চারঘাট প্রতিনিধি: করোনাকালে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার ১৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে। করোনাকাল দীর্ঘায়িত হওয়ায় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নমূলক কাজ, সংস্কার ও শিক্ষকদের উচ্চতর বেতন-ভাতার আবেদন পাঠানোসংক্রান্ত কোনো দায়িত্বই ঠিকমতো করতে পারেনি এসব কমিটি।
এদিকে এ সময়ে স্বাভাবিক দাপ্তরিক কাজ সম্পাদন করতে না পারায় প্রতিষ্ঠানগুলোর নতুন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়াও ব্যাহত হয়েছে। এখন নানা দাপ্তরিক কাজেও সৃষ্টি হচ্ছে ব্যাঘাত।
উপজেলা শিক্ষা অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, করোনায় দাপ্তরিক কার্যক্রম বন্ধ থাকার সময়েই ১৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। এর মধ্যে দুটি ডিগ্রি কলেজও রয়েছে।
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটির নিয়মানুযায়ী, দুই বছর মেয়াদি কমিটি শেষ হওয়ার ছয় মাস আগে থেকে নতুন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করতে হয়। নির্বাচন পরিচালনা জন্য প্রিসাইডিং কর্মকর্তা চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে আবেদনসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়া শুরু করতে হয়। করোনাকাল চলায় এসব প্রক্রিয়াও শুরু করা যায়নি। যদিও করোনাকালের ছুটি শেষ হয়ে আসায় ও সীমিত আকারে কার্যক্রম শুরুর পর কয়েকটি প্রতিষ্ঠান কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান অস্থায়ী কমিটিও গঠন করেছে এর মধ্যে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান বলেন, করোনার কারণে স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় তাঁরা নতুন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করতে পারেননি। ছয় থেকে সাত মাস কমিটি না থাকায় প্রতিষ্ঠানের সব কার্যক্রম থমকে আছে। প্রতিষ্ঠানের কোনো কাজই করা যাচ্ছে না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার প্রতিস্বাক্ষরে কেবল মাসিক বেতন দাখিল ও উত্তোলনের কাজ চলছে।
এদিকে নতুন কমিটি না হওয়ায় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নমূলক কাজ, সংস্কার, শিক্ষকদের উচ্চতর বেতন-ভাতার আবেদন পাঠানো যাচ্ছে না। এ ছাড়া জরুরি কোনো সিদ্ধান্তও নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সবই ঢিমেতালে চলায় দুর্ভোগ বাড়ছে বলে ভুক্তভোগী শিক্ষকেরা জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনজন শিক্ষক অভিযোগ করেন, কমিটি না থাকায় তাঁদের উচ্চতর বেতনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে (মাউশি) পাঠানো যায়নি। এ কারণে তাঁরা আর্থিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এ বিষয়ে চারঘাট উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার জানান, পূর্ণাঙ্গ কমিটি বা কমিটির মেয়াদ না থাকলে নিয়োগ কার্যক্রম, উন্নয়ন, অর্থ ব্যয় ও দাপ্তরিক কাজ করা যায় না। তবে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে মেয়াদোত্তীর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোর কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হবে।
খবর২৪ঘন্টা/নই