বিশেষ প্রতিনিধি :
বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাগার থেকে মুক্তি পেলে গণতন্ত্র মুক্তি পাবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। রোববার বিকেলে রাজশাহী মহানগরীর ভূবন মোহন পার্কে বিভাগীয় বিএনপির আয়োজনে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, বিএনপি একটি জনপ্রিয় দল। মাদ্রাসা মাঠে রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। ছোট একটি মাঠে করার অনুমতি দিয়েছে। কিন্ত গোটা নগর সমাবেশে পরিণত হয়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খালেদা জিয়াকে বাইরে রাখার ষড়যন্ত্র চলছে। আ’লীগ জনগনকে ভয় পায়। আ’লীগ সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর পিলখানা রক্ষে রঞ্জিত করেছে। গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। হাসিনা কথা দিয়েছিল জনগনকে ১০টাকা কেজি চাল খাওয়াবে। সেই চালের দাম বেড়ে গেছে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারীর পর থেকে জনগন ভোট দিতে পারেনি। নির্বাচনের পর তারা বলেছিল এটা নিয়ম রক্ষার নির্বাচন। ৯০ দিনের মধ্যে আবার নির্বাচন করা হবে। কিন্ত তারা কথা রাখেনি। হাসিনা সরকার জনগনের সাথে প্রতারণা করেছে। বিদ্যুতের দাম তারা বাড়িয়ে দিয়েছে। জনগন এই সরকারের প্রতি ক্ষুব্ধ। হাসিনা বিএনপিকে ভয় পায়। রাজশাহীর মাদ্রাসা মাঠে হাসিনা এসে জনগনকে হাত তুলে ওয়াদা করতে বলেছে। কারণ সে জনগনকে বিশ্বাস করে না। জনগন আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে ভোট দেবে। বিএনপিকে বাইরে রাখার যে যড়যন্ত্র চলছে তা সফল হবে না। গণতন্ত্র মুক্ত হলে খালেদা জিয়া মুক্তি পাবে আর খালেদা জিয়া মুক্তি পেলে গনতন্ত্র মুক্তি পাবে। কোন পাতানোও নির্বাচন জনগন হতে দেবে না।
তিনি সরকারের প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, বিএনপির জন সমর্থন না থাকলে মাদ্রাসা মাঠে সমাবেশ কেন করতে দেওয়া হলো না? কৌটা সংস্কারের আন্দোলন দ্রুত সমাধান হয়েছে। আর এ আন্দোলন হবে জনগনের আন্দোলন। জনগন গনতন্ত্র রক্ষায় রাস্তায় নামবে। জনগন রাস্তায় নামলে সময় নির্ধারণ করা লাগবে না। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে নির্বাচন দিতে বাধ্য করা হবে। আন্দোলনের জন্য রাজশাহীবাসীকে প্রস্তুত থাকার আহবান জানান তিনি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মির্জা আব্বাস বলেন, মতিয়া বলেছে কৌটা সংস্কার আন্দোলন যারা করছে তারা রাজাকারের বাচ্চা। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, মতিয়া ও আ’লীগ কোথায় মুক্তিযুদ্ধ করেছে তা জানতে চাই? এখন তারা ট্রেনের টিকিটও লুণ্ঠন করছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র বাবু বলেন, সমাবেশ আসতে নেতাকর্মীদের পথে পথে বাধা দেওয়া হয়েছে। পুলিশ রাষ্ট্রের পোশাকের মূল্য দিতে পারছে না। মিছিল করলে পুলিশ সরকারী কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করছে। জনগনের আন্দোলনে বাধা দিলে তারা জনগনের শত্রু হয়ে যাবে। সরকার জনগনের শক্তির কাছে মাথা নত করতে বাধ্য হবে। জনগনের নেত্রীকে জনগনই মুক্ত করবে। পুলিশ জনগনের ঘুম হারাম করছে। জনগনও তাদের ঘুম হারাম করবে। তিনি আরো বলেন, এসকে সিনহার বিদায়ের পর বিচারক ভয়ে হাসিনার কথা শুনতে বাধ্য হচ্ছে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে জনগন গণতন্ত্র মুক্ত করবে।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও রাসিকের সাবেক মেয়র এবং এমপি মিজানুর রহমান মিনু বলেন, মাকে হাসিনা সরকার কারাগারে বন্দী করে রেখেছে। দেশের ১৬ কোটি মানুষ খালেদা জিয়ার মুক্তি চাচ্ছে। রাজশাহীর পবিত্র মাটি আন্দোলনের ঘাঁটি। এ মাটি থেকেই অতীতের সকল আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছিল। খালেদা জিয়া ছাড়া কোন নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। হাসিনা সরকারকে বিদায় করে জনগন বিএনপির নেত্রীকে মুক্ত করবে ও ক্ষমতায় নিয়ে যাবে।
রাসিক মেয়র ও রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী আব্দুল মইন খান, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপির সহসভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী ব্যারিষ্টার আমিনুল হক, বিএনপি নেতা জয়নাল আবেদিন ফারুক, সাবেক উপমন্ত্রী এ্যাড. রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, যুগ্ম মহাসচিব হারুন অর রশীদ, বরকতুল্লাহ বুলু, আব্দুল আওতায় মিন্টু, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, এ্যাড. নাদিম মোস্তফা, আবু সাইদ চাঁদ, রাজশাহী জেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাড. তোফাজ্জল হোসেন তপু, রাজশাহী বিভাগের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক শাহিন শওকত। সমাবেশ পরিচালনা করেন নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. শফিকুল হক মিলন।
খবর২৪ঘণ্টা/এমকে