১৯৮৪ সালে ঘোষিত ০৮ টি ইউনিয়ন ও ০১ পৌরসভা নিয়ে গঠিত গোমস্তাপুর উপজেলা এর আয়তন ৩ শ ১৮. ১৩ বর্গকিলোমিটার। জনসংখ্যা প্রায় ৩ লক্ষ । প্রতিদিন কয়েক শত জনগন চিকিৎসা নিতে আসে গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্হ্য কমপ্লেক্সে গুরুত্বর অসুস্হ রোগীকে জেলা সদর অথবা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হলে জরুরী প্রয়োজনের সময় পাওয়া যায়না অ্যাম্বুলেন্স। পাশের উপজেলা থেকে অ্যাম্বুলেন্স এনে রোগী পাঠাতে হয়। এভাবেই চলছে গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স সেবা। কারণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৪টি অ্যাম্বুলেন্সই বর্তমানে অকেজো। সর্বশেষ প্রায় ৮ মাস পূর্বে চালু ১টি অ্যাম্বুলেন্সের যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়ার পর আর ব্যবহার হয়নি। অযত্নে -অবহেলায় পড়ে থেকে অ্যাম্বুলেন্সগুলো এখন অকেজো হয়ে গেছে। সরেজমিনে দেখা গেছে মরিচা ধরেছে ৪টি অ্যাম্বুলেন্সে। সেগুলো খোলা আকাশের নিচে পড়ে রয়েছে। ভিতরে থাকা অনেক যন্ত্রাংশ এখন
আর নেই। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিন বছর আগে একটি অ্যাম্বুলেন্স আসে। কিছুদিন চলার পর চাকা নষ্ট হয়ে গেলে সেটা আর ভালো করা হয়নি। অনেকদিন এই ভাবে পড়ে থেকে পুরোপুরি অকেজো হয়ে গেছে। এভাবে পরপর প্রাপ্ত ৪টি অ্যাম্বুলেন্সই অকেজো। অনেককেই উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা সদর অথবা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে হয়। কিন্তু প্রতিদিন একজন রোগীকে অ্যাম্বুলেন্স সেবা দিতে পারে কর্তৃপক্ষ। আর যে অ্যাম্বুলেন্সটি এখন আছে সেটা আবার নাচোল উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চেয়ে নেয়া হয়। তবু এই অ্যাম্বুলেন্সটিরও যন্ত্রাংশের ত্রুটি মাঝে মাঝে লক্ষ্য করা যায়। যাতে করে রোগীরা ঠিকমত সেবা পাচ্ছে না। তখন যেতে হয় মাইক্রো ভাড়া করে। জেলা সদর ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজনরা বলেন, গ্রামের অধিকাংশ মানুষই স্বল্প আয়ের। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি মাত্র অ্যাম্বুলেন্স একজন রোগী নিয়ে অন্যত্র চলে গেলে বাকি রোগীদের বিপাকে পড়তে হয় অধিক মূল্যে মাইক্রো ভাড়া করতে হয়। অ্যাম্বুলেন্সগুলো মেরামতের জন্য তারা কর্তৃপক্ষের নিকট অনুরোধ জানিয়েছেন।
মেডিকেল সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা আজিজুর রহমান আজু ও জাহিদ হাসান উজ্জ্বল জানান, এলাকার জনসাধানের স্বার্থে অতি দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস চালু করা প্রয়োজন। কারন অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস চালু না থাকায় জনগনকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সমাজকর্মী মঈন উদ্দিন বলেন, এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স অনিয়ম ও দুর্নীতিতে ছড়িয়ে গেছে। সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে হাতে গুনা কয়েকজন রোগী সেবা পায়। এখানে ৪টি অ্যাম্বুলেন্স সামান্য কিছু অর্থের কারণে মেরামত হচ্ছে না। খোলা আকাশের নিচে ফেলে রাখা হয়েছে। যাতে করে দীর্ঘদিন থাকার কারণে ৪টি অ্যাম্বুলেন্স প্রায় নষ্ট হয়ে গেছে। অ্যাম্বুলেন্স গুলো মেরামত করা হলে অনেক রোগী ভালো সেবা পাবে।
এ বিষয়ে গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাসুদ পারভেজ বলেন, অকেজো অ্যাম্বুলেন্সগুলো মেরামতের অযোগ্য। এগুলো মেরামতের অর্থ দিয়ে নতুন একটি অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যাবে। তবে নাচোল থেকে প্রাপ্ত আরেকটি এ্যাম্বুলেন্স সচল থাকায় পুরোনো অ্যাম্বুলেন্সগুলো আর মেরামত করা হচ্ছে না। নতুন অ্যাম্বুলেন্স পাওয়ার জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবর জানানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সিভিল সার্জন ডাঃ জাহিদ নজরুল জানান নতুন অ্যাম্বুলেন্স এর জন্য স্বাহ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর পত্র দেয়া হয়েছে আর পুরাতনগুলো মেরামত করে তেমন কোন লাভ হবে না বারবার অকেজো হতেই থাকবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ- ০২ আসনের সাংসদ আলহাজ্ব আমিনুল ইসলাম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান আমি এর পূর্বে মেরামতের জন্য অর্থ প্রদান করেছি বারবার করা সম্ভব নয়। স্বাস্হ্য দপ্তর নিজস্ব তহবিল থেকেই এগুলো করতে পারে। আমি স্বাস্হ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এর সাথে কথা বলেছি নতুন অ্যাম্বুলেন্স বরাদ্দের জন্য যত দ্রুত সম্ভব হয় বিষয়টি দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।
এস/আর