1. [email protected] : Abir k24 : Abir k24
  2. [email protected] : bulbul ob : bulbul ob
  3. [email protected] : Ea Shihab : Ea Shihab
  4. [email protected] : khobor : khobor 24
  5. [email protected] : অনলাইন ভার্সন : অনলাইন ভার্সন
  6. [email protected] : omor faruk : omor faruk
  7. [email protected] : R khan : R khan
খেলাপি ঋণই দেশে ব্যাংক সঙ্কটের মূল কারণঃ ফখরুল - খবর ২৪ ঘণ্টা
রবিবার, ১২ জানয়ারী ২০২৫, ০২:১৩ অপরাহ্ন

খেলাপি ঋণই দেশে ব্যাংক সঙ্কটের মূল কারণঃ ফখরুল

  • প্রকাশের সময় : বৃস্পতিবার, ১০ মে, ২০১৮

খবর২৪ঘণ্টা.কম, ডেস্কখেলাপি ঋণই দেশে ব্যাংক সঙ্কটের মূল কারণ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম
আলমগীর।

তিনি বলেন, ঋণের নামে গ্রাহকদের হাজার কোটি টাকার আমানত লুটে নিচ্ছে খেলাপিরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এক ডেপুটি গভর্নরের মতে, খেলাপির সাগরে ভাসছে ব্যাংকিং খাত।’ অবলোপনের দোহাই দিয়ে তালিকা থেকে মুছে ফেলা হচ্ছে খেলাপিদের নাম।

বৃহস্পতিবার বিকেলে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী- জুন ২০১৭ শেষে সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকে মন্দ-ঋণ বেড়ে হয়েছে ৬১ হাজার ৬০২ কোটি টাকা। এর সঙ্গে অবলোপিত ৪৫ হাজার কোটি টাকা, বিভিন্ন অপকৌশলে (ভূয়া দলিল, ভূয়া কোম্পানি, ভূয়া এলসি ইত্যাদি) ৬৫ হাজার কোটি টাকা এবং বাংলাদেশ ব্যাংক কোষাগার থেকে ৮০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রায় ১ লক্ষ ৭২ হাজার ৪০২ কোটি টাকা ব্যাংক থেকে লুট হয়েছে। অনেকের মতে, ৪৫ হাজার কোটি টাকা অবলোপন করা হয়েছে বলে যে তথ্য প্রকাশ হয়েছে তা সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে এ অর্থের পরিমাণ দেড় থেকে দুই লাখ কোটি টাকার কম নয়। ’

তিনি বলেন, খেলাপি ঋণই ব্যাংক সংকটের মূল কারণ। ঋণের নামে গ্রাহকদের হাজার হাজার কোটি টাকার আমানত লুটে নিচ্ছে খেলাপিরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন সাবেক ডেপুটি গভর্নরের মতে, ‘খেলাপির সাগরে ভাসছে ব্যাংকিং খাত’। ‘অবলোপন’-এর দোহাই দিয়ে ঋণের তালিকা থেকে মুছে ফেলা হচ্ছে খেলাপিদের নাম।

খেলাপি ঋণ সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১১ সাল শেষে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২২ হাজার ৬৪৪ কোটি টাকা বা বিতরণকৃত ঋণের ৬ দশমিক ১২ শতাংশ। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর শেষে মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ৭ লাখ ৫২ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৮০ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা বা মোট ঋণের প্রায় ১১ শতাংশ। অর্থাৎ বৃদ্ধির হার ৬.০১ শতাংশে। এর সঙ্গে অবলোপনকৃত ঋণের প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকা যোগ করলে প্রকৃত খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা (জুন, ২০১৭ পর্যন্ত)।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, অবলোপন করা ঋণের পরিমাণও ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ অঙ্ক আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকা বেশি। এ বিপুল পরিমাণ অর্থ জিডিপির প্রায় ১৩ শতাংশ। খেলাপি ঋণের পরিমাণের দিক থেকে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান প্রথম সারিতে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী ব্যাংকগুলোর ঋণ আমানত অনুপাত থাকার কথা ৮৫ শতাংশ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা লংঘন করে বেপরোয়া ব্যাংকিংয়ের ফলে ১০ ব্যাংকের আমানত অনুপাতের সীমা ৮৫ ভাগেরও বেশি ছাড়িয়ে গেছে। এতে গোটা ব্যাংক খাতে হঠাৎ করেই বেড়েছে তারল্য চাহিদা। বাড়তে শুরু করেছে ঋণের সুদের হার। আমানতের সুদের হার কমে যাওয়ায় অনেকটা ব্যাংক বিমুখ হয়ে পড়ছেন গ্রাহকেরা। কিছু ব্যাংকের বেপরোয়া ঋণদানের কারণে কলমানিতের সুদের হারও বেড়ে গেছে। সুদ হার কমায় দুই বছর ধরেই আমানতের প্রবৃদ্ধি কমে গেছে। এ সত্ত্বেও কয়েকটি ব্যাংক ঋণের ক্ষেত্রে আগ্রাসী হয়ে উঠেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন তুলে ধরে ফখরুল বলেন, ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি মোট ৯টি ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ১৯ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকা। ব্যাংক লুটেরাদের কারও বিরুদ্ধে কোনো ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করে সরকার ইতোপূর্বে সরকারি ব্যাংকগুলোকে জনগণের করের টাকা হতে বেইল আউট প্রোগ্রামের নামে ১৪ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা দিয়েছে যা সম্পূর্ণ অনৈতিক। এ ছাড়া চলতি অর্থবছরের বাজেটেও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর জন্য দুই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সরকার এ অর্থ প্রদানের জন্য লাগামহীনভাবে ঋণ নিচ্ছে। অথচ দেশের সাধারণ জনগণকেই এ ঋণের বোঝা বইতে হবে। সরকার বিভিন্ন কর ও ভ্যাটের নামে জনগণের নিকট থেকে এ অর্থ আদায় করবে। এমনিতেই বর্তমানে প্রত্যেক নাগরিকের মাথাপিছু ঋণের বোঝা ৪৯ হাজার ৩৩৫ টাকা। এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়বে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উপর।

সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে মালিকানা বদলের পর দেশে বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক এখন তীব্র আর্থিক সংকটে। সরকারি হস্তক্ষেপে মালিকানা বদলের পর মাত্র ১৫ মাসেই ব্যাংকটি এ ভয়াবহ দুর্দশায় পড়েছে। মূলত, গ্রাহকদের আস্থায় চিড়, অব্যবস্থাপনা, একটি নির্দিষ্ট গ্রুপের কাছে রাতারাতি পুরো ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ চলে যাওয়া এবং কয়েকজন পরিচালকের অযাচিত হস্তক্ষেপের কারণে ব্যাংকটি এমন দূরাবস্থায় পড়েছে বলে জানা যায়।

তিনি আরও বলেন, ২০১৫ সালে ৫০০ কোটি টাকার বেশি ঋণ নিয়েছে এমন ১১ বড় ব্যবসায়ী গ্রুপের ১৫ হাজার কোটি টাকা পুনর্গঠনের নামে ঋণ নিয়মিত করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে শীর্ষ খেলাপির তালিকা থেকে বাদ যায় আওয়ামী আশীর্বাদপুষ্ট কয়েকটি বড় গ্রুপ। যার মধ্যে একটি গ্রুপের কর্ণধার বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োজিত আছেন। বড় খেলাপিরা সবাই ক্ষমতাবান, প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক আশীর্বাদপুষ্ট।

অন্যদিকে যাদের প্রয়োজন, সেই ক্ষুদ্র ঋণ গ্রহণকারীরা উপেক্ষিত, কারণ তাদের ক্ষমতা, প্রভাব বা রাজনৈতিক আশীর্বাদ নেই। বাংলাদেশ ব্যাংক এখানে দ্বৈত নীতির আশ্রয় নিয়েছে, যা নজিরবিহীন ও সকল মানদণ্ডে অনৈতিক। এদিকে পুনর্গঠন পাওয়া তারকা ঋণগ্রহিতাদের অর্ধেকই নতুন করে খেলাপি হয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারি ব্যাংকের ২৫ শতাংশ ঋণ অর্থাৎ প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা মাত্র ২০-২২ জন ঋণগ্রহীতাকে দেয়া হয়েছে। ব্যক্তিমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোও এ বিষয়ে কম যায় না। ব্যাংকগুলোর বড় বড় ঋণ প্রদানে বেশি ঝোক। গুটি কয়েক পরিবারের হাতে ঋণের নামে ব্যাংকের বিপুল অর্থ কুক্ষিগত হয়ে পড়েছে।

অপরদিকে গ্রাম-গঞ্জের ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা ঋণ পাচ্ছেন না। এ কারণে অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যাংকিং নেই বললেই চলে। অর্থাৎ ব্যাংক ঋণ-সুবিধা প্রাপ্তিতে বৈষম্য প্রকট হয়ে উঠেছে। অর্থমন্ত্রী জাতীয় সংসদে দেশের ১০০টি খেলাপি প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ করেন, কিন্তু তাতে সর্বজনবিদিত তারকা খেলাপিদের নাম নেই। যাদের নাম থাকা উচিত ছিল, তাদের প্রায় সবাই পুনঃতফসিলীকরণের আড়ালে তালিকার বাইরে রয়েছেন।

২০১৬ সালের জুনে সংসদে দাঁড়িয়ে অর্থমন্ত্রীই বলেছিলেন, কিছু কিছু ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সাগরচুরি হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আব্দুল মঈন খান এবং আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

খবর২৪ঘণ্টা.কম/নজ 

পোস্টটি শেয়ার করুন

এ ধরনের আরো খবর

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি।

Developed By SISA HOST