খবর২৪ঘন্টা নিউজ ডেস্ক: প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে ঝুঁকি এড়াতে সাধারণ ছুটির মেয়াদ আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধের লক্ষ্যে চলমান কার্যক্রম সমন্বয় করতে মঙ্গলবার সকাল ১০টায় ৬৪টি জেলার সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সকাল ১০টায় এই ভিডিও কনফারেন্স শুরু হয়।
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া অচেনা ভাইরাস করোনার কারণে ২৬ মার্চ থেকে আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়। এর মধ্য ২৯ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি। এর আগে ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের ও পরে ২৭ ও ২৮ মার্চের সাপ্তাহিক ছুটিও যোগ হয়েছিল। এ ছাড়া ৩ ও ৪ এপ্রিল সাপ্তাহিক ছুটি এ ছুটির সঙ্গে যোগ হয়। সবমিলিয়ে ১০ দিনের ছুটি পান সরকারি কর্মকর্তারা। করোনার কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতি এড়াতে এই ছুটির মেয়াদ আরও বাড়বে বলে জানান সরকারপ্রধান।
শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিতে ছুটিটা একটু বাড়াতে হবে। আমরা ১২ দিনের ছুটি দিয়েছিলাম এটা ১৪ দিন হতে পারে।
জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে পারায় করোনা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে মন্তব্য করেন সরকারপ্রধান। বলেন, ‘নিজের সুরক্ষা নিজেকেই নিতে হবে। নিজে সচেতন না হলে পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সচেতনতা সৃষ্টি করা খুবই জরুরি। আমরা সেটা করতে পেরেছি।’
এই দুঃসময়ে দিনমজুর শ্রমজীবী মানুষের তালিকা করে তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান জানান বঙ্গবন্ধুকন্যা। তবে এ নিয়ে কেউ দুর্নীতি হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মানুষের দুঃসময়ে কেউ সুযোগ নিলে আমি কিন্তু তাকে ছাড়বো না।’
ভিডিও কনফারেন্সে দরিদ্র মানুষের কাছে খাবার পৌঁছে দেওয়া এবং তাদের সচেতনতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা করতে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত এ কার্যক্রম অব্যাহত রাখার কথাও বলেন তিনি। সেইসঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার নির্দেশ দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সহযোগিতা যেন সবাই সমানভাবে পায় তা দেখতে হবে। কেউ যেন বারবার না পায়, কেউ যেন বঞ্চিত না হয়, সেটা দেখতে হবে। এজন্য তালিকা তৈরি করে ত্রাণসামগ্রী সরবরাহ করতে হবে। এই কাজে কোনও ধরনের দুর্নীতি অনিয়ম সহ্য করা হবে না।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আজ যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে সেটা কেবল বাংলাদেশে নয়, সমগ্র পৃথিবীজুড়ে এই সমস্যাটা রয়েছে। এখানে ধনী-দরিদ্র, দুর্বল কিংবা শক্তিশালী দেশ, উন্নত বা অনুন্নত সবাই এই পরিস্থিতির শিকার। কেউই বাদ যায়নি। এরকম পরিস্থিতি বোধ হয় আমরা জাতীয় জীবনে আর কখনও দেখিনি। অতীতের ঘটনা পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে শত বছরে একবার করে এরকম একটা ধাক্কা আছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, জনসমাগম যাতে না হয়, মানুষ যাতে নিরাপদ থাকে এ জন্য ৭ মার্চের অনুষ্ঠান, স্বাধীনতার অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়।
সরকারপ্রধান আরও বলেন, ‘পর্যায়ক্রমে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করেছি। সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছি। এতে সাধারণ মানুষের জীবন যেন স্তব্ধ না হয়ে যায় সেজন্য ব্যাংক নির্দিষ্ট সময় খোলা, পানি, বিদ্যুৎ, পণ্য পরিবহন সীমিত আকারে সব কিছু চালু রেখেছি।’
খবর২৪ঘন্টা/নই