যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে সারাবিশ্ব থেকে প্রতিক্রিয়া দেয়া হলেও চীন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়া হয়নি। দেশটির সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প আমলে বিরাজ করছে এক উত্তেজনাকর সম্পর্ক। একদিকে বাণিজ্যযুদ্ধ, অন্যদিকে করোনা ভাইরাসকে ‘চায়না ভাইরাস’ নামে অভিহিত করে চীনকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করেছেন ট্রাম্প। এর প্রেক্ষিতে সরকারি পর্যায়ে কোনো ভাষ্য দেয়া না হলেও সরকারি মিডিয়া গ্লোবাল টাইমস তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে একটি সম্পাদকীয় প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, চীন ইস্যুতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। অনেক ট্রাম্পকার্ড এরই মধ্যে অসাড় প্রমাণিত হয়েছে। ফলে চীন ইস্যুতে কঠোর অবস্থান নেয়ার জন্য বাইডেন প্রশাসনের জন্য খুব কমই রিসোর্স রেখে যাচ্ছেন তিনি। খোলাখুলিভাবে বলতে গেছে, যুক্তরাষ্ট্র-চীনের মধ্যকার সম্পর্ক এ যাবতকালের মধ্যে খুব বেশি অস্বাভাবিক পর্যায়ে রয়েছে।
এই উত্তেজনা দুই দেশের প্রকৃত স্বার্থকে ভিন্নপথে নিয়ে গেছে। গত কয়েক বছরে বেইজিংকে শত্রু হিসেবে দেখে এসেছে ওয়াশিংটন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এই দুটি দেশ একে অন্যের প্রতিপক্ষ নয়। ‘ড্রপ ইলিউশন্স ওভার চায়না-ইউএস রিলেশন্স, বাট ডোন্ট গিভ আপ ইফোর্ট’ শীর্ষক সম্পাদকীয়তে আরো বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট যে ডেমোক্রেট জো বাইডেন হচ্ছেন এটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের ভাবধারা যা-ই হোক না কেন তা উপেক্ষা করে যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমা মিত্ররা বাইডেনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। ট্রাম্পের চার বছর ক্ষমতার মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতির অধীনে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন হয়েছে চীনের সঙ্গে সম্পর্কে। সব দিক দিয়ে দমনপীড়ন করা হয়েছে এবং চীনকে জব্দ করা হয়েছে। এটা ছিল তাদের সবচেয়ে বড় কূটনৈতিক লিগেসি। এই জিনিসটিই ট্রাম্প রেখে যাবেন। এখন প্রশ্ন হলো চীনের সঙ্গে ট্রাম্প সম্পর্ককে যে অবস্থায় রেখে যাচ্ছেন, তা কতদূর টেনে নেবেন বাইডেন?
বেশিরভাগ বিশ্লেষক মনে করেন ট্রাম্প প্রশাসন উচ্চ মাত্রার সংঘাত শুরু করেছেন চীনের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে রয়েছে বাণিজ্যযুদ্ধ। এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার সাধারণ সম্পর্কের পরিবেশ নতুন করে স্থাপিত হয়েছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের এলিটদের চীনের বিষয়ে ভাবনা পরিবর্তন করিয়েছে। যদি বাইডেন ক্ষমতা নেন, তাহলে তিনিও চীনের ইস্যুতে কঠোর অবস্থান নিতে পারেন। সিনজিয়াং এবং হংকং ইস্যু সহ চীনে মানবাধিকারের ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। বাইডেন প্রশাসন থেকে এসব সম্ভবত বাদ যাবে না। এমনকি ডেমোক্রেটিক সরকার আরো দূর অগ্রসর হতে পারে। মোদ্দাকথা হলো, গুরুত্বপূর্ণ কিছু ইস্যুতে চীনের ওপর যুক্তরাষ্ট্র তার চাপ শিথিল করবে বলে মনে হয় না।
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।