খবর২৪ঘণ্টা.কম, ডেস্ক: বাংলাদেশ ক্রিকেটের ইতিহাসে অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল। লাল-সবুজের জার্সিধারীদের বহু জয়ের নায়ক এই বাঁ-হাতি ওপেনার। দলের প্রতি তার দায়িত্ব ও দেশপ্রেম দিয়ে তিনি জায়গা করে নিলেন ক্রিকেটপ্রেমীদের হৃদয়ে। টাইগার এই ড্যাশিং তারকা আবারও প্রমাণ করলেন, একজন আদর্শ ক্রিকেটারের জন্য দলের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর কিছুই নয়। তাই তো দলের প্রয়োজনে এক হাতেই ব্যাট করলেন তিনি।
কেবল দলের প্রয়োজনে আর স্বদেশ প্রেমের তাগিদেই ক্যারিয়ারের ঝুঁকি নিয়ে একহাতে আগুনের গোলা মোকাবেলা করতে নেমেছিলেন এই ড্যাশিং ব্যাটসম্যান। এদিন, ভাঙা আঙুল নিয়ে শেষ উইকেটে মুশফিকের সঙ্গে একহাতে ব্যাট করে পুরো ক্রিকেট বিশ্বকে অবাক করেন তামিম। একটি শর্টবল ডিফেন্সও করেন। বাকি বলগুলো থেকে মুশফিক তুলে নেন ৩২ রান। বাংলাদেশ পায় ২৬১ রানের লড়াইয়ের স্কোর। আর জয় পায় ১৩৭ রানের।
তবে তামিমই প্রথম ব্যাটসম্যান নন, যিনি এক হাতে ব্যাট করতে মাঠে নেমেছেন। তার আগে এমন সাহসী পদক্ষেপ যারা নিয়েছিলেন তাদের মধ্যে তিনজনের কীর্তিও বেশ আলোচিত। এ ব্যাপারে একটি প্রতিবেদন করেছে বিবিসি বাংলা।
গ্রায়েম স্মিথ (সাউথ আফ্রিকা), ২০০৯, সিডনি
২০০৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিডনিতে একটি টেস্ট ম্যাচ বাঁচাতে ভাঙ্গা হাত নিয়ে মাঠে নামেন গ্রায়েম স্মিথ। প্রোটিয়া তারকার যখন মাঠে নামেন তখন ম্যাচের ৮ ওভার ২ বল বাকি ছিল। স্মিথ মিচেল জনসন, ডগ বলিঞ্জারের মতো গতিতারকাদের একের পর এক বল ঠেকিয়ে যাচ্ছিলেন এক হাতে ভর করে। কিন্তু ঠিক ১০ বল বাকি থাকতে জনসনের একটি বল ব্যাট ও প্যাডের ফাঁক গলে বেড়িয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ম্যাচ বাঁচাতে না পারলেও স্মিথের এই ইনিংস বহুদিন ক্রিকেট ভক্তরা মনে রেখেছেন।
ম্যালকম মার্শাল, ১৯৮৪, হেডিংলি
১৯৮৪ সালে হেডিংলিতে বাঁ-হাত ভাঙ্গা থাকলেও ডান হাত নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ৭ উইকেট নেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটার ম্যালকম মার্শাল। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হেডিংলি টেস্টের প্রথম দিনে ইংল্যান্ডের ক্রিস ব্রডের ব্যাট থেকে ছুটে আসা একটি বল ঠেকাতে গিয়ে মার্শালের বাঁ-হাতের বুড়ো আঙ্গুলে দু’টি চিড় ধরে।
যদিও তিনি ডান হাতি বোলার ছিলেন, চিকিৎসকরা তাকে পরামর্শ দেন যাতে তিনি ওই টেস্ট তো বটেই, আরও অন্তত ১০ দিন ক্রিকেট থেকে দূরে থাকেন।
কিন্তু তৃতীয় দিন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ল্যারি গোমেজ যখন ইংলিশদের বিরুদ্ধে একাই লড়ছিলেন তখন, সফররতদের ৯ উইকেটের পতন ঘটে। অপরাজিত গোমেজ ৯৬ রানে প্যাভিলিয়নের পথে হাঁটা শুরু করলে মারশাল ব্যাট হাতে মাঠে নামেন। তাকে দেখে সবাইকে অবাক! পরবর্তীতে মারশাল অবশ্য বলেন, ব্যাট করার ইচ্ছা ছিল না তার। কিন্তু গোমেজ সেঞ্চুরির এত কাছে ছিল যে তাকে নামতে হয়।
এছাড়া ২০০২ সালে অনিল কুম্বলে অ্যান্টিগা টেস্টে ভাঙ্গা চোয়াল নিয়ে বল করতে নামেন। সে অবস্থাতে ব্রায়ান লারার উইকেটও পান তিনি।
ব্রিস্টলে ২০০৯ সালে ইংল্যান্ডের ইয়ান বেল বাংলাদেশের বিপক্ষে ভাঙ্গা পায়ের পাতা নিয়ে খেলতে নামেন। সেই ম্যাচে বাংলাদেশ জয় পায়।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ