চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে কেন্দ্র দখল,ভোট জালিয়াতি ও হামলার অভিযোগ এনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ (শিবগঞ্জ) আসনের ৬০ টি কেন্দ্রে পূণঃ ভোট গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী অধ্যাপক মো.শাহজাহান মিঞা। রোববার বিকেলে নিজ বাসভবনে জরুরী এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান। তিনি অভিযোগ করে বলেন,শনিবার দিবাগত রাত ১২টা পর হতে পুলিশের সহযোগিতায় আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীরা দুর্লভপুর,বিনোদপুর ও শ্যামপুর ইউনিয়নের ৪০টি কেন্দ্রে প্রবেশ করে ধানের শীষের এজেন্টদের বের করে দিয়ে ব্যালট পেপারে নৌকার শীল মারে বাক্সে ভরে।
এর পর দুপুরের দিকে উপজেলার শাহবাজপুর,মোবারকপুর,উজিরপুর,পাঁকা ইউনিয়নের আরও প্রায় ২০টি কেন্দ্র দখল করে নৌকায় জাল ভোট প্রদান করে ব্যালট বাক্সগুলো নৌকার সমর্থকদের নিয়ন্ত্রনে রাখে। তাঁর অভিযোগ-একাধীকবার রিটার্নিং অফিসারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানোর পরেও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। তিনি জানান,দূর্লভপুর ইউনিয়নের চরজগ্নাথপুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিয়ে বের হওয়ার সময় পুলিশ বিএনপির কর্মীদের উপর গুলি চালায়। এতে ৫ নেতা কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়। এছাড়াও পূর্বশ্যামপুর,বিনোদপুর,কালিগঞ্জ,উজিরপুর ও সাহাপাড়ায় আরও অন্তত ৪০ নেতা কর্মীকে আহত করা হয়।
তাদের মধ্যে আহতরা হলেন-চরজগন্নাথপুর এলাকার মো.জুয়েল,জালাল,নজরুল,সেরাজুল মিন্টু,ধানের শীষের এজেন্ট ১৫ রশিয়া গ্রামের সেলিম রেজা,আবদুর রাজ্জাক,বিএনপি কর্মী আফজাল হোসেন,গোপালপুরের শফিউল ইসলাম,সামেদ আলী,হাদিনগরের মানজিল,শামিম ও কালাম ও বিনোদপুর ইউনিয়নের কালিগঞ্জ গ্রামের গুরুত্বর আহত বজলুর রহমান। সহিংসতায় আহত আওয়ামী লীগ কর্মীরা হলেন,হাদিনগর গ্রামের আকালু,পৌর এলাকার পিঠালী তলার নওসাদ আলী,বড়চক এলাকার সাজেমূল হক,আসাদুল হক ও বিনোদতপুরের কফিল উদ্দীন। এদের শিবগঞ্জ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অপর দিকে
উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের আইড়ামারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও বাখোরালী বিশ্বনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলাকালে দুই কেন্দ্রের পাশে প্রায় ৮-১৫টি ককটেল বিস্ফোরণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা ও বিনোদপুর কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ রুহুল আমিন। তিনি জানিয়েছেন- বিনোদপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি কফিল উদ্দিন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ভোট দেয়ার জন্য ভোট কেন্দ্রে যাবার সময় তার মাথায় ও হাতে আঘাত করে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। ককটেল বিস্ফোরণে কালিগঞ্জ এলাকার আবদুল গফুরের ছেলে জগলুর রহমান গুরুত্বর আহত হয়। তাদের দুজনকে চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
একই সময় তেলকুপি ও আজমতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে কিছুক্ষণ ভোটগ্রহণ স্থগিত থাকার পর পুনঃরায় ভোটগ্রহণ শুরু হয় বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রিজাইডিং অফিসাররা। শেষ সংবাদ পাওয়া পর্যন্ত ভোটের সহিংসতায় বিএনপি ও আওয়ামী লীগের ১০-১২ জন নেতাকর্মী শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছে বলে হাসপাতাল সুত্রে জানাগেছে। এছাড়া ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে পৃথক সংবাদ সম্মেলন করেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ৩ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী মো.হারুনুর রশিদ ও স্বতন্ত্র আপেল প্রতীকের প্রার্থী জামায়াত নেতা নুরূল ইসলাম বুলবুল। এদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ২ নাচোল,গোমস্তাপুর ভোলাহাট আসনে সুষ্ঠভাবে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে স্থানীয় ভোটার ও আইনশৃঙ্ঘলা বাহিনীরসদস্যরা জানিয়েছে।
প্রসঙ্গত,চাঁপাইনবাবগঞ্জের তিনটি আসনে মোট ভোটার সঙ্খ্যা রয়েছে,১১লাখ ৭৫ হাজার ৭শ ৬৩ জন। মোট কেন্দ্র সঙ্খ্যা রয়েছে,৪৬৭।আইনশৃঙ্খ রক্ষায় দায়িত্ব পালন করছেন প্রায় সাড়ে ৭ হাজার সদস্য। তিনটি আসনে ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছে ২৮জন।
খবর ২৪ঘণ্টা/ নই