ওমর ফারুক :
গতকাল শনিবার দুপুর ১২টা। রাজশাহী মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র সাহেব বাজার মনিচত্বরে লোকা লোকারণ্য। এরমধ্যেই আঠারো থেকে বিশ বছর বয়সি এক বেঁদের মেয়েকে বলতে শোনা গেল, এই ভাই দশ টাকা দে, আল্লাহ তোর ভাল করবে। টাকা না দিলে তুই ধ্বংস হয়ে যাবি। টাকা দিলে ভালো বউ পাবি। এভাবেই বিভিন্ন কথা বলে সাপের বাক্স দেখিয়ে এক যুবকের থেকে টাকা চাচ্ছিলেন বেঁদের মেয়েটি। নিজ কাজে ব্যস্ত থাকলেও অবশেষে টাকা দিয়েই ছাড় পায় সেই যুবক। তাকে টাকা দিয়ে ৩০ সেকেন্ড পার না হতেই আরেক কিশোরী বেঁদের মেয়ে ওই যুবককে বলে এ ভাই দশ টাকা দে আল্লাহ তোর ভাল করবে। আর বেঁদের মেয়েকে দেখে ভয়ে দৌড়াতে দেখা গেল এক যুবককে। শুধু ওই যুবকই নয় এই প্রতিবেদকের কাছেও আল্লাহ মঙ্গল করবে বলে দশ টাকা দাবি করে বেঁদের মেয়েটি।
ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াতকারী প্রায় প্রত্যেক মানুষের কাছেই টাকা চেয়েছিলেন বেঁদের মেয়েরা। লোকজনের পথ আগলে তারা টাকা তুলছিল। কেউ ছাড় পায়নি তাদের কবল থেকে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত কয়েকদিন আগে নাটোরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে শতাধিক বেঁদের মেয়ে রাজশাহী মহানগরীতে প্রবেশ করেছে। নগরীতে প্রবেশের পর থেকেই তারা বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে পথচারীদের ধরে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করছে। কেউ দিতে না চাইলে তারা তাকে বিভিন্নভাবে হেনস্থা করছে। হেনস্থা হওয়ার ভয়ে অনেকেই তাদের টাকা দিয়ে দিচ্ছে।
এদের কবল থেকে কেউ রক্ষা পাচ্ছে না। সবার কাছ থেকেই তারা ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করছে।
শুধু নগরীর সাহেব বাজার মনিচত্বরই নয় রেলগেট, লক্ষীপুর, জিরোপয়েন্ট, কোর্ট স্টেশন, ভদ্রাসহ বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় তাদের টাকা তুলতে দেখা গেছে।
আব্দুল্লাহ নামের এক যুবক বলেন, আমি কোম্পানীর একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করছিলাম। কিন্ত একের পর বেঁদের মেয়ে তাকে ধরে টাকা আদায় করেছে। দিতে না চাইলে তারা বাক্স দেখিয়ে ভয় দেখিয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে টাকা দিতে হয়েছে।
আরেক নারী বলেন অভিযোগ করে বলেন, এরা কাউকেই ছাড় দিচ্ছে না। নারী-পুরুষ সবাইকে ধরে ধরে টাকা আদায় করছে। তারপরও পুলিশের পক্ষ থেকে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এ নিয়ে তিনি পুলিশের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার ইফতে খায়ের আলম বলেন, বিষয়টি আমাদের জানা নেই। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খবর২৪ঘণ্টা/এমকে