চতুর্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও সহিংসতার ঘটনায় ঘটেছে। গতকাল ভোট চলাকালে বিভিন্ন স্থানে ঘটেছে কেন্দ্র দখল, জালভোট, ব্যালট পেপার ছিনতাই, সংঘর্ষ, গুলি এবং ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা। ভোট শেষে ব্যালট বাক্স ছিনতাইকালে পুলিশের গুলিতে ঠাকুরগাঁও, পটুয়াখালী ও সিলেটে তিনজন নিহত হয়েছেন। কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে ভোট গণনা শেষে ফেরার পথে পুলিশ ও নির্বাচন কর্মকর্তাদের ওপর হামলা চালিয়ে নির্বাচনী সামগ্রী ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেছে পরাজিত তিন প্রার্থীর সমর্থকরা। এ সময় পুলিশের কাজে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাসসহ দু’টি গাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়।
এর আগে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে ভোটের দিন সহিংসতায় যথাক্রমে ৬ ও ৭ জন নিহত হয়েছিলেন। আর গতকাল বিভিন্ন স্থানে নির্বাচনী সংঘাতে আহত হয়েছেন ৫২ জন। এ পর্যন্ত দেশজুড়ে নির্বাচনী সংঘাতে ৭০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।
এদিকে ভোটের ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রাজাগাঁও ইউপিতে পরাজিত এক ইউপি সদস্য প্রার্থীর সমর্থকেরা পুলিশের ওপর হামলা চালান। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ গুলি চালালে হামিদুর রহমান (৬৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হন।
গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে দক্ষিণ আসাননগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
ওদিকে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউপি নির্বাচনে ভোট পুনর্গণনার দাবিতে দুই সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন নিহত হয়েছেন। গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের নয়ারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আবদুল খালেক (৪০) সদস্য প্রার্থী মো. জিয়াউর রহমানের (ভ্যানগাড়ি) সমর্থক।
এদিকে সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলায় ফুলবাড়ি ইউপি নির্বাচন ঘিরে সহিংসতায় আবদুস সালাম (৪৫) নামের এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। গতকাল রাতে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, রাত ৮টার দিকে পরাজিত একজন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর সমর্থকেরা বৈটিকর এলাকায় সিলেট-জকিগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে রাখেন। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করতে চাইলে অবরোধকারীরা পুলিশের ওপর চড়াও হন। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েকটি গুলি ছোড়ে। এ সময় সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। আহত ব্যক্তিদের সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ সময় আবদুস সালামকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
ওদিকে রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার সহস্রাম ধূলদিয়া ইউনিয়নের গৌরিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের ভোট গণনা শেষে ফেরার পথে পুলিশ ও নির্বাচন কর্মকর্তাদের ওপর হামলা পরাজিত তিন প্রার্থীর সমর্থকেরা। এসময় তারা ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশের কাজে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাসসহ দু’টি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অন্তত ৩০ রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়ে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা।
বিএ/