খবর২৪ঘণ্টা.কম, ডেস্ক: পৃথিবীতে বিভিন্ন সময়ে আমরা নানা রকম সমস্যায় পরে আমরা আল্লাহর রব্বুল আল আমিনের দ্বারস্থ হই । তার কাছে বিভিন্নভাবে সাহাস্য প্রার্থনা করে থাকি। সমস্যর থেকে পরিত্রাণের জন্য আমরা আমাদের প্রতিপালককে বিভিন্নভাবে ডাকি, কীভাবে আমাদের দোয়া কবুল হবে, আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের মেহেরবানির ছায়া পাব- এমন অনেক প্রশ্ন আমাদেরকে অস্থির করে। এ সময় আল্লাহর জিকির ও তার রাসূল (সাঃ) এর উপর দরুদ পাঠে উত্তম ফল পাওয়া যায়।
১/ আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কাউকে না ডাকা। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইবনে আব্বাস (রাঃ) কে উদ্দেশ্য করে বলেন: যখন প্রার্থনা করবে তখন শুধু আল্লাহ্র কাছে প্রার্থনা করবে এবং যখন সাহায্য চাইবে তখন শুধু আল্লাহ্র কাছে সাহায্য চাইবে।(সুনানে তিরমিযি-২৫১৬, আলবানী ‘সহিহুল জামে’ গ্রন্থে হাদিসটিকে সহিহ আখ্যায়িত করেছেন।
২/ শরিয়ত অনুমোদিত কোন একটি মাধ্যম দিয়ে আল্লাহ্ তাআলার কাছে ওসিলা দেয়া।
৩/ দোয়ার ফলাফল পাওয়ার জন্য তাড়াহুড়া না করা। তাড়াহুড়া করা দোয়া কবুলের ক্ষেত্রে বড় বাধা। হাদিসে এসেছে, ‘তোমাদের কারো দোয়া ততক্ষণ পর্যন্ত কবুল হয় যতক্ষণ পর্যন্ত না সে তাড়াহুড়া করে বলে যে: ‘আমি দোয়া করেছি; কিন্তু, আমার দোয়া কবুল হয়নি’ [সহিহ বুখারী (৬৩৪০) ও সহিহ মুসলিম (২৭৩৫)]
সহিহ মুসলিমে (২৭৩৬) আরো এসেছে- “বান্দার দোয়া ততক্ষণ পর্যন্ত কবুল করা হয় যতক্ষণ পর্যন্ত না বান্দা কোন পাপ নিয়ে কিংবা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা নিয়ে দোয়া করে। বান্দার দোয়া ততক্ষণ পর্যন্ত কবুল করা হয় যতক্ষণ পর্যন্ত না বান্দা ফলাফল প্রাপ্তিতে তাড়াহুড়া না করে। জিজ্ঞেস করা হল: ইয়া রাসূলুল্লাহ! তাড়াহুড়া বলতে কী বুঝাচ্ছেন? তিনি বললেন: বলে যে, আমি দোয়া করেছি, আমি দোয়া করেছি; কিন্তু আমার দোয়া কবুল হতে দেখিনি। তখন সে ব্যক্তি উদ্যম হারিয়ে ফেলে এবং দোয়া ছেড়ে দেয়।’
৪. দোয়ার মধ্যে পাপের কিছু না থাকা। অথাৎ দোযার মধ্যে কারো ক্ষতি বা অসৎ কিছু থাকলে সেই দোযা কবুল হবে না।
৫. আল্লাহ্র প্রতি পরিপূর্ণ আস্থা নিয়ে দোয়া করা। এ সম্পর্কে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমার বান্দা আমার প্রতি যেমন ধারণা করে আমি তেমন।’ [সহিহ বুখারী (৭৪০৫) ও সহিহ মুসলিম (৪৬৭৫)]
আবু হুরায়রা (রাঃ) এর হাদিসে এসেছে, ‘তোমরা দোয়া কবুল হওয়ার দৃঢ় বিশ্বাস (একীন) নিয়ে আল্লাহ্র কাছে দোয়া কর।’[সুনানে তিরমিযি, আলাবানী সহিহুল জামে গ্রন্থে (২৪৫) হাদিসটিকে ‘হাসান’ আখ্যায়িত করেছেন]
৬. দোয়ায় মনোযোগ থাকা। দোয়া করার সময় পুরো পুরি মনোযোগ হওয়াএবং যার কাছে প্রার্থনা করা হচ্ছে তার মহত্ত্ব ও বড়ত্ব অন্তরে জাগ্রত রাখবে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “তোমরা জেনে রাখ, আল্লাহ্ কোন উদাসীন অন্তরের দোয়া কবুল করেন না।”[সুনানে তিরমিযি (৩৪৭৯), সহিহুল জামে (২৪৫) গ্রন্থে শাইখ আলবানী হাদিসটিকে ‘হাসান’ আখ্যায়িত করেছেন]
৭. খাদ্য পবিত্র (হালাল) হওয়া: আল্লাহ্ তাআলা বলেন, ‘আল্লাহ্ তো কেবল মুত্তাকীদের থেকেই কবুল করেন’[সূরা মায়েদা, আয়াত: ২৭] এ কারণে যে ব্যক্তির পানাহার ও পরিধেয় হারাম সে ব্যক্তির দোয়া কবুল হওয়াকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুদূরপরাহত বিবেচনা করেছেন।
ইবনুল কাইয়্যেম (রহঃ) বলেন, হারাম ভক্ষণ করা দোয়ার শক্তিকে নষ্ট করে দেয় ও দুর্বল করে দেয়।
৮. দোয়ার ক্ষেত্রে কোন সীমালঙ্ঘন না করা: আল্লাহ্ তাআলা দোয়ার মধ্যে সীমালঙ্ঘন করাটা অপছন্দ করেন। আল্লাহ্ তাআলা বলেন, ‘তোমরা বিনীতভাবে ও গোপনে তোমাদের রবকে ডাক; নিশ্চয় তিনি সীমালঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করেন না।” [সূরা আরাফ, আয়াত: ৫৫]
৯. ফরয আমল বাদ দিয়ে দোয়াতে মশগুল না হওয়া: এমনটি অনেকেই করে থাকেন- ফরয নামাযের ওয়াক্তে ফরয নামায বাদ দিয়ে দোয়া করা।
খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ