নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহীর গোদাগাড়ী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ উপজেলা সদরের চর কোদালকাঠি মধ্যচর এলাকা থেকে জেএমবির শীর্ষ নেতাসহ ৫ জন সক্রিয় সদস্যকে আটক করেছে র্যাপিড এ্যাকশান ব্যাটালিয়ান র্যাব-৫। জেএমবির সক্রিয়া সদস্যদের গ্রেফতারের পাশপাশি ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র, গুলি, ম্যাগজিন, উগ্রবাদী বই, লিফলেট ও বোমা তৈরির বিপুল পরিমাণ সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। আটককৃতরা হলো, গোদাগাড়ী উপজেলার আলিপুর বারইপাড়া এলাকার মৃত জামাল উদ্দীনের ছেলে আমিনুল ইসলাম(৩২), চর বোয়ালমারী আদর্শ গ্রাম এলাকার মকবুল হোসেনের ছেলে মোশারফ হোসেন@মুরসালিন(২২), গোলাম রাব্বানীর ছেলে মোঃইসমাইল হোসেন (৩২), চাঁপাইনবাবগঞ্জ উপজেলা সদরের পশ্চিম কোদালকাটি মধ্যচর গ্রামের মৃত রুস্তম আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম (৪০) ও মৃত আইনুদ্দীন মন্ডলের ছেলে আব্দুল মতিন @ মাতিন(৪০)। গত বৃহস্পতিবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের পৃথক স্থান থেকে আটক করা হয়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশী পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, চার রাউন্ড গুলি, ২০০ গ্রাম গান পাউডার, হ্যান্ড নোট ৭ টি, ৪টি জিহাদী বই, পাসপোর্ট ১ টি, এনআইডি ১টি ও বোমা তৈরির বিভিন্ন সরাঞ্জামাদী উদ্ধার করা হয়।
র্যাব জানায়, গোদাগাড়ীর জেএমবি’র আঞ্চলিক শীর্ষ নেতা আমিনুল ইসলাম জিজ্ঞাসাবাদে জানায় যে, সে তার মামা (আবু সাঈদ-পলাতক জেএমবি নেতা) এর মাধ্যমে জেএমবিতে যোগদান করে। জেএমবি সংগঠনে যোগদানের পর সে গোদাগাড়ী ডাইংপাড়া গোলচত্ত্বরের পাশে ছদ্মবেশী সুতার ব্যবসার আড়ালে সাধারণ লোকের চোখকে ফাঁকি দিয়ে সংগঠনের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে থাকে। কিন্তু চলতি বছরের ১৩ ও১৪ মে গোদাগাড়ী ও বেলপুকুর থানায় তাদের সংগঠনের সক্রিয় কিছু সদস্য র্যাব কর্তৃক গ্রেফতার হলে আমিনুল আত্মগোপন করে এবং সংগঠনকে সুসংহত করার জন্য গোদাগাড়ী থানার ওপারস্থ সীমান্তবর্তী এলাকা বগচর, চর কোদালকাঠি, চর বোয়ারমাড়ী ও মধ্যচরে আত্মগোপন করে সংগঠনের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে থাকে। সেখানে অবস্থান করে জেএমবির সদস্যদের বিভিন্ন নির্দেশনা, ইয়ানতের টাকা ও উগ্রবাদী বই সংগ্রহ ও বিতরণএবং সংগঠনের বিবিধ কার্যক্রম পরিচালনাকরতে থাকে। আমিনুলের অন্যতম সহযোগী মোশারফ হোসেন @ মুরসালিন স্বীকার করে যে, ২০১৫ সালের শুরুর দিকে আমিনুলের দোকান হতে সুতা ক্রয়কে কেন্দ্র করে তার সাথে পরিচয় হয় এবং
পরবর্তীতে তার মাধ্যমে সে জেএমবি সংগঠনে যোগ দেয়। সংগঠনে যোগ দেওয়ার পর থেকেই জেএমবি’র পলাতক সদস্যদের আশ্রয়, জেএমবি সংগঠনের সদস্যদের ভারত-বাংলাদেশ আর্ন্তজাতিক বর্ডার পারাপার এবং সংগঠনের জন্যঅস্ত্র, বিস্ফোরক দ্রব্যাদি সংগ্রহ করাই ছিল তার প্রধান কাজ (তার বাড়ী বাংলাদেশ-ভারত সীমানা প্রাচীরের খুব নিকটবর্তী)। এছাড়াও সে ছদ্মবেশী ডাক্তারী পেশার আড়ালে চরাঞ্চলে সংগঠনকে নিয়মিত ইয়ানতের টাকা প্রদান ও সরলমনা মানুষকে সংগঠনে যোগ দেওয়ার দাওয়াত দিত। ইসমাইল হোসেন, মোঃ রফিকুল ইসলাম, মোঃ আব্দুল মতিন @ মতিন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে যে, তারা ২০১৫ সালে স্থানীয় সাহাবুল (র্যাব কর্তৃক গ্রেফতার) এর মাধ্যমে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন জেএমবিতে যোগদান করে। পরবর্তীতে তারা এই সংগঠনকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে দলীয় মিটিং, উগ্রবাদী বই বিতরণ, ইয়ানতের টাকা প্রদান ও আদায় ও সংগঠনে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য দাওয়াত ইত্যাদি বিভিন্ন কর্মকান্ডে স্বতঃস্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ করে।
খবর২৪ঘণ্টা/এমকে