বিশেষ প্রতিনিধি : দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামী হয়েও স্বপদে বহাল রয়েছেন রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আরডিএর সহকারী প্রকৌশলী শেখ কামরুজ্জামান। শুধু তাই নয় তিনি ৩০ কোটি টাকার প্রকল্প পরিচালক হয়েছেন। যদিও তার দাবি মন্ত্রণালয় থেকে তাকে প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে আরডিএর কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যেও অসন্তোষ ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
এ নিয়ে সম্প্রতি আরডিএর সাবেক ইকবাল হোসেন চলতি মাসের ১৫ নভেম্বর দুদক চেয়ারম্যান বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, দুর্নীতি দমন কমিশনের চার্জশিটভুক্ত আসামী হওয়া সত্বেও সহকারী প্রকৌশলী শেখ কামারুজ্জামান এর বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। বরং তিনি বড় একটি প্রকল্পের পিডির দায়িত্ব পেয়েছেন। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালত রাজশাহীতে ৫/১৬ ( মেট্রোঃ রাজ) নম্বর মামলা চলমান রয়েছে। গত ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারী মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক কমিশনার (তদন্ত) এ এফ এম আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত রাজশাহী মহানগর বিশেষ জজ আদালতে দাখিল করা অভিযোগপত্রে বলা হয়, রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সহকারী প্রকৌশলী শেখ কামরুজ্জামান ২০০৪ সালে নিয়োগ দেয়া হয়। ১৯৯৩ সালে তিনি মানবিক বিভাগে প্রাইভেট পরীক্ষা দিয়ে এসএসসি পাস করেন। পরে পলিটেকনিক ইনস্টিউিট থেকে ডিপ্লোমা পাস করেন। অথচ ওই লিখিত নিয়োগের পরীক্ষায় যারা উত্তীর্ণ হয়েছিলেন তারা সবাই ছিলেন বিএসসি (সিভিল ইঞ্জিনিয়ার) ডিগ্রিধারী যোগ্য প্রার্থী ।
নিয়োগের জন্য ২০০৪ সালের ১৬ আগষ্ট বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। সহকারী প্রকৌশলীসহ ৭টি পদে ১৭ সেপ্টেমবর লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ১৯ সেপ্টেমবর পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। এতে ৫ জন উত্তীর্ণ হন। এরপর একইদিন অনিবার্য
কারণবশত লিখিত পরীক্ষার ফলাফল বাতিল করে পরীক্ষায় অংশ নেয়া সব প্রার্থীকে ২১ সেপ্টেমবর মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়। এরপর অসৎ উদ্দেশ্যে সহকারী প্রকৌশলী পদে লিখিত পরীক্ষা বাতিল করে মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে শেখ কামরুজ্জামানকে চূড়ান্ত নিয়োগ দেয়া হয়। এ অভিযোগপত্রে আরো ২ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।
২০১২ সালের ৯ এপ্রিল গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের এক স্মারকে বলা হয়, দুর্নীতি মামলায় যেসব আসামীর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে চাকরির বিধি অনুযায়ী সাময়িক বরখাস্ত এবং গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে মন্ত্রণালয়কে অবহিত করতে হবে। কিন্ত অভিযোগপত্র দাখিল হওয়ার পরে দুই বছর
পার হয়ে গেলেও বহাল তবিয়তে আছেন সহকারী প্রকৌশলী কামরুজ্জামান।
আরো জানা গেছে, আইনজীবীর মতামতের আগে উচ্চ আদালতে একটি রিট পিটিশন করেন শেখ কামারুজ্জামান। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত ৪ সপ্তাহের জন্য মামলাটি স্থগিত করেন। পরে মামলার বিচারকাজ শুরু হয়। আইনজীবীর মতামতের ভিত্তিতে তাকে স্বপদে বহাল রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে আরডিএর সহকারী প্রকৌশলী শেখ কামারুজ্জামান খবর ২৪ ঘণ্টাকে বলেন, এখন আমার বিরুদ্ধে কোন মামলা নেই। তাহলে রিট পিটিশন কেন করেছিলেন এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি উত্তর না দিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যান।
রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আনওয়ার হোসেন এর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
আর/এম