চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এবারই প্রথম কোনও ওয়ার্ডে জয় পাননি বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থীরা। এটি নির্বাচনের বেসরকারি ফলাফল। অন্যদিকে নতুন কাউন্সিলদের জয়জয়কার হয়েছে। নগরীর ৩৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে সবকটিতে জয়ী হয়েছে আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে ১৯টিতে জয় নতুনদের।
এবারের নির্বাচনে ৪১টি ওয়ার্ডের মধ্যে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে ৩৯ ওয়ার্ডে। নগরের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে তারেক সোলেমান সেলিমের মৃত্যুতে ওই ওয়ার্ডের ভোট স্থগিত করা হয়। আর ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
এবার গতবারের ১৩ জন কাউন্সিলরকে সমর্থন দেয়নি আওয়ামী লীগ। তবে দলের সমর্থন নিয়ে নতুন যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের মধ্যে জয় পেয়েছেন ১৯ জন।
তারা হলেন- ৩ নম্বর ওয়ার্ডে মো. শফিকুল ইসলাম, ১ নম্বর ওয়ার্ডে গাজী মো. শফিউল আজিম, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে কাজী নুরুল আমিন, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে শহীদুল আলম, ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে আবদুস সবুর লিটন, ৪০ নম্বর ওয়ার্ডে আবদুল বারেক, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে এসরারুর হক, ১১ নম্বর ওয়ার্ডে মোহাম্মদ ইসমাইল, ১২ নম্বর ওয়ার্ডে মো. নুরুল আমিন, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে আবুল হাসনাত মোহাম্মদ বেলাল, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে নুরুল আলম, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে মো. ইলিয়াছ, ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে শেখ জাফরুল হায়দার চৌধুরী, ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে নজরুল ইসলাম বাহাদুর, ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে পুলক খাস্তগীর, ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে মোর্শেদ আলী, ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডে আবদুল মান্নান ও ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে আতাউল্লাহ চৌধুরী।
অন্য বিজয়ী কাউন্সিলররা হলেন, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে আশরাফুল আলম, ২ নম্বর ওয়ার্ডে সাহেদ ইকবাল বাবু, ৭ নম্বর ওয়ার্ডে মোবারক আলী, ৮ নম্বর ওয়ার্ডে মোরশেদ আলম, ৯ নম্বর ওয়ার্ডে জহুরুল আলম জসিম, ২০ নম্বর ওয়ার্ডে চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, ১০ নম্বর ওয়ার্ডে নিছার উদ্দিন আহমেদ, ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়াস উদ্দিন, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে নাজমুল হক ডিউক, ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে সাইয়েদ গোলাম হায়দার মিন্টু, ২১ নম্বর ওয়ার্ডে শৈবাল দাশ সুমন, ২২ নম্বরে ওয়ার্ডে মোহাম্মদ সলিম উল্লাহ বাচ্চু, ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে মোহাম্মদ জাবেদ, ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে গোলাম মোহাম্মদ জোবায়ের, ৪১ নম্বর ওয়ার্ডে সালেহ আহমদ চৌধুরী, ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে জহর লাল হাজারী, ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে হাজী নুরুল হক, ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী, ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে জিয়াউল হক সুমন ও ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে হাসান মুরাদ বিপ্লব।
এদিকে চট্টগ্রামের নগরপিতা হয়েছেন আওয়ামী লীগের (নৌকা প্রতীক) প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী। চসিক নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন তিনি।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন তিন লাখ ৬৯ হাজার ২৪৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৫২ হাজার ৪৮৯ ভোট।
বুধবার সন্ধ্যায় নগরের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেসিয়াম হলে ফলাফল ঘোষণা শুরু হয়। ফলাফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং অফিসার মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান।
এর আগে বুধবার (২৭ জানুয়ারি) সকাল আটটা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে বিকেল চারটা পর্যন্ত চলে। নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র দখল নিতে প্রকাশ্যে গোলাগুলি, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, সংঘর্ষ-সহিংসতা, প্রাণহানি, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ভাঙচুর, বর্জনসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে।
বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনে নানা অনিয়মের অভিযোগ তোলা হলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের তরফ থেকে ভোটকে উৎসবমুখর বলা হয়েছে। নির্বাচনী কর্মকর্তারাও বলেছেন, ভোট শান্তিপূর্ণ হয়েছে। এরপরেই শুরু হয় ভোট গণনা।
জেএন