড়ে। মিছিল বের করাকে কেন্দ্র করে বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে উপজেলা মোড়ে তোফাজ্জল ও সান্টুর সমর্থকদের মধ্যে বাকবিতন্ডা শুরু হয়। বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতি ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে লাঠিচার্জ করে উভয় পক্ষের কর্মী সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র তোফাজ্জল হোসেন দাবি করেন, নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করতে স্বতন্ত্র প্রার্থী সান্টুর লোকজন পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মিছিল নিয়ে আমার প্রচারনা মিছিলের মধ্যে অতর্কিতভাবে ঢুকে পড়ে। এ সময় আমার কর্মী সমর্থকরা তাদের বাধা দিতে গেলে আমার কর্মীদের লাঞ্চিত করা হয়। বিষয়টি রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হাসানুজ্জামান সান্টু দাবি করেন, নির্বাচনী প্রচার প্রচারনার অংশ হিসেবে আমি আমার কর্মী সমর্থকদের নিয়ে শান্তিপুর্ন মিছিল বের করি। মিছিল নিয়ে উপজেলা মোড়ের কাছে পৌছালে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর লোকজন পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আমার শান্তিপুর্ন মিছিলে বাধা দেয়। এ সময় অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে উভয় পক্ষের লোকজনকে সরিয়ে দেয়।
দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাশমত আলী জানান, নির্বাচনী প্রচারনার অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী তোফাজ্জল হোসেন ও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হাসানুজ্জামান সান্টরু কর্মী সমর্থকরা নিয়ে মিছিল বের করেন। উভয় প্রার্থীর কর্মী সমর্থকরা মিছিল নিয়ে উপজেলা মোড়ের কাছে পৌছালে উভয় পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডা ও হাতাহাতির মতো ঘটনা ঘটে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে মৃদ লাঠিচার্জ করা হয়েছে। এ সময় পড়ে গিয়ে পুলিশ কনস্টেবল সোহেল রানা সামান্য আহত হয়েছে।
ওসি আরো বলেন, ঘটনার পরপরই পুণরায় অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে পৌর সদরের বিভিন্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তাছাড়া নির্বাচনী আইন শৃংখলার দায়িত্বে নিয়োজিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সহ অন্যান্য আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর স্বমন্বয়ে টহল জোরদার করা হয়েছে।
এস/আর