রাজশাহীর চারঘাট পৌর নির্বাচনেসন আর মাত্র একদিন বাকি। নানা অনিয়ম ও সরকারী দলের প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের নানা অনিয়ম, হুমকী, নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা, ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার হুমকী, উপজেলা চেয়ারম্যান কর্তৃক সরকার দলীয় প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগ এবং বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে পুলিশি হয়রানীর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী বর্তমান মেয়র মোহাম্মদ জাকিরুল ইসলাম বিকুল। প্রার্থী এবং চারঘাট পৌর বিএনপি’র আয়োজনে নগরীর মালোপাড়াস্থ্য বিএনপি কার্যালয়ে আজ শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে এ সংসবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনের সুচনায় প্রাধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার অন্যতম উপদেষ্টা, সাবেক মেয়র ও সংসদ সদস্য মিজানুর রহামন মিনু বলেন, প্রতিটি পৌর নির্বাচনে এই বিনা ভোটের সরকার জোর করে দলীয় প্রার্থীদের বিজয়ী করেছে। ভোট কেন্দ্র দখল এবং অন্যের ফলাফল সরকারী দলের প্রার্থীর পক্ষে নিয়েছে। এখন আবার চারঘাট ও দূর্গাপুর পৌর নির্বাচন এবং পবা উপজেলা নির্বাচনে একই পন্থা অবলম্বন করার পাঁয়তারা করছে। সরকারী দলীয় সংসদ সদস্যরা নির্বাচনী আইন অমান্য করে প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা করছেন। অভিযোগ করেও কোন লাভ হচ্ছেনা বলে জানান তিনি। এই সকল অনিয়ম, ভোট ডাকাতী, হুমকী ও মিথ্যা মামলায় হয়নারী তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান মিনু।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী মোহাম্মদ জাকিরুল ইসলাম বিকুল অভিযোগ করে বলেন, গত ১৩ ফেব্রæয়ারি অনুমানিক সকাল ৭টার সময় চারঘাট বাজারে ধানের শীষের পোস্টার লাগানোর সময়, প্রতিদ্বন্দি¦ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতিকের প্রার্থীর লোকজন লাঠি, হাঁসুয়া ও অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র নিয়ে চারঘাট বাজারে অবস্থান নেয়। এরপরে সকাল সাড়ে ১০টার সময় আমি আমার মায়ের কবর জিয়ারত করে প্রচার প্রচারণার উদ্যেশ্যে নেতাকর্মীসহ চারঘাট বাজারের দিকে রওনা হলে পূর্ব থেকে অবস্থান করা আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতিকের প্রার্থীর লোকজন আমার প্রচারণায় বাধা সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে আমার নেতা কর্মীদের ওপর হামলা চালায় তারা। তারা এসময় দেশীয় অস্ত্রের পাশাপাশি ককটেল নিক্ষেপ করে আমাদের নিরস্ত্র নেতা কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এ ঘটনায় উল্টো আমাদের বিরুদ্ধেই বিস্ফোরক আইনসহ দুটি মামলা দায়ের করা
হয়। এরপর থেকেই আমার সকল নির্বাচনি কার্যক্রমে তারা বাধা দিচ্ছে। প্রচার কাজে নিয়োজিত মাইক ভেঙ্গ ফেলা হচ্ছে। পোস্টার লাগানোর পরে তা ছিড়ে পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে এবং প্রচার কাজে নিয়োজিত নারী কর্মীদের এলাকায় লিফলেট বিতরনের সময় শারিরিকভাবে নির্যাতন করে ভয় ভিতি প্রদর্শন করা হচ্ছে। একই সাথে তাদের এলাকা থেকে বের করে দেয়া হচ্ছে। আমার পৌর এলাকার সকল নেতা কর্মীদের হুমকি প্রদান ভয়ভিতি প্রদর্শন, পুলিশ এবং গোয়েন্দা বাহিনী কর্তৃক মিথ্যা মামলা ও গ্রেফতারের হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন বিকুল।
তিনি আরো বলেন, আমার সমর্থক ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে না
যাওয়ার জন্য স্থানীয় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছে। প্রকাশ্যে তারা বলে বেড়াচ্ছে ভোটের দিন তারা সকল ভোট কেন্দ্র দখল করে নেবে। আমাকে উদ্যেশ্য করে বিভিন্ন পথ সভায় হুমকি দিচ্ছে। এ কারনে আমি এবং আমার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন পর করছি।
তিনি নেতা কর্মীদের নিরাপত্তাসহ ভোটারদের নির্বিঘেœ ভোট দেয়ার নিশ্চয়তা। ভোটের সকল কার্যক্রম বিশেষত প্রচারণার ক্ষেত্রে কোন রকমের বাধা সৃষ্টি না করার জন্য নির্বাচন কমিশন এবং প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান তিনি। সেইসাথে প্রশাসনের নিরপেক্ষ ভ‚মিকা আশা করেন প্রার্থী। তিনি আরো উল্লেখ করেন উল্লেখ্য করেন প্রতিটি ঘটনা ও অভিযোগ গুলো লিখিত ও মোখিক ভাবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অবহিত করা হলেও এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সভাপতি ও রাসিক সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও রাজশাহী জেলা বিএনপি’র আহŸায়ক আবু সাঈদ চাঁদ, সদস্য সচিব অধ্যাপক বিশ্বনাথ সরকার, বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন উজ্জল। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা বিএনপি’র সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও বতর্মান আহŸায়ক কমিটির সদস্য গোলাম মোস্তফা মামুন। আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা মাহবুব অর রশিদ, মহানগর যুবদলের সভাপতি আবুল কালাম সুইট ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জাকির হোসেন রিমনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
এস/আর