1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
ছেলে চাকরি করেন কমিউনিটি ক্লিনিকে: ভিক্ষা করেন ‘মা’ - খবর ২৪ ঘণ্টা
মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৫৪ পূর্বাহ্ন

ছেলে চাকরি করেন কমিউনিটি ক্লিনিকে: ভিক্ষা করেন ‘মা’

  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ২৭ মে, ২০১৮

বাগাতিপাড়া প্রতিনিধি: ‘ছেলে আমার মস্ত বড়, মস্ত অফিসার, মস্ত ফ্ল্যাটে যায় না দেখা এপার ওপার। নানান রকম জিনিস আর আসবাব দামী দামী সবচেয়ে কম দামী ছিলাম একমাত্র আমি। হ্যাঁ নচিকেতার সেই বিখ্যাত গানটি সবার মনে রয়েছে। গানের সাথে বাস্তব জীবনেও অনেকের মিল খুঁজে পাওয়া যায়। স্বামী মারা যাওয়ার পর ভিক্ষা করেই ৫ছেলে এবং ১ মেয়েকে বড় করেছেন। ছেলে পেয়েছেন কমিউনিটি ক্লিনিকের চাকরি। বাকি ছেলেরা করেন ব্যবসা ও কৃষি কাজ। কিন্তু ভাগ্য আর বদলায়নি বাগাতিপাড়া উপজেলার ফাগুয়াড়দিয়াড় ইউনিয়নের এক ভিক্ষুক মায়ের। তার নাম লতিফা বেগম ওরফে নতিজান (৭০)। ছেলে চাকরি করেন কমিউনিটি ক্লিনিকে, ছেলের বউ ইউপি সদস্য তবুও এক মুঠো ভাত জুটে না তার। বয়োস বাড়ায় রোগে বাঁশা বেঁধেছে শরিরে। তবুও অসুস্থ শরিরে ভিক্ষা করেই লতিফা বেগম জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন।

অন্যন্য এলাকার মতো মালঞ্চি বাজারে মাঝে মধ্যে লাঠিতে ভর করে ভিক্ষা করতে দেখা যায় লতিফা বেগমকে। হাত পাতছে একে অন্যের কাছে। অনেকে আবার তাচ্ছিল করে সরিয়ে দিচ্ছেন। তীব্র গরম যেন তার কাছে কিছুই নয়, যেখানে তীব্র রোদ আর গরমে বের হওয়া কঠিন সেখানে জীবনের তাগিদে ভিক্ষা করে চলছে সে। এভাবে সারা দিন ভিক্ষা করে যা আয় হয় তা দিয়ে জীবন চালিয়ে নেন তিনি।

মালঞ্চি বাজারে কথা হয় ভিক্ষুক মা লতিফার সাথে। তিনি বলেন, কোন মতে জীবন চলছে। বয়স্ক ভাতায় যে কয়টা টাকা পাই তা দিয়ে চিকিৎসা আর পেটে খাওয়া হয়না। মানুষের কাছ থেকে হাত পেতে চেয়ে নিতে হয় টাকা, আর ওই টাকা দিয়েই কোন মতে চলে সংসার।

তবে এসময় লতিফা বেগমের চোখে তীব্র আবেগ আর চোখে ছল ছল পানি যেন গড়িয়ে পড়বে। দুঃখ করে বলেন, তার ছেলে ও ছেলের বৌ তাকে কোন ভাত কাপড় দেয় না, তিনি ছেলেদের ভিক্ষা বৃত্তি করে পড়া লেখা করিয়েছেন। এর মধ্যে রফিকুল ইসলাম নামের এক ছেলে কমিউনিটি ক্লিনিকে চাকরি করেন। আর সেই ছেলের বউ ফাগুয়াড়দিয়াড় ইউনিয়নের ইউপি সদস্য। বড় আশা ছিল ছেলে লেখাপড়া শেষ করে চাকরি করে মাকে দেখাশুনা করবে, কিন্তু সে আশা ধুলিসাৎ হয়ে এখন ভিক্ষা করে সংসার চালাতে হচ্ছে।

সারা জীবন শ্রম আর কষ্ট করে সংসার আগলে রেখেছিলেন লতিফা বেগম। কিন্তু জীবনে একটু সুখের বদলে পেয়েছেন লাঞ্চনা আর বঞ্চনা। জীবনের শেষ সময়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছেন বৃদ্ধা মা। ছেলে চাকরি কররেও খোঁজ খবর রাখেন না মায়ের। বৃদ্ধ মায়ের বাস্তব জীবনের এমন গল্প যেন সইবার না অনেকে, এমন মন্তব্য করছিলেন লতিফা বেগমের জীবন কাহিনী শুনার পর উপস্থিত দর্শকরা।

তবে বৃদ্ধ লতিফা বেগমের জীবন কাহিনীর গল্প হয়তো একদিন শেষ হয়ে যাবে, কিন্তু যে ঘৃণা নিয়ে পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবে, সেটা কি কখনও শুধরাতে পারবে লতিফা বেগম এর ছেলেরা। সারা জীবন অপরাধ বোধ নিয়ে বেঁচে থাকতে হবে ক্ষণিকের এই পৃথিবীতে। আর যেন নসরান বেওয়ার মতো জীবনযুদ্ধে কাউকে নামতে না হয় এমন প্রত্যাশাই যেন সবার।

খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ 

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST