গোমস্তাপুর (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে গাছে গাছে সোনালী মুকুলের মাঝে গুটি আমের ব্যাপক সমারোহ দেখা দিয়েছে। আমের রাজধানী নামে খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জের অন্যান্য স্থানের মতো গোমস্তাপুরেও আম গাছগুলোতে মুকুলের মাঝে গুটি আম দেখা দেয়ায় আম চাষিরা গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে। গুটি আমের আগমনে কর্মব্যস্ত হয়ে পড়েছে গোমস্তাপুর উপজেলার বাগান মালিক ও আম ব্যবসায়ীরা। আমের চাষি, ব্যবসায়ী ও বাগান মালিকরা মৌসুমকে ঘিরে গাছে গাছে মুকুলের মাঝে মাঝে গুটি আম দেখে আগাম স্বপ্ন দেখা শুরু করে দিয়েছে। এবার মুকূলের মাঝে গুটি আমের ব্যাপক সমারোহ হওয়ায় তাদের স্বপ্নের বাস্তব রূপ ঘটবে বলে আশা করেন। গাছে গাছে মুকুলের জন্য চারিদিকে ছড়াচ্ছে মুকুলের সুবাসিত ঘ্রাণ। মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে এলাকার আকাশ বাতাস মুখরিত হয়ে উঠেছে। প্রতি বছর আম মৌসুমকে ঘিরে তিনটি ধাপে এ আম গাছগুলো বিক্রি হয়ে থাকে। এর মধ্যে পাতাতে একবার মুকুলে একবার ও সর্বশেষ ফলে। এবার দেরিতে মুকুল আসলেও মুকুলের সমারোহ ভালো হওয়ায় আমের বাম্পার ফলনের আশা করছে আম চাষিরা।
চলতি বছর দেরীতে মুকুল আসলেও মুকুলের সমারোহ ভালো হওয়ায় এরইমধ্যে আমের গুটি ধরতে শুরু করেছে। যার ফলে আম চাষিরা বেশ খোশমেজাজে রয়েছে ও বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে শুরু করে দিয়েছে।। কিছু কিছু আম বাগানগুলোতে এখনও গাছে গাছে দৃশ্যমান সোনালী মুকুলে মুকুলে ছেয়ে গেছে সারা উপজেলা। তাপমাত্রা পরিবর্তনের সাথে সাথে আম গাছগুলোতে আমের মুকুল ফুটে গুটি ধরতে শুরু করে দিয়েছে। মুকুলের গন্ধে আম বাগানগুলোতে মৌমাছির আনাগোনা শুরু হয়েছে। মধু আহরণ করতে আসা মৌমাছির গুনগুন শব্দে আম বাগানগুলোতে এক মুখরিত পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। মৌসুমের শুরুতে আম বাগানগুলোতে একটু দেরিতে মুকুল আসলেও মুকুলের সমারোহ ভালো হওয়ায় আম চাষিদের মধ্যে সোনালী স্বপ্ন দোলা দিচ্ছে। এ বছর প্রায় ১৭টি জাতের আম চাষ করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য আমগুলো হলো ফজলি,ল্যাংড়া,ক্ষিরসাপাত,গোপালভোগ,আম্রপালি, মল্লিকা, লক্ষণভোগ, বোম্বাই, গুটি, বারি-৪, গৌরমতি ইত্যাদি।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর সমগ্র উপজেলায় ৪১৭৫ হেক্টর জমিতে আম চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে আম গাছের সংখ্যা হচ্ছে ৩ লাখ ৪০ হাজার ১২৫টি। এবার মুকুল আসার হার ৮৮%। গত কয়েক দিন পূর্বে বৃষ্টি হওয়ায় ও মহালাগার কারণে আমের মুকুলের কিছুটা ক্ষতি হলেও বর্তমানে আবহাওয়া অনুকুল থাকায় গুটি আমের জন্য সহায়ক বলে সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
আম চাষি মাইনুল বিশ্বাস জানান, এবছর এ মৌসুমে দেরিতে মুকুল আশায় এবং হঠাৎ বৃষ্টিপাতের কারণে আমের ফলনে বেশ প্রভাব পড়েছে। এখনো অনেক গাছে গুটি আম ধরেনি। তবে আবহাওয়া শুষ্ক থাকলে দেরিতে আসা মুকুলগুলোতে গুটি আম ধরার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন জানান, আম বাগান পরিচর্যা বিষয়ক একটি লিফলেট ইতিমধ্যে সমগ্র উপজেলায় আম চাষীদের মাঝে সরবরাহ করা হয়েছে। আমের মুকুল থেকে আম ফল ভাঙ্গা পর্যন্ত এ লিফলেট বিতরণ চলবে বলে নির্দেশনা রয়েছে। এছাড়া আম বাগান পরিচর্যায় কখন কি ধরনের কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে তার প্রেসক্রিপশন ইউনিয়ন পর্যায়ে কর্মরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের প্রদান করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কেমিক্যালমুক্ত আম উৎপাদনে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও আম চাষিদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। স¤প্রতি বৃষ্টিপাত ও মহালাগার কারণে ২০% মুকুলের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে তিনি জানান। আর যদি নতুন করে বৃষ্টিপাত না হয় তাহলে আমের ভাল ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
খবর২৪ঘন্টা/নই