রাজশাহীর চারঘাটের কুখ্যাত মাদক কারবারি কামাল ও তার বাহিনীর এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে সাহাবাজ(৪৫) নামের এক ব্যক্তি খুন হয়েছে।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে খুনের কাজে ব্যবহৃত রক্তমাখা দেশিয় রামদা উদ্ধার করেছে।
নিহত সাহাবাজ চারঘাট উপজেলার শলুয়া ইউপির তাতারপুর গ্রামের আব্দুল জব্বারের ছেলে।
মঙ্গলবার(১৪ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টার দিকে কুখ্যাত মাদক কারবারি কামাল ও তার বাহিনী সাহাবাজের উপর এ হামলা করে।
সাহাবাজ পেশায় কৃষক ছিলেন। সে শলুয়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য সাহাবুর রহমানের প্রতিবেশি।
তবে, একই গ্রামের মনোয়ারের ছেলে মাদক সম্রাট কামাল ও কফেল একটি বিশেষ বাহিনীর কথিত সোর্স পরিচয়ে এলাকার আমবাগানে মাদকের হাট বসাতেন। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মাদক সেবি ও মাদক-কারবারিরা আসেন কামাল ও কফেলের মাদকের হাটে। এলাকায় মাদকের প্রবনতা বেড়ে যাওয়ায়। দুই ভাইয়ের মাদকের হাট বন্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন স্থানীয় ইউপি মেম্বারসহ এলাকাবাসী।
এরই ধারাবাহিকতায় মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের জন্যই সাহাবাজ আজ হত্যাণ্ডের সিকার হয়েছে স্থানীয়রা জানান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তাঁতারপুর আক্কাসের মোড়ে মোটরসাইকেল রেখে বসে ছিলেন সাহাবাজ আলী (৪৫)। দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এমন সময় মনোয়ারের ছেলে মাদক সম্রাট কামাল তার বাহিনীর সদস্যরা মোটরসাইকেলে এসে ধারালো দেশিয় অস্ত্র দিয়ে আক্কাসের মোড়ে গিয়ে শাহবাজকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে । এতে ঘটনা স্থলেই সাহাবাজ আলী নিহত হন।
এসময় কামাল ও তার বাহিনীরা ইউপি সদস্যর কর্মী রফিক কাজল ও কালামকে ধাওয়া করলে তারা পলিয়ে গিয়ে হামলা থেকে রক্ষাপায়।
পরে সে খানে একটি মটোরসাইকেল ভাংচুর করে। এছাড়া ইউপি সদস্য সাহাবুর ও বড় ভাই বাবর আলীকে পেলে কুপিয়ে হত্যা করার ঘোষনা দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে যায় মাদক সম্রাট কামাল ও তার বাহিনীরা ।
পরে স্থানীয়রা আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান।
খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। ঘটনার পর ওই এলাকা থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চারঘাট মডেল থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম জানান, এলাকায় মাদক কারবারের প্রতিবাদ করে আসছিল সাহাবাজ আলী। গত ২০/২২ দিন পুর্বে তাঁতারপুর গ্রামের মনোয়ার হোসেনের ছেলে মাদক ব্যবসায়ী কামাল হোসেন ও তার সহদ্বর কফেলকে মাদকসহ আটক করে র্যাব-পুলিশের যৌথ দল। এরপর তাদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
ওসি বলেন, গত সোমবার মাদক কারবারি কামাল আদালতের মাধ্যমে জামিনে মুক্ত হয়ে এলাকায় আসে। ওই দিনই দুইভাইকে ধরিয়ে দেয়ার সন্দেহে সাহাবাজকে মোবাইল ফোনে হুমকি ধামকি দেয় কামাল।
এর পরের দিন মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে নিহত সাহাবাজ নিজ গ্রামের মন্ডলপাড়া এলাকার আক্কাসের মোড়ে বসে গল্প করার সময় অতর্কিতভাবে পেছন দিক থেকে হামলা চালায় কামালের নেতৃত্বে ৭/৮ জনের একটি দল। এ সময় তারা সাহাবাজকে এলোপাতারীভাবে কুপিয়ে জখম করে চলে যায়। এতে তার মৃত্যু হয়।
তিনি আরো বলেন, খুনের ঘটনার সাথে জড়িত কামালসহ অন্যান্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
জানাগেছে, ডজন খানেক মামলার আসামি কুখ্যাত মাদক সম্রাট কামাল কয়েকটি আমবাগানে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে হাট বসিয়ে রমরমা মাদকের বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
এছাড়াও একটি বিশেষ বাহিনীর কথিত সোর্স পরিচয়ে অনেক নিরীহ মানুষকে অস্ত্র ও মাদক দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
বিএ/