পুলিশি সরঞ্জামসহ ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ডাকাত দলের ৯ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর গোয়েন্দা গুলশান বিভাগ।
আজ বুধবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম ও ডিবি-উত্তর) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
ডিবির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার হারুন বলেন, করোনা ভাইরাসের তীব্রতা কমার কারণে জনজীবন স্বাভাবিক হওয়ার প্রেক্ষিতে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে পেয়েছে। এসময় বেশ কয়েকটা গ্রুপ ঢাকা মহানগরী এবং আশেপাশের এলাকায় প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসযোগে ভুয়া র্যাব ও ভুয়া ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ব্যাংকে টাকা জমা দিতে যাওয়া অথবা ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনকারী ব্যক্তিদেরকে জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। তুলে নেয়া ব্যাক্তিকে কখনো সাভার-আশুলিয়া, কখনো বেড়িবাঁধ, কখনো নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জে নিয়ে ব্যাপক মারধর করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে নগদ টাকা ও ভিকটিমদের ডেবিট, ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে হাতিয়ে নেয়।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) আইন শৃঙ্খলারক্ষা বাহিনীর ভুয়া বেশ ধারণ করে ডাকাতি ছিনতাই কাজে লিপ্ত ডাকাত দলের সদস্যরা মতিঝিল এলাকায় ধর্তব্য অপরাধ সংঘটনের উদ্দেশ্যে সমবেত হয়েছে মর্মে তথ্য পায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এই তথ্যের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশের একাধিক টিম বলাকা চত্বর, ইউনুস সেন্টারের আশেপাশের একাধিক ব্যাংকের কাছাকাছি অবস্থান নেয়। এই ডাকাত দলের সদস্যরা মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকারে করে অপরাধ সংঘটনের চেষ্টাকালে উপস্থিত জনতার সহায়তায় ডিবি পুলিশ তাদেরকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে।
তিনি আরো বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা ব্যাংকের কাছে দাঁড়িয়ে ব্যাংক থেকে নগদ টাকা উত্তোলনকারী ব্যক্তিদের টার্গেট করে। টার্গেটকৃত ব্যক্তিকে অনুসরণ করে সুবিধাজনক স্থানে পৌছার পর তাদের সাথে থাকা ডিবি’র জ্যাকেট পরে টার্গেটকৃত ব্যক্তির গতিরোধ করে। এসময় ওয়াকিটকি দেখিয়ে নিজেদেরকে ডিবি পুলিশের পরিচয়ে কোন একটা অপরাধ করার অজুহাত দেখিয়ে নগদ টাকা বহন করা ব্যক্তিকে হাতকড়া পরিয়ে তাদের নিজেদের গাড়িতে তুলে নেয়। এরপর কিছুদুর গাড়ি চালানোর পর তাদের কাছ থাকা টাকা পয়সা, মোবাইল ফোন ও মূল্যবান সামগ্রী ভয় দেখিয়ে জোর পূর্বক কেড়ে নেয়। কখনও কখনও কাউকে কাউকে তাদের কাছে থাকা গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে ফেলে। আবার কখনও কখনও কোন ব্যক্তি চিৎকার চেঁচামেচি করলে গামছা দিয়ে গলায় ফাঁস দেয়।
সাধারণ জনগণের উদ্দেশ্যে ডিবির এ কর্মকর্তা বলেন, আপনারদের যদি কেউ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তাদের সাথে যেতে বলে তাহলে আপনারা যাচাই না করে তাদের সাথে যাবেন না। এ ধরনের ঘটনার শিকার হলে নিকটস্থ থানায় অথবা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ অবহিত করবেন। সরাসরি মহানগর গোয়েন্দা অফিসে এসে কেউ অভিযোগ করলেও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় ডাকাতি ও মাদকের ২টি পৃথক মামলা রুজু হয়েছে।
গ্রেপ্তাকৃতরা হলো- আব্দুল্লাহ আল মামুন, ইমদাদুল শরীফ, খোকন মিয়া, মাসুদুর রহমান তুহিন, মামুন সিকদার, কামাল হোসেন, ওয়াহিদুল ইসলাম, ফারুক বেপারী এবং মতিউর রহমান।
বিএ/