গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ব্রহ্মপুত্রের ঢলে সদর উপজেলার কামারজানী ইউনিয়নের খারজানি এবং কুন্দেরপাড়া চরের অন্তত ১০০টি বাড়ি ধসে পড়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন অন্তত ৪০ হাজার মানুষ। অনেকেই বাড়িঘর ছেড়ে উঁচু স্থান ও আশ্রয়কেন্দ্রে চলে গেছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে শুক্রবার (৫ জুলাই) দুপুর ১২টায় গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্রের পানি ফুলছড়ি ঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং ঘাঘট নদীর পানি শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে ৩৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধির কারণে ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাইরে সদর উপজেলার কামারজানি, মোল্লারচর, গিদারি, ঘাগোয়া, ফুলছড়ি উপজেলার এরেন্ডাবাড়ি, ফুলছড়ি, ফজলুপুর ও গজারিয়া ইউনিয়ন সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া এবং সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর, কাপাসিয়া ও হরিপুরসহ ২৪টি ইউনিয়নের অন্তত ১৬৫টি চর ডুবে বাড়িঘরের চাল ছুঁইছুঁই করছে বন্যার পানি।
গাইবান্ধা জেলায় অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত এবং উজানের ঢলের কারণে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতিতে সদর উপজেলার কামারজানী ইউনিয়নের খারজানি এবং কুন্দেরপাড়া গণ উন্নয়ন একাডেমী আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শন করেন গাইবান্ধা জেলার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী নাহিদ রসুল।
এ সময় তিনি বন্যাকবলিত মানুষের সঙ্গে কথা বলেন, তাদের সাময়িক সমস্যার কথা শোনেন এবং জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহায়তার আশ্বাস প্রদান করেন।
তিনি বন্যার্তদের মাঝে চাল, শুকনা খাবার, টিউবওয়েল, ডিগনিটি কিট (মহিলাদের মর্যাদা সুরক্ষার জন্যে প্রয়োজনীয় সামগ্রী), পানি বিশুদ্ধিকরণ ট্যাবলেট ও জেরিক্যান, গো-খাদ্য, গবাদি পশুর জন্যে বিভিন্ন রকমের ভিটামিন ও নগদ অর্থ বিতরণ করেন। এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি এবং উন্নয়ন ও মানবসম্পদ), গাইবান্ধা সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারী কমিশনার(ভূমি), গাইবান্ধা সদরসহ উপজেলা পর্যায়ের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ইউএনডিপিএ কর্মকর্তা, গণ উন্নয়ন কেন্দ্র ও ফ্রেন্ডশিপসহ অন্যান্য এনজিওর কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়াও ফুলছড়ি উপজেলায় ফুলছড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে পানিবন্দি মানুষের মাঝে চাল ও শুকনা খাবার ইত্যাদি বিতরণ করা হয়। সাঘাটা উপজেলায় নদী পাড়ের কিছু কিছু পয়েন্টে ভাঙনের সম্ভাবনা সৃষ্টি হওয়ায় জিও ব্যাগ ডাম্পিং, রাস্তা ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ মেরামত করা হয়। হলদিয়া ইউনিয়নে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় হরিপুর ইউনিয়নসহ অন্যান্য ইউনিয়নে বন্যাকবলিত মানুষের মাঝে চাল, শিশু খাদ্য, গো-খাদ্য, নগদ অর্থ, টর্চ লাইটসহ অন্যান্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।
গাইবান্ধার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাফিজুল হক গণমাধ্যমকে জানান, উজানের ঢলে অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে ঘাঘট ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বিএ..