থানায় নিয়ে চোখ বেঁধে নির্যাতন ও চাঁদা দাবির অভিযোগে মুন্সিগঞ্জের লৌহজং থানার উপ-পরিদর্শকসহ (এসআই) পাঁচ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে মুন্সিগঞ্জ আদালতে মো. রিপন শেখ (৩৯) বাদী হয়ে অভিযোগ দিলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-৬’র বিচারক আব্দুল্লাহ আল ইউসুফ তা মামলা হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. রুবেল এ তথ্য গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, আদালতে মামলাটি গ্রহণ করা হয়েছে। আগামীকাল লৌহজং থানাকে এফআইআর গ্রহণ করার নির্দেশ পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন—মো. রাজন (২৬), রুবি আক্তার (৩৫), চম্পা বেগম (৩৮), তুহিন (৩০) ও উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু তাহের মিয়া (৪০)। এর মধ্যে দুই নম্বর আসামি রুবি আক্তার বাদী রিপন শেখের স্ত্রী। বাদী রিপন শেখ লৌহজং উপজেলার কুমারভোগ পুনর্বাসন কেন্দ্রের মৃত সাহেদ শেখের ছেলে।
মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, বাদী রিপনের সঙ্গে তার স্ত্রী রুবির দীর্ঘদিন যাবত বনিবনা হচ্ছিল না। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৪ সেপ্টেম্বর সকালে রুবির ভাই ও বোন মিলে রিপনের বাড়িতে এসে তাকে মারধর করে। পরে একই দিনে অভিযুক্ত এসআই আবু তাহের মিয়া সিভিল পোশাকে রিপনের বাড়ি থেকে জোর করে তাকে ধরে থানায় নিয়ে আসে। পরে চোখমুখ বেঁধে তাকে মারধর করে পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। রিপন টাকা দিতে অস্বীকার করলে এসআই আবু তাহের শেখ তাকে মারধর করে।
মুন্সিগঞ্জ আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও মামলার বাদী রিপন শেখের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রোজিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘রিপনকে যখন ধরে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশের পরিচয় জানতে পারেনি। থানায় নিয়ে গিয়ে ৩-৪ ঘণ্টা নির্যাতন করে যখন ছেড়ে দেয়, তখন পুলিশের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। ভুক্তভোগীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন আছে।’
মামলার বাদী রিপন শেখ বলেন, ‘থানায় নিয়ে গিয়ে আমার পায়ের তালুতে আঘাত করা হয়। দেয়ালে ঠেকিয়ে আঘাত করা হয় শরীরের বিভিন্ন স্থানে। রক্তও বের হয়। আমি স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছি। থানার ভেতরে নির্যাতন করায় ভয়ে থানায় গিয়ে অভিযোগ করতে যানাইনি। সেজন্য আদালতে গিয়ে অভিযোগ দিয়েছি।’
এ বিষয়ে লৌহজং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসাইন বলেন, ‘থানায় এনে নির্যাতনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। আদালতের কোনো নির্দেশনাও থানায় এসে পৌঁছায়নি।’
জেএন